somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছাত্রদের ওপর মোবাইল ফোনের কুপ্রভাব- ১ম পর্ব

১৩ ই অক্টোবর, ২০১১ সকাল ১০:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আল্লাহ প্রদত্ত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে নব নব আবিস্কারের মাধ্যমে মানুষ সভ্যতার চরম উৎকর্ষ সাধন করেছে। বিজ্ঞানের প্রসার ও বিকাশ ঘটিয়ে অনেক অসাধ্য সাধন করতে সক্ষম হয়েছে। বিজ্ঞান মানব জীবন থেকে অজ্ঞতা, কুসংস্কার, ভোগান্তি দূর করে জীবনকে করেছে সহজ-সাবলীল ও সুন্দর। নতুন ও সম্ভাবনাময়ী আবিস্কারের কল্যাণমুখী প্রয়োগে আধুনিক জীবনে বিজ্ঞান যোগ করেছে এক নব দিগন্ত। দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলা বিজ্ঞান নতুন নতুন বিস্ময় উদ্ভাবনের মাধ্যমে মানবজাতীকে প্রতিনিয়ত সমৃদ্ধ করে চলেছে। পৃথিবীকে মানুষের জন্য পরিণত করেছে বিশ্বগ্রামে (Global village)। জীবনকে করে তুলেছে গতিময় ও স্বাচ্ছন্দ্যময়। মানুষের জীবন যাপন পদ্ধতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনয়নের পাশাপাশি যোগাযোগের সহজতম মাধ্যম হিসাবে বিজ্ঞান যুগে যুগে আবিস্কার করেছে অসংখ্য বিকল্প। ডাক যোগাযোগের সহজতর বিকল্প হিসাবে আবিস্কার করেছে ফ্যাক্স, টেলিফোনের সহজতর বিকল্প হিসাবে ওয়্যারলেস প্রভৃতি। আবিস্কারের এই ধারাবাহিকতায় বিজ্ঞানের যে আবিস্কারটি বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয়, সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে, তা হ'ল মোবাইল ফোন। এর অপর নাম মুঠোফোন। বিজ্ঞানের এই অনুপম সৃষ্টি মোবাইল ফোন বর্তমান টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় নবদিগন্তের সূচনা করেছে। গোটা বিশ্বকে এক নিবিড় বন্ধনে আবদ্ধ করে মানুষের প্রয়োজন পূরণ করে চলেছে প্রতিনিয়ত। এর সাহায্যে পৃথিবীর এক প্রান্ত হ'তে অপর প্রান্তে অত্যন্ত স্বল্প সময়ে সংবাদ আদান-প্রদান, যোগাযোগ স্থাপন, ভাবের বিনিময় সম্ভব হয়ে উঠেছে।

শুধু কি তাই? বিজ্ঞানের উত্তরোত্তর উন্নতির ফলে মোবাইল ফোনের আকার-আকৃতি ও ব্যবহারে এসেছে বৈচিত্র্য ও অভাবনীয় পরিবর্তন। আবেগ-অনুভূতি বিনিময়ের দ্রুততম মাধ্যম হওয়া ছাড়াও মোবাইল ফোন আজকাল মানুষের অন্যতম বিনোদন সঙ্গীতে পরিণত হয়েছে। অবসাদ দূর ও অবসরকে আনন্দময় করে তুলতে এতে সংযোজিত হয়েছে অডিও, ক্যামেরা, ভিডিও প্রভৃতি প্রযুক্তি। কোন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বা অনুষ্ঠানকে জীবন্ত ও স্মরণীয় করে রাখার জন্য বর্তমানে ভিডিও ক্যামেরার প্রয়োজন আর তেমন অনুভূত হয় না। একটি উন্নতমানের মোবাইল ফোন থাকলেই যথেষ্ট। বর্তমানে কম্পিউটারের এক-তৃতীয়াংশ কাজ মোবাইলেই করা সম্ভব হচ্ছে। যদ্দরুন মানুষের কাছে এর গ্রহণযোগ্যতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি যেন পকেট কম্পিউটারে পরিণত হয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে এর দ্বারা হয়তো কল্পনাতীত কিছু করা সম্ভব হবে।

যোগাযোগের ব্যবস্থায় নবদিগন্তের দ্বারোন্মোচক ও অপার সম্ভাবনার আধার হওয়া সত্ত্বেও কোথায় যেন একটি প্রশ্ন থেকে যায়- মোবাইল ফোন ছাত্রদের কি দিয়েছে?

