somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাম থেকে সাবধান

১০ ই অক্টোবর, ২০১২ বিকাল ৩:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রিয় পাঠক আজকে আমি কিছু অপ্রিয় সত্য কথা বলবো। "বাম" শব্দটির সাথে এদেশের শিক্ষিত সমাজ কমবেশী পরিচিত। আপনারা কি লক্ষ্য করেছেন, এই সরকারের আমলে এই বামেরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। মিডিয়াগুলোতেও এদের সরব উপস্থিতি অত্যন্ত লক্ষ্যণীয়। কিছু কিছু মিডিয়ার টকশোগুলোতে বামদের প্রতিনিধিরা (তথাকথিত কমরেড :() নিয়মিত আমন্ত্রিত হচ্ছে। দেখে মনে হয় এরাই দেশের তৃতীয় শক্তি।

গত শতকের প্রায় তিন চতুর্থাংশ সময়ই ছিল বামদের রাম রাজত্ব। সাম্রাজ্যবাদ দমণের নামে, শ্রেণী বৈষম্য দূর করার নামে তারা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে বিপ্লবের নামে রক্তের বন্যা বইয়েছে। নিরীহ মানুষের রক্তে রঞ্জিত এই বাম কুলাঙ্গারদের হাত। সাম্রাজ্যবাদ দূর করতে গিয়ে নিজেরাই ইতিহাসের বৃহত্তম সাম্রাজ্যবাদী শক্তিদের কাতারে নাম লিখিয়েছে। নিচের মানচিত্র দুটি লক্ষ্য করুন,


গত শতকের সবচেয়ে বড় সাম্রাজ্যবাদী শক্তি সোভিয়েত ইউনিয়ন


সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং বিশ্বের অন্যান্য কমিউনিস্ট সরকারের অধীনে বিভিন্ন দেশ, ১৯৫৯ সালের কিউবান বিপ্লবের পরে এবং ১৯৬১ তে চীন সোভিয়েত বিভাজনের আগে

দ্য ব্ল্যাক বুক অব কমিউনিজমে বলা হয়েছে যে, কমিউনিস্ট শাসকদের হাতে প্রায় ৯৪ মিলিয়ন (১ মিলিয়ন = ১০ লাখ :-*) বনী আদম নিহত হয়েছে। নিহতদের সংখ্যা কমিউনিস্ট শাসক অনুপাতে নিম্নরূপ,

গণপ্রজাতন্ত্রী চীনে ৬৫ মিলিয়ন
সোভিয়েত ইউনিয়নে ২০ মিলিয়ন
কম্বোডিয়ায় ২ মিলিয়ন
উত্তর কোরিয়ায় ২ মিলিয়ন
আফ্রিকাতে ১.৭ মিলিয়ন
আফগানিস্তানে ১.৫ মিলিয়ন
পূর্ব ইউরোপের কমিউনিস্ট দেশগুলোতে ১ মিলিয়ন
ভিয়েতনামে ১ মিলিয়ন
লাতিন আমেরিকায় দেড় লাখ
এছাড়াও প্রায় দশ হাজার নিহত হয়েছে উপরোল্লিখিত দেশগুলোর বাইরে বিশ্বব্যাপী সংগঠিত কমিউনিস্ট বিপ্লবের কারণে


এই পরিসংখ্যান থেকে এটা সুস্পষ্ট যে, কমিউনিস্টরা গত শতকে জনসংখ্যা হ্রাস করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। X( আর এটাই এদের প্রধান কৃতিত্ব। এই বইটি সম্পাদনা করেছেন স্টেফেন করটয়েস। তার মতে পৃথিবীর ইতিহাসে আর কোন আদর্শ, বিপ্লব বা মতবাদের কারণে এত মানুষ নিহত হয়নি যে পরিমাণ মানুষ নিহত হয়েছে কমিউনিস্ট বিপ্লবের কারণে। কমিউনিস্ট ও সোস্যালিস্টদের এই সব হত্যাযজ্ঞের ভয়াবহতা ও ব্যাপকতা জার্মান নাৎসীদের চেয়েও অনেক অনেক বেশী, প্রায় চারগুণ।

