জামালপুর থেকে একতা এক্সপ্রেসে ঢাকা
আসতেই পাঁচ বার টিকিট চ্যাক করলো।
দুইবার টিটি একবার পুলিশ
আর দুইবার পরিচর্যক।
অবশ্য পরিচর্যক কে টিকিট দেখাইনাই
ডিরেক্ট না করছি
টিকিট নাই যান
পরিচর্যক কথা বাড়ায় নাই।
বুঝলাম ইদানীং সরকার খুবই সতর্ক।
কেউ টিকিট ছাড়া ট্রেনে যাতায়াত করতে
পারবেনা।
খুবই ভাল কথা কিন্তু অন্যদিকে যে
জালিয়াতির ব্যবসা হচ্ছে তার হিসাব দেবে
কে?? খাবার হুটেল নামাজ ঘর ইঞ্জিন রুম
প্রতিটি বগির এক পাশের দরজা সব ফিলাপ
পঞ্চাশ টাকা একশো টাকার যাত্রী দিয়ে।
এমন কি পরিচালকের রুমেও পরিচালক সাহেব
যাত্রী উঠাইছে টিকিট ছাড়া প্রতি যাত্রী
দুইশো টাকা করে।
চা নাস্তা বিক্রিকারি ক্যাটারার্সরাও
ঘুষের বানিজ্য করে।
দুই ঘন্টা আগে এসেও টিকিট পাইনি।
অসহায়ের মত দাড়িয়ে আছি টিকিট
কাউন্টারে। অনেক রিকুয়েস্ট করার পরও
সীটসহ টিকিট পেলাম না।
কিছুক্ষন পর দুইজন লোক এসে টিকিট চাওয়া
মাত্রই টিকিট মাষ্টার মুচকি হাসলে
এবং টিকিট দিয়া দিল।
ব্যাপার টা তারাতারি বুঝতে পারিনি
জিজ্ঞাস করালাম
লোকটাকে আপনার টিকিট কি বুকিং ছিল?
লোকটা বললো সিস্টেম বদলাইছে আপনি
মনে হয় জানেন না।
কিছু বকসিস দেন
টিকিট যতগুলা চাইবেন ততগুলায় দেবো
এইযে দেখেন
১৭০ টাকার টিকিট ২০০টাকায় নিলাম।
লোকটাকে কি বলবো বুঝতে পারছিলাম না।
ট্রেন ছাড়ার মাত্র দুই মিনিট বাকি।
এক পুলিশ এসে জিজ্ঞাস করলো হুজুর টিকিট
হইছে?
আমি বললাম কেন??
পুলিশ বললো টিকিট না হয়ে থাকলে চলেন
আমার সাথে।
কৌতুহল নিয়ে চললাম পুলিশের পিছু পিছু
নামাজ রুমের সামনে এসে পুলিশ কয় হুজুর
উঠেন একশো টাকা দিয়েন।
ভিতরে দেখলাম প্রায় ৩০/৩৫ জন যাত্রি
মহিলা পুরুষ একসাথে গাদাগাদি করে বসে
আছে কেউ পেপার বিছিয়ে আবার কেউ
সেন্ডেলের উপর।
পুলিশ কে বললাম
এটাতো নামাজ ঘর
পুলিশ কয় সমস্যা কি?
এটা আমরা কিনা নিছি
# পুলিশ কে কি বলবো বুঝতে পারলাম না।
কথা না বাড়িয়ে চলে গেলাম।
ছিট ছাড়া টিকিট কাটছি।
অতএব যে কোন বগিতে উঠার স্বাধিনতা
আছে আমার।
হেটে চলছি খাবার বগির ভিতর দিয়ে।
পিছন থেকে এক ক্যাটারার্স (নাস্তা বিক্রি
করে)ডাকলো
হুজুর সিট পান নাই?
বললাম নাহ পাইনাই
ভদ্রলোক কয়
এখানে বসে যান পঞ্চাশ টাকা দিয়েন।
রাগে কাঁপছিলাম
মন চাইছিলো
আইপি ম্যান ষ্টাইলে একটা ডাবল কিক
মারি তার গালে।
গাড়ি কি তার বাপের??
খাবার হুটেলে ছিট বিক্রি করে???
যাইহোক নির্ধারিত স্টপেজ ছাড়াও আরো
তিন যাগায় ট্রেন কেন দাঁড়ালো বুঝতে
পারলাম না।
মনে হয় ড্রাইভার কে কেউ কিছু দিছে
যথাস্থানে নামিয়ে দেওয়ার জন্য।
লক্কড় ঝক্কড় করে অবশেষে ট্রেন
এয়ারপোর্ট এসে পৌঁছলো।
ফুটওভার ব্রিজের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম
সামনে দুই পুলিশ একজন অন্যজন কে বলছে
ক্যারে দুইচার জন পাইলি।
""হ পাইছি
যতেষ্ট...........!!!!!
৬ ঘন্টার জার্নিতে যা দেখলাম
সেটা থেকে মনে হলো
প্রতি বছর রেল খাতে সরকার যে ভর্তুকি দেয়
সেটাকি ক্ষতি পুরোনের জন্য নাকি
ভারি পকেট আরেকটু ভারি করার বোঝা
মুশকিল।
পুলিশ, স্টাফ, টীটি,টিকিট মাষ্টার রেল
মন্ত্রী সবাই তো সরকারি।
দোষ কাকে দেবো সরকার কে
নাকি ভাতখাওয়া এইসব জানোয়ারদের কে??
নিয়ত করছি
ট্রেনেই যাতায়াত করবো।
সিট পাই আর না পাই
কাউন্টার থেকেই টিকিট করবো।
নির্ধারিত মুল্য থেকে এক টাকাও বেশি
দেবনা।