somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুখোশের আড়ালে যিনি পৃথিবীকে সাহায্য করে চলছেন

১৪ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



কিছু জানার দরকার নেটে সার্চ দেই।একটা প্রোজেক্ট করব নেট থেকে একটু আইডিয়া নিয়ে নেই।কোন একটা বিষয় বুঝতে পারছি না,নেট থেকে কিছু ভিডিও নামিয়ে নেই।খুব কাছের বন্ধু নিউইয়র্কে চলে গেছে?স্কাইপি কিংবা অভো তো আছেই।এত কিছু যার জন্য সম্ভব হয়েছে তিনি স্যার টিম বার্নার্স-লি!ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের (ডব্লিউ ডব্লিউ ডব্লিউ) জনক। তাঁর কারণেই আজ আমরা ঘরে বসেই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দুনিয়া চষে বেড়াতে পারি।




'টিম বার্নার্স-লি' বা 'স্যার টিমোথি জন "টিম" জন বার্নার্স-লি',"TimBL" নামেও যিনি পরিচিত, যিনি পেশায় একজন ব্রিটীশ পদার্থবিদ, কম্পিউটার বিজ্ঞানী, MIT অধ্যাপক, এবং (ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব) ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের জনক এবং ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব কনসোর্টিয়ামের পরিচালক। তিনি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা।স্যার টিম বার্নাস লি ১৯৫৫ সালের ৮ জুন যুক্তরাজ্যের লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন।চলুন তার জীবনে কিছু গল্প জেনে নেই স্যার 'টিম বার্নার্স-লি' এর নিজের বর্ণনা থেকেই।

"১৯৮০ সালের দিকে আমি তখন সুইজারল্যান্ডের ইউওএনআরে কাজ করতাম। ইউরোপিয়ান অর্গানাইজেশন ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চে (ইউওএনআর) আমার কাজ ছিল তথ্য বিভাগে। ওখানকার কাজটা যে খুব কঠিন ছিল, তা নয়, কিন্তু তবু আমি মাঝেমধ্যে বিরক্ত হয়ে যেতাম। কারণ, দেখা যেত একই ধরনের সমস্যা নিয়ে একই ধরনের তথ্য জানতে চাইছে সবাই। বারবার একই প্রশ্নের জবাব দেওয়াটা খুবই একঘেয়েমি ছিল। কিন্তু ওই একঘেয়েমি থেকেই আসলে নতুন এক ইতিহাসের শুরু হয়েছিল। হাজারো বার একই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় খুঁজতাম আমি সব সময়। তখন আমার মাথায় প্রথম আসে, এমনটা যদি হতো যে আমাদের প্রতিষ্ঠানে না এসে বা আমাদের ফোন না করে, ঘরে বসেই যদি সব তথ্য পাওয়া যায় বা সব প্রশ্নের উত্তর মেলে, তাহলে মন্দ হয় না।

অনেক প্রতিষ্ঠানই লিফলেটের মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান করত। সে ক্ষেত্রে বারবার নতুন লিফলেট ছাপতে হতো। যার মানে সময়, অর্থ—দুইয়ের অপচয়। এতে আসলে শেষ পর্যন্ত সমস্যা কমে না বাড়ে, সেটা বোঝাও দায়। এসব চিন্তা করতে করতেই আমার মনে হলো, এমন একটা ব্যবস্থা যদি করা যায় যে মানুষ তার প্রয়োজনীয় যেকোনো তথ্য একটা নির্দিষ্ট নেটওয়ার্ক থেকেই সংগ্রহ করে নিতে পারবে যখন ইচ্ছা যেভাবে ইচ্ছা, তাহলে তা দারুণ হয়। এভাবেই ১৯৮৯ সালের দিকে আমার প্রতিষ্ঠানের সহকর্মীদের নিয়ে আমি তৈরি করে ফেলি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব বা সংক্ষেপে ওয়েব।