এবার আমাদের প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশের দিকে লক্ষ্য করুন। স্বাধীণতার পর এ দেশে গজিয়ে ওঠা জাসদের কর্মকান্ড, সর্বহারা, পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি, জনযুদ্ধের কৃতকর্মের সাথে পত্র পত্রিকার মাধ্যমে আমরা সবাই কমবেশী পরিচিত। বাম বুদ্ধীজীবিরা সুকৌশলে সাধারণ মানুষের ব্রেইন ওয়াশ করার চেষ্টা করছে। মুক্তমনা ও প্রগতিশীলতার কথা বলে আমাদের কান ভারি করার চেষ্টা করছে। যে পরিমান সময় তারা নিজেদের আদর্শ প্রচারে ব্যয় করে, তার চেয়ে অনেক অনেক বেশী সময় ব্যয় করে অন্য আদর্শের সমালোচনা করে। অভিধানের ভালো শব্দগুলো নিজেদের জন্য রেখে খারাপগুলো ব্যবহার করে প্রতিপক্ষের জন্য। সন্ত্রাসী চরমপন্থী হয়েও এরা নিজেদের বিপ্লবী বলে দাবী করে। এর একটা চমৎকার উদাহরণ হলো চে গেভারা। এই কিলিং মেশিনের হাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অসংখ্য নিরপরাধ বনী আদম নিহত হয়েছে, অথচ এই সন্ত্রাসীকে এরা বিপ্লবী হিসেবে তুলে ধরছে। নিরপরাধ মানুষ হত্যা করে যদি চে বিপ্লবী হয়, তাহলে ওসামা বিন লাদেন, আইম্যান আল জাওয়হিরি কি? সন্ত্রাসী না বিপ্লবী। আপনাদের কাছে প্রশ্ন রইলো?:-*

বীর মুক্তিযোদ্ধা জাসদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মেজর এম এ জলিলের নাম শুনেছেন নিশ্চয়ই। জাসদ থেকে তার পদত্যাগ প্রসঙ্গে তিনি তাঁর ‘কৈফিয়ত ও কিছুকথা’ গ্রন্থে লিখেছেন, "“দলীয় জীবনে জাসদের নেতা-কর্মীরা ধর্মীয় মূল্যবোধ প্রায় সম্পূর্ণভাবে বিসর্জন দেয়ার ফলে নৈতিকতার ক্ষেত্রে অবক্ষয় ঘটে, ব্যক্তিজীবনে আসে বিশৃঙ্খলা এবং ধর্মীয় নৈতিকতা এবং মূল্যবোধে পরিচালিত সমাজদেহ থেকে নিজেরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লেও সমাজে বসবাসরত জনগণকে ঐতিহ্যবাহী ইসলামী সাংস্কৃতিক জীবন এবং মূলবোধ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে মোটেও সক্ষম হয়নি। প্রচলিত পারিবারিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক জীবনধারা থেকে কেবল নিজেদেরকে বিচ্ছিন্ন করে রাখলেই বিকল্প সংস্কৃতি জন্ম নেয় না, বরং এই ধরনের রণকৌশল অবলম্বন সমাজে প্রচলিত নীতি, নৈতিকতা, আচার-অনুষ্ঠান এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের প্রতি তাচ্ছিল্য, উপহাস এবং ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ ঘটায়, যা প্রকারান্তরে বিপ্লবী আন্দোলনের বিপক্ষে চলে যায়।"

পরিশেষে বলি, বামেরা ছদ্মবেশী। এরা মুখে বলে এক আর অন্তরে ধারণ করে আরেক। ক্ষমতা পেলেই এরা এদের স্বরূপে আবির্ভূত হবে। গত শতকের রক্তাক্ত ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাবে। বামেরা সন্ত্রাসী, অন্যসকল সন্ত্রাসী দলের মত বামদেরকেও নিষিদ্ধ করা হোক। এদের সামাজিকভাবে বয়কট করা হোক। একবিংশ শতক হোক বাম মুক্ত।একটি বাম মুক্ত সুন্দর পৃথিবীর প্রত্যাশাই হোক সকলের কাম্য।


তথ্যসূত্রঃ
The Black Book of Communism
অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা - মেজর (অব.) এম. এ. জলিল
The Great Terror
Great Purge
Soviet Union
Che Guevara Exposed: The Killer on the Lefties’ T-Shirts
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই অক্টোবর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:২৫
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×