somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফ্রান্সের চলচ্চিত্র Train de Vie ( জীবনের ট্রেন ) যেখানে জীবন একটা ট্রেন !!!!

২২ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




ফরাসি ভাষায় Train de Vie এর ইংরেজি অর্থ Train of life , যার বাংলা হচ্ছে “জীবনের ট্রেন” । বহতা নদীর মতন জীবনটাকে একটা চলন্ত ট্রেনের সাথে তুলনা করলে , সেই ট্রেন একটা সময় কোন একটা গন্তব্য বেছে নেবে । অম্ল-মধুর সেই গন্তব্য মানুষের জীবনে কতটা আপন হয়? জীবনটাকে মানুষ কতটা ভালোবাসে ? তা হয়ত মানুষ ঠিক উপলব্দি করে আবার করেনা । কবির লেখা কবিতায় কি আসলেই জীবনের পুরো রং টা উঠে আসে নাকি জীবনটা কোন রৈখিকতা পায় ? সেই ব্যাখ্যায় জীবনটা অন্যরকম পরিণতি পায় । গল্পের স্বাদ জীবনের প্রতিচ্ছবি হয়ে থাকে , তাতে জীবনের মুহূর্তগুলোই উঠে আসতে থাকে । জীবন কোন অর্থ খুঁজে পেতে চায় জীবনের মাঝেই । মানুষ সুন্দর একটা জীবন প্রত্যাশা করতে ভালোবাসে । আর সেই প্রত্যাশা নিয়ে ট্রেনের যাত্রীদের জীবনের কথা উঠে আসে ।



মধ্য ইউরোপের ছোট একটি গ্রাম । অন্য যেকোন সময় গ্রামটার মানুষের জীবনের ব্যস্ততা থাকতো শুধুই নিজেদের নিয়ে । কিন্তু কিছু মুহূর্ত আছে যা মানুষের মাঝে কিছু পরিবর্তন নিয়ে আসে । মানুষ আর প্রতিদিনকার মতন তাদের স্বাভাবিক জীবন অতিবাহিত করতে পারেনা । সময়ের স্রোতে মানুষকে নিজের পরিচিত ভুবন একসময় ছাড়তে হয় , সবকিছু নিজের মতন হয়না । পরিচিত আলো-বাতাস ছাড়তে হয় , ছাড়তে হয় নিজের বেড়ে ওঠা আবাসস্থলকে । জীবনটা এখানে অন্যরকম হয় , অন্যরকম সময় হয় । জীবনের মানে এখানে ভিন্নরকম ভিন্ন কিছু , ঠিক নিজের মতন সময় হয়না । সব যেন ঘটতে থাকে বৈপরীত্য ।



১৯৪১ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় । জার্মান নাৎসি বাহিনী ক্রমাগত ইহুদিদের হত্যা করছে ও বিভিন্ন এলাকা দখল করছে, আর এরকম একটা মুহূর্তে উদ্বিগ্ন মধ্য ইউরোপের একটা গ্রামের ইহুদি গ্রামবাসী বেঁচে থাকার জন্যে উপায় খুঁজতে থাকে । তাদের স্বাভাবিক জীবনেও ছন্দপতন ঘটে । তারা জানতে পারে ইহুদি হওয়ার অপরাধে জার্মান নাৎসি বাহিনীর কাছে তাদেরও হত্যার স্বীকার হতে হবে । তারা তাদের গ্রামের দিকেই এগিয়ে আসছে । গ্রামের নেতৃত্বস্থানীয়রা ঠিক করে একটা ট্রেন তৈরি করবে , যে ট্রেন তাদের নাৎসি বাহিনীদের হাত থেকে রক্ষা করে পৌঁছে দেবে নিরাপদ স্থান প্যালেস্টাইনে ।



