দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ইপিক একখান কমেন্ট আছে, 'লেজে দেখি কুত্তারে নাড়ে।'
ইপিক এই কমেন্টখানা মনে পড়ার কারন, দেশের হর্তা-কর্তাদের একটা অংশের কোটা সংস্কারের বিপক্ষে মনোভাব প্রকাশ্যে আসায়। যদিও সঠিক পরিসংখ্যান এই মুহূর্তে আমার হাতে নাই, তবে ধারনা থেকে বলতে পারি দেশের মাত্র ১ শতাংশ কিংবা তার চেয়ে কম মানুষের জন্য ১ম ও ২য় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ এবং ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে প্রয় ৮০ শতাংশের বেশি কোটা সংরক্ষিত! আমাদের জনাপ্রশাসন যে পৃথিবীর বুকে অন্যতম ব্যার্থ জনপ্রশাসন, তার অন্যতম কারন এই কোটার আর্শিবাদ। এই কোটাধারীদের বড়ো একটা অংশ তাদের অসাধারণ সব প্রতিভার জোরে জনপ্রশাসনকে "হা ডু ডু" খেলার মাঠ বানায় ছাড়ছে। অবশ্য আমাদের দেশের হর্তাকর্তারাও বোধহয় এটাই চায়। কারন বড়ো রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতৃত্বের আশেপাশে থাকা চেলা চামচাদের দেখলে বিষয়টা বেশ পরিষ্কার হয়। অনেকের মুখে একটা কথা প্রচলিত, 'দেশের বড়ো দলগুলোর শীর্ষ নেতৃত্ব মেধাবীদের ভয় পায়। তারা চায় তাদের চেয়ে আরো বেশি অযোগ্য লোক। না হলে তাদের পক্ষে হিরক রাজার স্টাইলে শাসন চালানো সম্ভব হবে না।' কথাটা আসলেই বাস্তব। তবু জনপ্রশাসন যে এখনো একরকম টিকে আছে, তার অন্যতম কারন দেশের প্রতি চরম প্রতিশ্রুতিশীল নন কোটা থেকে এখানে জায়গা করে নেওয়া কিছু ছেলে মেয়ে।
.
কিছু দিন আগে এক বড়ো ভাই বলছিল- তার ছোট ভাইদের ব্যাচের অনেক ছেলে মেয়ে সেনাবাহিনীর কমিশন লাভ করতে পারেনি, শুধুমাত্র ট্রেনিং-এর সবগুলো ধাপ প্রপারলি কমপ্লিট করতে না পারাতে; যাদের মধ্যে অনেক উচ্চপদস্ত সামরিক কর্মকর্তার ছেলে মেয়েও ছিল। এবার বঝুন, সেনাবাহিনী কেন মানুষের আস্থার জায়গা। কারন ওখানে দেশপ্রেম এবং মেধাই একমাত্র যোগ্যতা; বাপ-চাচা কিংবা মামা-খালুর পরিচয় না।
.
আহা স্বদেশ! এক দেশের দু'টি প্রতিষ্ঠান। একটি মানুষের আস্থার জায়গা; আর অন্যটি হা ডু ডু খেলার মাঠ। কবি শামসুর রাহমানের ভাষায় তাই বলেতে ইচ্ছা করছে- উদ্ভট উটের পিঠে চলছে স্বদেশ!
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩১