somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রুশ চলচ্চিত্রঃ Fortress of war ( যুদ্ধের দুর্গ ) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ছবি

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





Fortress of war বা যুদ্ধের দুর্গ , চলচ্চিত্রের নাম দিয়েই চলচ্চিত্রের গল্প ও বিষয়বস্তু সম্পর্কে প্রথমেই একটা ধারণা দিয়েছেন এর নির্মাতা আলেকজান্ডার কট । যুদ্ধের কাহিনীকে উপজীব্য করেই ১৩৮ মিনিটের এই রাশিয়ান চলচ্চিত্রে উঠে এসেছে জার্মান নাৎসি বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের গল্প । চলচ্চিত্রটির মাধ্যমে পরিচালক যুদ্ধের দিনের মুহূর্তগুলো ফ্রেমে আবদ্ধ করার চেষ্টা করেছেন , আরেকবার মনে করিয়ে দিয়েছেন জার্মান নাৎসি বাহিনীর বর্বরতার কথা ।



এক কিশোরের চোখ দিয়ে দেখা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার ধ্বংসযজ্ঞের মুহূর্ত উঠে এসেছে “Fortress of war চলচ্চিত্রে । যে কিশোর সাশা একিমভ প্রেমে পরেছিল কিশোরী অ্যানা’র , কিন্তু যুদ্ধ যখন শুরু হয় তখন স্বাভাবিকভাবে সেই যুদ্ধে মানুষের স্বাভাবিক জীবনে আঘাত আসে এবং সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মানুষের মানবতা । শত্রু পক্ষ মেতে ওঠে বিপক্ষ দেশের মানুষকে হত্যা করার ধ্বংস লীলায় । সেখানে নারী-শিশু – বৃদ্ধের কোন আলাদা স্থান নেয় , সবাই অবশ্যম্ভাবীভাবে সেই যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হয় । কিশোর সাশা একিমভ এর প্রেমেও সেই যুদ্ধের ঝাপটা এসে পরে ।



এ চলচ্চিত্র দর্শকের জন্যে নির্মাণ করতে পরিচালক আলেকজান্ডার কট পাঁচজন লেখকের সহায়তা নিয়েছেন । পাঁচজন লেখকের সমন্বয়ে এ চলচ্চিত্রের গল্প প্রস্তুত হয় , যেই গল্পের পরতে পরতে জায়গা পায় নাৎসি বাহিনী দ্বারা ঘটানো হত্যাযজ্ঞের কথা , ধ্বংসের কথা , যুদ্ধের বর্বরতার কথা । সেই সময়ের পটভূমি কাগজে পরিচালকের জন্যে উঠিয়ে তুলতে লেখক এলেক্স দুদ্রায়েভ , ভ্লাদিমির এরিয়মিন, একাত্রিনা টিরডাতোভা , ইগর উগলনিকভ এবং কনস্টাটিন বরোভয়েভ ভূমিকা রাখেন ।

১৯৪১ সালের ২২ জুন রাত শেষ হয়ে ভোর আসছে , ঠিক এমন মুহূর্তে জার্মান নাৎসি বাহিনী রাশিয়ায় Brestskaia দুর্গের কাছে এসে পৌঁছায় তাদের “বারবোশা অপারেশন ” শুরু করতে । আবসা আলোয় Brestskaia দুর্গের মানুষ ঘুমিয়ে আছে তখন , কিন্ত ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে যে সোভিয়েত রাশিয়ার রেড আর্মিদের দুর্গে যে আচমকা আক্রমণের স্বীকার হবে কেউ কেউ আন্দাজ করতে পারেনি তখনও । শুরু হয়ে যাওয়া অতর্কিত এ হামলায় দুর্গে থাকা শিশু , নারী , বৃদ্ধরা একের পর এক ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে ।



রাশিয়ার রেড আর্মিরাও একসময় প্রতিরোধ তৈরি করে । নাৎসি বাহিনীর অতর্কিত বিমান হামলা এবং গোলন্দাজ বাহিনীর হামলায় বিপর্যস্ত তখন রেড আর্মি । আর কিশোর সাশা একিমভ দেখছে তার কিশোর চোখ দিয়ে সেই যুদ্ধের ভয়াবহতা । কিভাবে কয়েকটি ঘণ্টার মধ্যে পাল্টে গেছে এতদিনের পরিচিত দুর্গের চিত্রপট । ভোর হওয়ার আগেও পরিচিত মানুষগুলো কি নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছিল , সেই ঘুম এখন কিভাবে চিরস্থায়ী না ফেরার দেশে চলে গেলো তা চোখের সামনে দেখতে থাকে কিশোর সাশা একিমভ ।



ছবির প্রাণ বলতে প্রথমেই বোঝায় ছবিটির গল্প এবং অভিনেতা - অভিনেত্রীদের অভিনয় । এ চলচ্চিত্রে কিশোর চরিত্রে অভিনয় করা কিশোর সাশা একিমভ অসাধারণ অভিনয় করেছেন ।একজন কিশোর কিভাবে একটা চলচ্চিত্রের প্রাণবিন্দু হয়ে চমৎকার একটা চলচ্চিত্রে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত অভিনয় দক্ষতা দেখিয়ে যায় তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ ছিল এ চলচ্চিত্রে সাশা একিমভ এর অভিনয় । রাশিয়ান এ চলচ্চিত্রে অভিনয় দিয়ে দর্শকের চোখের নজর কাটার মত অনেক দৃশ্য ছিল যাতে প্রতিটা অভিনেতা -অভিনেত্রী অভিনয় মুগ্ধ করে । কিশোর সাশা একিমভ এর পর সবচেয়ে বেশি নজর কাটেন রেড আর্মির তিন সেনা কর্মকর্তা কিঝহেভাটভ , ফমিন , গেভ্রিলভ । তাদের চোখ- মুখে যুদ্ধের দিনের মুহূর্তগুলো দারুণভাবে ফুটে উঠে । বারবার সেই চোখগুলো যেন কিছু কথা বলতে চায় , কিছু করতে চায় ।


চলচ্চিত্রটির ক্যামেরার কাজ , কস্টিউম ডিজাইন ছিল খুব প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য । একটা চলচ্চিত্রে যত বিষয়ে ভালো করলে সেই চলচ্চিত্রকে একটি ভালো চলচ্চিত্রের তকমা দেয়া যায় , তার সবকিছু বিদ্যমান Fortress of War চলচ্চিত্রে । কস্টিউম ডিজাইনের জন্যে এ চলচ্চিত্র পুরস্কার পায় । সাউন্ড , লোকেশনের সাজানো সবকিছুই ছিল একটা যুদ্ধের আবহ সৃষ্টি করার জন্যে আদর্শ । প্রতিটা বিভাগেই চলচ্চিত্রটি পুরস্কারের জন্যে মনোনীত হয় । সিনেমাটোগ্রাফির জন্যে "এশিয়া -প্যাসিফিক স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ড" এ মনোনীত হয় ।

রুশ ভাষায় নির্মিত চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ২০১০ সালে । বেলারুশ ও রাশিয়ায় দৃশ্যায়িত চলচ্চিত্রটি বক্স অফিসে $4,569,371 আয় করে । এতে কেন্দ্রীয় কয়েকটি চরিত্রে অভিনয় করেন আলেক্সি কোপাসভ, আন্দ্রে মারজলিকিন, পাভেল দিরেভিয়াংক , আলেকজান্ডার করশুনভ ।

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:৩৬
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×