somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্ব সেলিম আল দ্বীন এর লেখা অবলম্বনে নির্মিত জীবন-মৃত্যুর দাঁড়ি টানা ভিন্নধারার এক চলচ্চিত্রঃ " চাকা "

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :






জীবন- মৃত্যুর খেলা খুব কাছ থেকে অনেক মানুষ দেখে । কিন্তু নশ্বর জীবনটা যখন ফুরিয়ে যায় সময়ের স্রোতে , তখন এরপরের জীবনটার গল্প কেমন হয় ? সবার গন্তব্য কি একই রকম হয় নাকি সবার মৃত্যু একভাবে হয় ? কেউ কি কাঁদে সেই মৃত মানুষটির জন্যে , যে কিছুক্ষণ আগেও এই পৃথিবীর আলো-বাতাসে বেঁচে ছিল । মানুষের মৃতুর পরে মানুষ কি রকম অবস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে পারে তার এক মর্মান্তিক গল্প এঁকেছেন লেখক সেলিম আল-দীন আর তার সেই লেখা নিয়েই খ্যাতিমান পরিচালক মোরশেদুল ইসলাম নির্মাণ করেন চলচ্চিত্র “ চাকা” ।

প্রতিটি মানুষই একদিন মৃত্যুর স্বাদ নেয় , সেই স্বাদ নেওয়া থেকে কেউবিরত থাকতে পারেনা । মানুষের জীবন কত বিচিত্র, বেঁচে থাকতে কষ্ট আবার মরে গিয়েও কষ্ট । বেঁচে থাকতে মানুষ অনেক কিছুই ভাবে কিন্তু মৃত্যুর পর তার জীবনটা কি রকম হয় ? সে কি আনন্দে থাকে নাকি কষ্টে থাকে নাকি দুইটার মাঝখানেই তার অবস্থান । এই কথার উত্তর হয়তআমরা কেউই জানিনা । এক একেকজন আমরা এর উত্তর এক একেকভাবে দিতে প্রস্তুত হব , হয়ত এটাই স্বাভাবিক । আসলে আমরা সবশেষে মানুষতো , আমাদের প্রত্যেকের মাঝেই এক মৃত্যু চিন্তা খেলা করে ।কিন্তু এই আমি যখন মারা যাবো এই আমার জীবনটা কেমন হবে ? সাদা নাকি কালো ? আমার কবর হবে নাকি হবেনা ? এইরকম অনেক প্রশ্নইতো আমাদের মানুষের মনে ঘুরপাক খায় । কিন্তু এর শেষ কোথায় ?

মাত্র পঞ্চাশ টাকার বিনিময়ে "সরকারি লাশ" নেয়ার দায়িত্ব এসে পরে বৃদ্ধ গাড়োয়ানের । হাসপাতালের লেখা ঠিকানায় পৌঁছে দিতে হবে সেই লাশকে । কিন্তু মৃত যুবকের লাশ নিয়ে গ্রামের পর গ্রাম চলা হয় , কিন্তু সেই লাশের সাথে দেয়া ঠিকানার কোথাও ঠিকানা মিল পাওয়া যায় না । চাটাইয়ে মোড়ানো লাশে একসময় পচন ধরে , পিঁপড়া লাগে লাশে । রাতের পর রাত , দিনের পর দিন কাটে ।কিন্তু কোন গ্রামেই কোথাও লাশটির আত্বীয়-স্বজন বা পরিচিত কারো সন্ধান পাওয়া যায় না । তাহলে সেই লাশটার কি হবে ?
তাহলে কি এই লাশটি বেওয়ারিশ লাশ হবে ,লাশটির কি কবর হবেনা । সবশেষে , গাড়োয়ান ও তার সহযোগী লাশটি নিজ দায়িত্বে দাফন করার দায়িত্ব নেয় । আসলে মৃত্যুর পর আমাদের মৃত্যুর পরের জীবন কি রকম হবে কার , তা আমরা কেউ বলতে পারিনা ।ছবির মূল গল্প এখানেই , আর এভাবেই ছবি এগিয়ে যেতে থাকে ।

সবকিছুর শেষ আছে , কিন্তু মৃত্যু ? যেখানে একটা জীবনের সমাপ্তি মানেই ধরে নেয়া হয় সব শেষ , সেখানেও কিন্তু একটা নতুন শুরু হয়ে যেতে পারে । প্রতিটা মানুষের মৃত্যু স্বাভাবিক না । আবার হলেও সুন্দরভাবে তার গন্তব্য হয়না কবরে । আসলে পৃথিবীর মানুষের ঘূর্ণায়মান জীবনের শেষেও যে ঘূর্ণায়মান মৃত্যুময় সময় অতিবাহিত হতে পারে । প্রতিটা লাশেরইতো গন্তব্য কবর হয়না । আবার কত মানুষইতো প্রতিদিন মারা যায় , যার জন্যে হয়ত কেউ কাঁদেনা। বেয়ারিশ হয়ে হয়ত গন্তব্য হয় সেই মৃত মানুষ অথবা লাশটার স্থান কবরে । হয়ত আরেকটা নতুন কিছুর শুরু । জীবন শেষ ,কিন্তু মৃত্যুর পরের সময় শুরু । সবকিছুরই শুরু হয় , হয়ত সবকিছুরই শেষ আছে ।গন্তব্যহীন পথ তবু গন্তব্যের শুরু ।

চাকা" ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৯৪ সালে । খ্যাতিমান পরিচালক মোরশেদুল ইসলাম এর পরিচালনায় "এতে গাড়োয়ান চরিত্রে অভিনয় করেন -আমিরুল ইসলাম এবং আরও অনেকে । গ্রামীণ জীবনের প্রেক্ষাপটের ওপর আবর্তিত এই চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয় খ্যাতিমান লেখক ও নাট্যকার সেলিম আল দীনের লেখা "চাকা " গল্প অবলম্বনে ।



১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×