গন্তব্য কি আসলে এতই সহজ , যেখানে চারপাশে ক্রমাগত জার্মান নাৎসি বাহিনীর আধিপত্য । বেঁচে থাকার অর্থ এ মানুষগুলোর কাছে পালিয়ে বেড়ানো হয়ে ওঠে । নিজেরাই তৈরি করে ফেলে নিজেদের ট্রেন । স্মৃতির গ্রাম , শৈশব সবকিছু নিজেদের মনে বন্দী করে ক্রমাগত ট্রেন তৈরি করতে মরিয়া হয়ে ওঠে । একসময় তৈরিও হয়ে যায় । কিন্তু ট্রেন চালাবে কে !!! গ্রামের কেউইতো কখনো ট্রেন চালায়নি । অদ্ভুত অভিজ্ঞতা আর নিজেদের মাঝে শুরু হয় আলোচনা । নিজেদের মধ্যে একজন আনকোরা মানুষ ট্রেন চালানোর দায়িত্ব পায় । যে মানুষ একদম একা , যে শুধুই মানুষকে ভালোবাসে । কিন্তু সে জানেনা তার জন্যে আধো কেউ অপেক্ষায় আছে কিংবা নাই । কিন্তু তবুও সেই মানুষটা আনন্দ খোঁজে , বোকাসোকা মানুষটা ঝুঁকি নেয় সামনে থেকে ট্রেন চালনায় । তাকেই প্রথম স্বীকার হতে হবে হয়ত জার্মান নাৎসি বাহিনীর সম্মুখে । ঠিক যেন হাতের মুঠোয় অনেকগুলো পরিচিত মানুষের জীবনের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নেয়া । সাথে চলতে থাকে সময় থেকে মুক্তি পাওয়ার আশা ।

Celluloid Diary

ট্রেনকে ঘিরে ঘটতে থাকে ঘটনা , অন্যদিকে নাৎসি বাহিনী হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকা । ফ্রেন্স ও জার্মান ভাষায় নির্মিত ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৯৮ সালে ফ্রান্সে । ভিন্ন ভাষার এ চলচ্চিত্রে উঠে আসে একের পর এক যুদ্ধের সময়ের কথা । পরিচালক রাদি মিহাইলিনু’র লেখা অবলম্বনে চলচ্চিত্রে প্রাণ পায় যুদ্ধের দিনের সাধারণ মানুষের জীবনের তীক্ষ্ণ অভিজ্ঞতা । গুচ্ছ গুচ্ছ বেদনার গল্প , সাথে প্রতিনিয়ত স্মৃতি হাতড়ে বেড়ানো ও অজানা আশংকা আর নিজেদের মাঝে উঠে আসা বন্ধন ।

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মার্চ, ২০১৫ ভোর ৪:২৭
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঘরে ফেরার টান

লিখেছেন স্প্যানকড, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ ভোর ৬:৩১

ছবি নেট।

তুমি মানে
সমস্ত দিনের ক্লান্তি শেষে
নতুন করে বেঁচে থাকার নাম।

তুমি মানে
আড্ডা,কবিতা,গান
তুমি মানে দুঃখ মুছে
হেসে ওঠে প্রাণ।

তুমি মানে
বুক ভরা ভালোবাসা
পূর্ণ সমস্ত শূন্যস্থান।

তুমি মানে ভেঙ্গে ফেলা
রাতের নিস্তব্ধতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বজলুল হুদাকে জবাই করে হাসিনা : কর্নেল (অব.) এম এ হক

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:৫৯

মেজর বজলুল হুদাকে শেখ হাসিনা জবাই করেছিলেন।

(ছবি ডিলিট করা হলো)

শেখ মুজিবকে হত্যার অপরাধে ২৮শে জানুয়ারী ২০১০ এ মেজর (অব.) বজলুল হুদা সহ মোট ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। রাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মি. চুপ্পুর পক্ষ নিয়েছে বিএনপি-জামাত; কারণ কী?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৬


বিএনপি গত ১৬ বছর আম্লিগের এগুচ্ছ কেশও ছিড়তে পারেনি অথচ যখন ছাত্ররা গণহত্যাকারীদের হটিয়েছে তখন কেন বিএনপি চু্প্পুর পক্ষ নিচ্ছে? অনেকেই বলছে সাংবিধানিক শুন্যতা সৃষ্টি হবে তার সংগে বিএনপিও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগারেরা প্রেসিডেন্ট চুপ্পুমিয়াকে চান না, কিন্তু বিএনপি কেন চায়?

লিখেছেন সোনাগাজী, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৪



**** এখন থেকে ১৯ মিনিট পরে (বৃহ: রাত ১২'টায় ) আমার সেমিব্যান তুলে নেয়া হবে; সামুটিককে ধন্যবাদ। ****

***** আমাকে সেমিব্যান থেকে "জেনারেল" করা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিকাহের পরিবর্তে আল্লাহর হাদিসও মানা যায় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪




সূরা: ৪ নিসা, ৮৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৮৭। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নাই। তিনি তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্র করবেন, তাতে কোন সন্দেহ নাই। হাদিসে কে আল্লাহ থেকে বেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×