নগরীর দরজার পর দরজা ভেদ করে হেