বাংলাদেশের জীবন গড়ে উঠেছিল ভাত-মাছকে কেন্দ্র করে। কিন্তু নদী না থাকলে মাছ-ভাতের জীবন আর বজায় রাখা সম্ভব হবে না। আমাদের বস্তুগত সংস্কৃতির ধারা বদলে যাবে।
.
সব ফসল ফলাতে একই পরিমাণ পানি লাগে না। এক কেজি গম ফলাতে যেখানে লাগে ১৫০০ লিটার পানি, সেখানে এক কেজি ধান ফলাতে পানি লাগে প্রায় ৩০০০ লিটার। ধানের জায়গায় শীতকালে আমাদের বাড়াতে হবে গমের চাষ। কমাতে হবে ধান চাষ। যাকে এখন আমরা বলছি বোরো ধান।
.
আগে যাকে বলা হতো বোরো ধান, তা আবাদ করা হত শীতকালে বিলের ধারে। যার আবাদ এখন উঠে গেছে। বর্তমানে যাকে এখন বলা হচ্ছে বোরো, তা আবাদ করতে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। এই আবাদ তাই বন্ধ করতে হবে।
.
অনেক ফসল আছে যার আবাদে অনেক কম পানির প্রয়োজন হয়। যেমন চিনা ও কাউন, আমরা খেয়েছি দুর্ভিক্ষ প্রপীড়িত অবস্থায়। কিন্তু পানির অভাবে আমাদের দেশের কৃষি এমনই এক অবস্থার মধ্যে পড়তে পারে যে, আমরা এসব আহার করে বাঁচতে বাধ্য হবো। বিরাট এক অন্নাভাব নেমে আসতে যাচ্ছে আমাদের সমগ্র জাতির জীবনে।
.
কিন্তু আমাদের পরিবেশবাদীরা এ বিষয় নিয়ে আলোচনার মধ্যে যেতে চাচ্ছেন না। তাদের আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে সুন্দরবন রক্ষা। কিন্তু সুন্দরবন রক্ষা করে আমরা আমাদের খাদ্যাভাব মেটাতে পারব না। ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে হলে দক্ষিণ বাংলায় বাড়াতে হবে সমুদ্রবন্দর। যাতে সুন্দরবনের কিছু না কিছু ক্ষতি হবেই। কিন্তু আমাদের মেনে নিতে হবে এই ক্ষতিটি।
.
দেশের কলকারখানা চালাতে হলে বাড়াতে হবে বিদ্যুৎ উৎপাদন। আর এর জন্য স্থাপন করতে হবে অনেক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। আমাদের পরিবেশবাদীরা বলছেন, এর ফলে নাকি আমাদের পরিবেশ যাবে অনেক বদলে; জলবায়ু হবে প্রভাবিত। কিন্তু কীভাবে এবং কতটা, তার কোনো হিসাব দিচ্ছেন না এরা। এরা সবকিছুই বলছেন হাত-আন্দাজে; গবেষণাভিত্তিক জ্ঞানের ওপর নির্ভর করে নয়।
এবনে গোলাম সামাদ'র লেখা থেকে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:০৭