somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোরিয়ান রোমান্টিক মাস্ট ওয়াচ মাস্টারপিস চলচ্চিত্র - The Classic :) :)

২৭ শে জুন, ২০১৫ রাত ৩:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমাদের প্রেমগুলো ঝড়ের সাথে লড়ে ,সমুদ্রের গর্জনের সাথে ডুবে মরে । আর কিছু কিছু প্রেম বেঁচে গেলে আমরা তাদের দেখে প্রেম করতে বেঁচে থাকি । কিছু কিছু পরিচয় ইশারায়, চোখে চোখে হয় । সেই ইশারার আবেগটা শুধুমাত্র হাসির মাধ্যমে ভেসে আসেনা , অনুভূতিটা কেমন করে যেন মনের মধ্যে সৃষ্টি হয়ে যায় । কাউকে মুখ ফুটে হয়ত কোন কথা বলাই হয়নি কখনো কিংবা কোন পরিচয়ই ছিলোনা এর আগে ,তবুও অনেক পরিচিত মনে হয় খুব কাছের কেউ মনে হয়। সেই অনুভূতিগুলোই ভালোবাসা । কেউ একে প্রেম বলে, কেউ রোমান্স । কিন্তু সবশেষে একটা বায়বীয় কথাই -ভেসে আসে উঠে আসে ,ভালোবাসা- ভালো লাগা।


মুহূর্তগুলো কেটে যায় আমাদের একান্তই নিজের মতন । কিন্তু হঠাৎ সেই জীবনের মুহূর্তগুলোতে নিজের অজান্তেই কারো প্রবেশাধিকার ঘটে যায়। ঠিক করে তাকে চেনা নেই , জানা নেই । কিন্তু কেমন যেন একটা মায়া, কেমন যেন একটা মোহ, একটা ঘোরের মধ্যে থাকা । ঠিক বোঝানো যায়না সেই মুহূর্তগুলো ,সেই সময়গুলো । ঠিক যেন বিশ্বাস হতে চায়না যে কেউ একজনকে কিভাবে কি করে যেন ভালোবাসা হয়ে গেছে । ঠিক যেন এমন ব্যাপারটাঃ

“তুমি কোথাও নেই তবু সবখানে আছো,
মায়াবী বিভ্রমে ভালোবাসায় জড়ায়ে আছো ।
তুমি সবখানে , তবু কোথাও তুমি নেই ,
আমার বুকের মধ্যে তুমি শুধু হাঁটো ।”

প্রেমে পরলে বোকা বোকা ছেলেরা হয়ত খুব বেশি সাহসী হয়ে উঠে। আর প্রেমিকা যদি খুব শান্ত-সুস্থির ধরণের হয়ে থাকে, তবে সেই মেয়েরা খুব বেশি করে জীবনটাকে দেখতে যায় । সেইসব মেয়েদের মাঝে সেই মুহূর্তগুলোয় ভয় লাগা- ভালো লাগা ব্যাপারগুলো খুব বেশি পরিমাণে কাজ করে । শান্ত স্বভাবের মেয়েগুলো খুব সহজে প্রেমে পরতে চায় না , কিন্তু একবার ভালোবেসে ফেললে কাউকে তখন মানুষটার জন্যে নিজের সব ভালোলাগা মুহূর্তগুলো তুলে রাখতে চায়। আর এভাবে কেমন কেমন করে যেন প্রেমটা গাঢ় হয়ে যায় আর বোকা স্বভাবের ছেলেটাও অনেক দায়িত্ব সম্পূর্ণ ছেলে হিসেবে নিজেকে তৈরি করার চেষ্টায় নেমে পরে ।


জুনহা একটি ফটোগ্রাফে মেয়েটির ছবি দেখে তার এক বন্ধুর মাধ্যমে। বন্ধুর অনুরোধে সেই ফটোগ্রাফের ছবির মেয়েটিকে চিঠি লিখতে বসে । এর আগে কখনোই মেয়েটিকে কোন চিঠি দেয়নি বন্ধু । মেয়েটিকে খুব বেশিদিন আগে জুনহাও জানতোনা । মেয়েটির সাথে প্রথম দেখা হয়েছিল এক গ্রামে । কখনোই হয়ত জুনহা ভাবেনি সত্যিই বন্ধুর দেয়া সেই ফটোগ্রাফের মেয়েটি হবে গ্রামে দেখা সেই স্বল্প পরিচিত মেয়েটি । সে নিজেও একসময় জানতোনা কোথায় কোন শহরে থাকে ফটোগ্রাফে দেখা এই মানুষটা । গ্রামে এসে সেই ফটোগ্রাফের মেয়েটির সাথে দেখা হয়েছিল কাকতালীয়ভাবে একসময়, এবং তারা দুজন সুওয়ান শহরেই থাকে। এরপর বিছিন্ন হয়ে যায় দুজন। কখনোই জুনহা আশা করেনি স্বল্প পরিচয়ের সেই সাং জোহি’কে এই ফটোগ্রাফে দেখবে ।


