সন্ধ্যার আবছা আলো যখন খানিকটা গাঢ় অন্ধকার হয়, চারপাশ ভাল করে দেখে নিয়ে,কোমরে গোঁজা চাবিটা দিয়ে সন্তর্পনে দান বক্সের বড়-সড় তালাটা খুলে ফেলেন মোকাব্বর মুন্সি । ল্যাংটা বাবার সেবার্থে অর্জিত,-সিকি,আধুলি আর দোমরানো, মোচরানো দোয়েল কিম্বা শহীদ মিনার খচিত নোটগুলো ফটাফট তার পাঞ্জাবির লম্বা পকটে পাচার হয়ে যায় । "রহম করো; মাওলা ! রহম করো !" জাতীয় কিছু শব্দ বিড়বিড় উচ্চারণে দানবীরদের জন্য তিনি দোয়া করেন,এবং (সম্ভবত) তাদের উদ্ধার করেন !
দেখতে-দেখতে চৌ দন্ডের খুঁটিতে ঝুলানো লাল শালুটা আর থাকল না । সেখানে একদম মাটি ফুঁড়ে যেন রাতারাতি দাঁড়িয়ে গেল দু'চালা এক টিনের ঘর । বাবার সেবার আর এক ধাপ (পড়ুন,ব্যবসার আর এক ধাপ ) উন্নতি হলো । মোকাব্বর মুন্সি শুধাল,রোদ-ঝর-বৃষ্টিতে ভক্তকূলের হালকায়ে জিকিরের সুবিধার্থে এই সুবন্দবস্ত !
দু'চালা টিনের অন্ধকার ঘরের ভেতর দিন-রাত মোমবাতি জ্বলে।
ভক্তদের দান এই মোমবাতি । এছাড়া আগরবাতি আর ধুপের ঘ্রাণে সেখানে তৈরী হয় রহস্যপূর্ণ এক অপর্থিব পরিবেশ । এর মাঝেই ভক্তকূলের হালকায়ে জিকির চলতে থাকে । দিনে দিনে ল্যাংটা বাবার পসার বাড়ে । হু হু করে দান খয়রাত বাড়তে থাকে । মোকাব্বর মুন্সির চেহারাটা চকচকে হয় । পেটে চর্বি জমে, চামড়া আরেকটু পুড়ো মোটা হয় ।
এ-পর্যায়ে ছোট্ট একটা অঘটন ঘটে । কে বা কারা এক রাতে ল্যাংটা বাবার রহস্যপুরীতে আগুন ধরিয়ে দেই (এবতেদায়ী মাদ্রাসার দুরন্ত ছাত্রের সেই দলটি আনন্দের সঙ্গে এ কাজটি করে, কেউ জানতে পারেনা )! মধ্যরাতে আগুনের শিখায় চারপাশ আলোকিত হয়ে যায় । ফট ফট শব্দে রহস্যপুরীর টিনগুলো ফুটতে থাকে । ফট ফট এ-শব্দ কি মোকাব্বর মুন্সির পাঁজর ভাঙ্গার শব্দ....?
চলবে...
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০০৭ রাত ১:০৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