অক্সফোর্ডে পড়াশোনা করার সময় ওখানকার নেটওয়ার্ক প্রিন্টার হ্যাক করতে গিয়ে ধরা পড়েছিলাম একবার, তখন আমার শাস্তিও হয়েছিল। কিন্তু সেই শাস্তিও আমাকে যেন আরেকটু এগিয়ে নিয়ে গেল। আমার মনে ইচ্ছা করতে থাকল, আমার যদি নিজের একটা কম্পিউটার থাকে, তাহলে মন্দ হয় না। তখন গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে আমি একটা করাতকলে কাজ করছিলাম। ওখানে ক্যালকুলেটরের মতো একটা বড় অকেজো যন্ত্র খুঁজে পেলাম একদিন। এরপর করাতকলের মালিকের অনুমতি নিয়ে ওই অকেজো যন্ত্রটা নিজের বাসায় নিয়ে এলাম। ওই ক্যালকুলেটরের বোতাম সব তুলে ফেলে কম্পিউটারের মতো বোতাম লাগিয়ে ফেললাম খুব সহজেই। এরপর কম্পিউটারের মনিটরের জন্য একটা পুরোনো টিভির দোকানে গেলাম। গিয়ে মাত্র পাঁচ পাউন্ড দিয়ে একটা টিভি কিনে ফেললাম। এরপর অক্সফোর্ডের এক বন্ধুর কাছ থেকে টিভি কীভাবে কাজ করে, সেটা বুঝে নিয়ে ওই যন্ত্রের সঙ্গে জুড়ে দিলাম, আর তাতেই আমি পেয়ে গেলাম আমার নিজের একটা কম্পিউটার। তখন সবাই অবাক হতো আমার কাণ্ড দেখে। তবে এসব ব্যাপারে আমি কখনোই আটকাইনি।
আমার বাবা-মা দুজনেই ছিলেন গণিতবিদ। আমরা ছিলাম চার ভাই। আমি ছিলাম সবার বড়। আমরা সব জায়গায়ই গণিতের মজা খুঁজে ফিরতাম। একটা পুডিং বানাতে গেলেও গণিতের হিসাব-নিকাশ করতাম মজা করার জন্য। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময়কার কথা। অন্যরা যখন দৌড়ঝাঁপ করে বেড়াত, আমরা তিন বন্ধু তখন বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করতাম। চুম্বক নিয়ে মজার কাণ্ড ঘটাতে চাইতাম। সেই ছোট্ট বয়সেই আমরা ঠিক করে ফেলেছিলাম, আমরা বিজ্ঞান নিয়ে একটা বই লিখব। বইটা যেহেতু হবে গবেষণামূলক, তাই বিভিন্ন বিষয়ে নিরবচ্ছিন্ন গবেষণা করার জন্য আমাদের বাসার পেছনে মাটির নিচে একটা গবেষণাগার বানানোর চিন্তাও এসেছিল আমাদের মাথায়!

সায়েন্স ফিকশন পড়ার অভ্যাস আমার খুব ছোটকাল থেকেই। আর্থার সি ক্লার্ক, আগাথা ক্রিস্টি, জন উইন্ডহ্যাম ছিলেন আমার প্রিয় লেখক। আমি যখন হাইস্কুলে ভর্তি হলাম, তখন আমাদের স্কুলটা ছিল দুই রেলওয়ে স্টেশনের মাঝামাঝি জায়গায়। তখন স্টেশনে ট্রেন থামলেই আমি খেয়াল করে দেখার চেষ্টা করতাম ট্রেনের ইঞ্জিনের যন্ত্রপাতিগুলো। আমার মনে হয়, ছোটবেলার এসব অভিজ্ঞতাই আজ আমাকে বিজ্ঞানী বানিয়েছে।

অনেকে আমাকে বলে, আমি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব ব্যবহার করে অনেক বড়লোক হতে পারতাম। আমি নিজেও সেটা জানি। আমি যদি আমার আবিষ্কার সবার জন্য উন্মুক্ত না করে অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করতাম, তাহলে নিঃসন্দেহে বলা যায়, আমি আজ অনেক পয়সা কামাতে পারতাম, রাজকীয় জীবন যাপন করতে পারতাম। কিন্তু তাহলে ওয়েব এভাবে দুনিয়াজুড়ে ছড়িয়ে দিতে পারতাম না। আমি সব সময় চেয়েছি, ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব যেন দুনিয়ার সব মানুষের কাজে আসে। আর তা আজ সত্যি হয়েছে। ওয়েব এখন আর শুধু কয়েকটি কম্পিউটারের নেটওয়ার্ক নয়, ওয়েব এখন অসংখ্য মানুষের নেটওয়ার্ক। আমি চাই না মানুষ আমাকে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের উদ্ভাবক হিসেবে মনে রাখুক। আমি চাই, সবাই আমাকে মনে রাখুক একজন সাধারণ মানুষ হিসেবেই। আমি একজন সাদাসিধে কম্পিউটার প্রোগ্রামার ছিলাম, আমি একটা প্রোগ্রাম তৈরি করেছিলাম, যেটা মানুষের কাজে লেগেছিল। এবং আমি যদি সেই প্রোগ্রামটা তৈরি না করতাম, তাহলে অন্য কোনো মানুষ করত সেটা।"

ধন্যবাদ সবাইকে ।
সংগৃহীত লিখা, ভুল হলে মার্জনীয় ।

স্যার টিমোথি জন কে নিয়া সামু তে লিখা অন্য ব্লগ গুলো :
১. Click This Link
২. Click This Link
৩. Click This Link
৪. Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:০৭
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×