আপনি এমনটি করেন কিনা মিলিয়ে নিতে পারেন-যদি চান
গীবত কি সেটা কম বেশি সবাই জানি।তারপরেও যারা জানি না তাদের জন্য।
সাহাবী আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, গীবত কাকে বলে, তোমরা জান কি?
সাহাবিগণ বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -ই ভালো জানেন। তিনি বললেন, তোমার কোনো ভাই (দীনি) সম্পর্কে এমন কথা বলা, যা সে অপছন্দ করে, তা-ই গীবত।
সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল, আমি যে দোষের কথা বলি তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে থাকে তাহলেও কি গীবত হবে? উত্তরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি যে দোষের কথা বল, তা যদি তোমার ভাইয়ের থাকে তবে তুমি অবশ্যই তার গীবত করলে আর তুমি যা বলছ তা যদি তার মধ্যে না থাকে তবে তুমি তার ওপর মিথ্যা অপবাদ দিয়েছ। (মুসলিম)
কথা হল খুব জটিল ব্যাপার।আপনার একটা কথায় কারো জীবন বদলে যেতে পারে অথবা ধ্বংস হয়ে যেতে পারে!এই কথার মাধ্যমে আজকাল গীবতের হার কমে এসেছে।প্রযুক্তি আমাদের অলস করে দিয়েছে তাই আর কথা দিয়ে গীবত করি না!
একান্ত ব্যক্তিগত গবেষণায় দেখা গেছে আজকাল মানুষ বলার চেয়ে গীবত দেখাতে বেশি পছন্দ করে।
আমরা কিন্তু কমবেশি সবার সাথে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে সামাজিক মাধ্যম কিংবা মোবাইলে মেসেজ করে থাকি।আমরা এখন ডিজিটাল বাঙালি,দেখিয়ে দেখিয়ে গীবত করি। মুখে বলার প্রশ্নই আসে না।
রাহাত, আমি আর সেজুঁতি।রাহাত সেঁজুতিকে পছন্দ করে,কিন্তু আমাকে নয়।সেজুঁতির স্কুল বন্ধু আমি।তাই আমার সম্পর্কে কোন খারাপ কথা বললেই সেঁজুতি সব স্ক্রিনশট দিয়ে আমায় দেখায়।আমি দেখি আর মনে মনে বলি রাহাত এত খারাপ।রাহাত কিন্তু জানে না সেঁজুতি যে সব স্ক্রিনশট দিয়ে অন্যকে দেখায়।রাহাত সহজ সরল ভাবে সবই বলে সেজুঁতিকে।আর সেঁজুতি সব দেখায়।
অবশেষে একদিন রাহাতের উপর খুব রাগ হয়,তখন রাগে পড়ে কিছু স্ক্রিনশট দেখিয়ে ফেলি।ঝগড়া ভালো মত বাঁধে।
স্ক্রিনশট এর ব্যাপারে সকল মানুষের সচেতনতা দরকার।
#প্রথমত আপনি অগোচরে অন্য একজন মানুষের বিশ্বাস ভঙ্গ করছেন।
#দ্বিতীয়ত আপনি অন্য মানুষের কথা-যেটা আমানত ছিল সেটার খেয়ানত করছেন।
#তৃতীয়ত আপনি ডিজিটাল গীবত করছেন।
মোটামুটি পরিচিত মানুষের সাথে কথা বলতে গেলে বলে নিই,আমার অনুমতি ছাড়া স্ক্রিনশট নিবেন না।কারণ এটা আমার কাছে আমানতের খেয়ানত তুল্য।
আসুন বেচেঁ থাকি ডিজিটাল গীবত থেকে,একান্ত প্রয়োজন ছাড়া স্ক্রিনশট হতে।
‘ধ্বংস তাদের জন্য, যারা অগ্র-পশ্চাতে দোষ বলে বেড়ায়।’ (সূরা হুমাজাহ-১)
তবে জালেম শাসক বিরুদ্ধে, বিবাহের ক্ষেত্রে খোঁজ খবর নেওয়া, ফতোয়া গ্রহণ করার ক্ষেত্রে, বিচার ফয়সালার ক্ষেত্রে, ধর্মের ক্ষেত্রে, কেউ কবিরা গুনাহ করলে, কারো সম্পর্কে অন্যদের সাবধান করার জন্য তার দোষ বর্ণনা করা ইত্যাদি বিষয়ে অগোচরে কথা বলা গীবত নয়।
এই সময়ের ডিজিটাল গীবত থেকে বেঁচে থাকুন।অপ্রয়োজনে আপনার কথার স্ক্রিনশট দিবেন না।
লেখাটি ২০১৬ সালে লেখা।
#রুবাইদা গুলশান
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:০৮