রানা প্লাজার রেশমা নাটক আমরা দেখেছি এবং সেই রেশমাকে নূর আলী তার দায়িত্ব নিয়েছেন এবং তার ওয়েস্টিন হোটেলে ৩৫ হাজার টাকার চাকুরীও দেয়া হয়েছে।
অথচ এই রকম কতো রেশমাকে উদ্ধার করেছেন রানা প্লাজা থেকে যে রফিকুল, তিনি আজ নিজেই মানসিক রোগী।
এখন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। অধিকাংশ সময় তাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখেন চিকিৎসকরা। আর ঘুম ভাঙলেই কখনও নিজের বিছানার নিচে, কখনও পাশের বিছানায়, কখনও বালিশ উল্টেপাল্টে লাশ খোঁজেন রফিকুল ইসলাম।তখন তার স্ত্রীর চোখ দিয়ে তখন নীরবে গড়িয়ে পড়ে অশ্রু। কী করবেন তিনি? রানা প্লাজায় উদ্ধারকাজে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক ছাড়া পাশে আর কেউই দাঁড়াননি। ওই স্বেচ্ছাসেবকরাই খোঁজখবর নেন। মাঝে মধ্যে দেখতে যান হাসপাতালে।
রানা পল্গাজা ধসের দিন সাভারের শিমুলতলা এলাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করছিলেন রফিকুল। ভবনধসের পর কাজ ফেলে রেখেই ছুটে যান সেখানে, যোগ দেন উদ্ধারকাজে। ১৪ মে উদ্ধারকাজ শেষ হওয়ার পরও তিনি বাড়ি যাননি। পরে জোর করে তাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তাকে বাসায় আটকে রাখা যেত না। রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে দরজা খুলে একা একা বাসা থেকে দুই মাইল দূরের রানা প্লাজায় চলে যেতেন। সারাদিন রানা প্লাজায় থাকতে চাইতেন। বাসায় নেওয়ার চেষ্টা করলে চিৎকার করতেন। ঘুমের ঘোরে চিৎকার করতেন 'এই জায়গায় লাশ আছে, ব্যাগ আনেন, কাপড় আনেন।' আস্তে আস্তে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন রফিকুল। ভর্তি করা হয় জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে। গত ১৫ দিন ধরে সেখানে তার চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রফিকুল আগের তুলনায় ভালো আছেন। তবে রফিকুলের স্ত্রীর শারীরিক অবস্থা নিয়েও চিকিৎসকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
উদ্ধারকাজে অংশগ্রহণকারী অধিকাংশ স্বেচ্ছাসেবকই মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। গত ৭ মে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেতর থেকে লাশ উদ্ধার করা হয় একজনের। মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় দু'দিন আগেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাকে। এ ছাড়া আগারগাঁও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, সাভারের এনাম হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন অনেকে। এসব স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ এবং কাউন্সেলিং করিয়েছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর। কিন্তু পুরোপুরি সুস্থ হননি তারা। এখনও ঘুমের ঘোরে 'লাশ লাশ' বলে চিৎকার করে ওঠেন। অনেকেই আবার শোনেন কে যেন তাকে ঢাকছে বাঁচাও বাঁচাও বলে।
এই হতভাগাদের দায়িত্ব কে নেবে????
মূলঃ Click This Link

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