বর্তমান প্রেক্ষাপটে নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে একটু গভীরভাবে চিন্তা করলেই এ প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে। 'বিজ্ঞানের যুগ' বলে কথিত এই আধুনিক কালে মোবাইল ফোনে উচ্চ প্রযুক্তির পরশ থাকায় এর প্রতি মানুষের আকর্ষণ ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন বিদেশী মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারক কোম্পানী জনসাধারণের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করার লক্ষ্যে বাজারে ছাড়ছে বাহারী ডিজাইন ও বিচিত্র ফাংশনের হাযারো মোবাইল ফোন। বাজারে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের নিমিত্তে কোম্পানীগুলো কে কত কম মূল্যে জনগণের হাতে মোবাইল তুলে দিতে পারে সে প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে। বিদেশী এসব কোম্পানী তাদের এই অফারের মাধ্যমে আমাদের দেশের বাজারে যেভাবে জেঁকে বসেছে তা সত্যিই উদ্বেগজনক। এসব মোবাইল সেট বেশ সস্তা হওয়ায় জনসাধারণ মোবাইলের দোকানগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। এদের অধিকাংশই হচ্ছে ছাত্র।

এমনিতেই মোবাইল ফোনের প্রতি ছাত্রদের রয়েছে অদম্য আকর্ষণ। তারপরও অনেক সহজলভ্য হওয়ায় অধিকাংশ ছাত্রই তা পাওয়ার উপায় খোঁজায় ব্যস্ত। লেখাপড়ার মূল্যবান সময় নষ্ট করে বিভিন্ন মার্কেটে ঘুরে বেড়াচ্ছে নিজেদের পসন্দের মোবাইল ক্রয় করার জন্য। বাড়ির বাইরে থেকে (যেমন ছাত্রাবাস, স্কুল/মাদরাসা, হোস্টেল ইত্যাদি) অধ্যয়নকারী ছাত্র-ছাত্রীরা হাত খরচের টাকা বাঁচিয়ে এমনকি একাধিক প্রাইভেটের নাম করে মিথ্যা বলে পিতার নিকট হ'তে বেশী বেশী টাকা নিয়ে অথবা দূরে অবস্থান করার অজুহাত দেখিয়ে পিতা-মাতাকে সম্মত করে এবং নিজ বাড়ীতে অধ্যয়নকারী ছাত্র-ছাত্রীরা পিতা-মাতার সাথে জেদ করে তাদেরকে মোবাইল কিনে দিতে বাধ্য করছে। এই প্রবণতা খুব বেশী পরিলক্ষিত হচ্ছে মাধ্যমিক স্তরের ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে। তবে একথাও ঠিক যে, অনেক পিতা-মাতা সখ করে তাদের সন্তানদের মোবাইল কিনে দিচ্ছেন।

ইনশাআল্লাহ আগামী পর্বে শেষ হবে ...

রচনাঃ
আসীফ রেজা
নওদাপাড়া মাদরাসা,
সপুরা, রাজশাহী।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিজয় দিবসের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে, প্রতিবাদ ও ঘৃণা জানিয়ে । সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান ২০২৫, ১৬ই ডিসেম্বর।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:১৯




দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে ত্রিশ লক্ষ তাজা প্রানের এক সাগর রক্তের বিনিময়। দুই লক্ষাধিক মা বোনের সম্ভ্রম হারানো। লক্ষ শিশুর অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত‍্যু। এক কোটি মানুষের বাস্তুহারা জিবন। লক্ষ কোটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×