ভালোবাসা হয়ত পৃথিবীতে ঘুরে ফিরে আসে , হয়ত ভিন্নভাবে ভিন্ন কোন পরিবেশের আশ্রয় নিয়ে । যাকে অজান্তেই ভুলে যাওয়া হয়েছে সেই মানুষটাই কিভাবে কেমন করে একসময় মনের কোণে কাছের কেউ হয়ে থাকার জন্যেই অন্যকোন মাধ্যমে দেখা দেয়ার অপেক্ষায় থাকে । ভালোবাসা অদ্ভুত কক্ষপথের অদ্ভুত গ্রহের কোন অবস্থানের মতন । অনুভূতি অনুভব আমাদের বাঁচিয়ে রাখে । বন্ধুর জন্যে একটি চিঠি লিখতে গিয়ে নিজের অনুভব অনুভূতিগুলো ক্রমান্বয়ে প্রকাশ পেতে থাকে জুনহার নিজের মাঝে । বাইরের আকাশ , জানালা দিয়ে দেখা জীবনটা শুধুই নিজের মাঝে দৃষ্টিগোচর হয় কিন্তু মনের জানালা দিয়ে একটু সচেতনভাবে তাকালে জানা যায় বিশেষ কারো প্রতি হয়ত বিশেষভাবে আগে ভাবা হয়নি । কেউ অপেক্ষায় থাকে, কেউ সেই অপেক্ষার জন্যে অপেক্ষা করতে চায় না ।

জীবনের প্রচ্ছন্ন ভালোলাগা মুহূর্তগুলোকে মানুষ কখনোই তেমন গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে বসে যায়না , কিন্তু সেই প্রচ্ছন্ন মুহূর্তগুলোই প্রকট ভালোলাগার মুহূর্তের অপেক্ষায় পরে থাকে । “দ্য ক্ল্যাসিক” চলচ্চিত্রের সুরের মূর্ছনার সাথে সাথে একজন জুনহা’ও ভাবতে ভালোবেসে ফেলে কাউকে তার জীবনে দরকার ছিল। ফটোগ্রাফে সেই তাকিয়ে থাকা তরুণীটি শুধুই কাগজের ছবিতেই সীমাবদ্ধ নেই আর, সেই তরুণী সাং জোহি অনেকটাই মনের অজান্তে তার মনের ক্যানভাসের ছবি হয়ে গেছে ।

হয়ত মুহূর্তগুলো অনেক ভাবাবে , বৃষ্টির কণাগুলো শরীর বেয়ে নেমে পরে রাস্তার জলে । সেই জল দুজন মানুষের ভালোবাসার গল্পের সাক্ষী হয়ে থাকে । গল্প যতদূর গভীরে স্পর্শ করে ঠিক দৃশ্যায়নগুলো, সুর যেন স্পর্শের খেলা খেলে যেতে থাকে । ভালোবাসা হঠাৎ করে চলে আসে যে দুজন মানুষের জীবনে , প্রকট – প্রচ্ছন্নের বিভ্রম নিয়ে থাকে । পাহাড়ের কোলঘেঁষে জীবনটা খুব নিজের হয়ে যেতে চায় । প্রতিটি মুহূর্ত হৃদয়কে স্পর্শ করে যায় । স্পর্শ করে পরিচালক-লেখক জেয় ইয়ং কেওয়াক এর গল্পের চরিত্রগুলোর অভিনয়ে মধ্যে দিয়ে , যেখানে সেং ওচ এবং ইয়ে জিন সন ছিলেন চলচ্চিত্রটির মূল চরিত্রের ভুমিকায়।

একজন নির্মাতা-লেখক জেয় ইয়ং কেওয়াক যেন ভালোবাসার “দ্য ক্ল্যাসিক” দেখানোর এক প্রয়াস বয়ে বেড়িয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ান ১২৭ মিনিটের এ চলচ্চিত্রের প্রতিটি মুহূর্তজুড়ে । যেখানে ভালোবাসার কোন আক্ষরিক সীমাবদ্ধ নেই , নয় শুধু চিঠির কয়েকটি লাইনে কলম দিয়ে প্রকাশের অনুভূতি । এটা শাশ্বত , কেউ একজন হয়ত খুব করে ভালোবেসেছিল আর তাই হয়ত "দ্য ক্ল্যাসিক" এ সেই ভালোবাসার শাশ্বত মুহূর্তের আবির্ভাব।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:০৭
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রকৌশলী এবং অসততা

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৫৭


যখন নব্বইয়ের দশকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম এবং পছন্দ করলাম পুরকৌশল, তখন পরিচিত অপরিচিত অনেকেই অনেকরকম জ্ঞান দিলেন। জানেন তো, বাঙালির ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ডাক্তারিতে পিএইচডি করা আছে। জেনারেল পিএইচডি। সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:১৫

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

ছবি, এআই জেনারেটেড।

ইহা আর মানিয়া নেওয়া যাইতেছে না। একের পর এক মামলায় তাহাকে সাজা দেওয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

এমন রাজনীতি কে কবে দেখেছে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২০


জেনজিরা আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামল দেখেছে। মোটামুটি বীতশ্রদ্ধ তারা। হওয়াটাও স্বাভাবিক। এক দল আর কত? টানা ১৬ বছর এক জিনিস দেখতে কার ভালো লাগে? ভালো জিনিসও একসময় বিরক্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযুদ্ধের কবিতাঃ আমি বীরাঙ্গনা বলছি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৫


এখনো রক্তের দাগ লেগে আছে আমার অত্যাচারিত সারা শরীরে।
এখনো চামড়া পোড়া কটু গন্ধের ক্ষতে মাছিরা বসে মাঝে মাঝে।

এখনো চামড়ার বেল্টের বিভৎস কারুকাজ খচিত দাগ
আমার তীব্র কষ্টের দিনগুলোর কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×