somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Flight 772

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




১৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৯। মঙ্গলবার। সময় ১৩:১৩। ফ্রেঞ্চ এয়ারলাইন Union des Transports Aériens এর একটি ম্যাকডোনেল ডিসি-১০ উড়োজাহাজ, (রেজিস্ট্রেশন নাম্বার N54629) নিজামিনা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্যারিসের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। এই উড়োজাহাজটি, UTA Flight 772 নামে পরিচিত যা কঙ্গোর ব্রাজাভিল থেকে চাদের রাজধানী নিজামিনা হয়ে প্যারিসের CDG এয়ারপোর্টে নিয়মিত যাতায়াত করে।




দুর্ভাগ্যজনকভাবে ফ্লাইটটি কিন্তু সেদিন তাঁর গন্তব্যে পৌছাতে পারেনি। উড্ডয়নের ছেচল্লিশ মিনিটের মাথায় যখন এটি ১০,৭০০ মিটার (৩৫,১০০ ফুট) উচ্চতায় তাঁর গন্তব্যের দিকে সুনির্দিষ্টভাবে ভেসে যাচ্ছিল ঠিক তখনি বিমানের অভ্যন্তরে একটি শক্তিশালী বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের ফলে UTA Flight 772 আকাশ পথেই পুরোপুরি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। বিমানটি তাঁর ১৫৫ জন যাত্রী এবং ১৫ জন ক্রু নিয়ে নাইজারের বিলমা আর টিনিরি শহরের কাছাকাছি সাহারা মরুভূমিতে আছড়ে পড়ে। এই দুর্ঘটনায় বিমানটির ১৭০ জন আরোহীই মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। ছয় লিবিয়ানকে শেষ পর্যন্ত এই সন্ত্রাসী হামলার জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়।





এই ঘটনার আঠার বছর পর, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সদস্যরা তাদের প্রিয়জনদের উদ্দেশ্যে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। এর জন্য তারা বিমানটি যেখানে ক্রাশ করেছিল সে জায়গাটিকেই বেছে নেন। বহু কষ্টে তারা সারাহা মরুভূমির যে স্থানে বিমানটি ভূপাতিত হয়েছিল সেখানে জড়ো হন। সেখানে পৌঁছাবার পর তারা অবাক হয়ে লক্ষ্য করেন যে অত্যান্ত দুর্গম জায়গা বলে ওখানে এখনো বিমানটির নানা ভাঙ্গা অংশ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে।










ধীরে ধীরে তাঁরা স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এই কাজে তাদের সহায়তা করেছিল “Les Familles de l’Attentat du DC-10 d’UTA” – ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের একটি সাহায্য সংগঠন এবং স্থানীয় অধিবাসীরা।








মেমোরিয়ালটি পুরোপুরি হাতে তৈরি এবং তাঁর উপকরণ হিসেবে ব্যাবহার করেছেন কালো পাথর। এই পাথরগুলো তাঁরা পরপর সাজিয়ে একটি ২০০ ফুট ব্যাসের একটি বৃত্ত তৈরি করেন।



টিনিরি এলাকাটি পৃথিবীর অত্যান্ত দুর্গম স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম। মেমোরিয়াল তৈরিরে ব্যবহৃত পাথরগুলো প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূর থেকে ট্রাকে করে বয়ে আনা হয়েছিল।









স্মৃতিস্তম্ভটি তৈরি করতে তাদের দু’মাসের মতো সময় ব্যায় হয়। ২০০৭ সালের জুন মাসে তাদের কাজ শেষ হয়।





১৭০টি ভাঙ্গা আয়নার টুকরো স্মৃতিস্তম্ভটির পরিসীমা বরাবর স্থাপন করা হয়। দুর্ঘটনা মৃত ভিকটিমদের প্রতীক স্বরূপ এই আয়নাগুলো ব্যবহার করা হয়েছে।







বিমানটির একটি ডানা স্মৃতিস্তম্ভের ফলক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। ডানাটি ধ্বংসস্থল থেকে প্রায় ১০ মাইল দূরে মাটির নিচ থেকে বালি খুঁড়ে বের করা হয়েছিল।





























মজার ব্যাপার হচ্ছে, অসাধারণ এই স্মৃতিস্তম্ভটি গুগল আর্থেও দেখা যায়। নিচে লিঙ্ক দিয়ে দিলাম।





UTA Flight 772 Memorial on Google Map

উইকিপিডিয়া




আমার আরও কিছু ফটোব্লগ

১) দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
২) অন্য সুর






সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:৪৮
১৮টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×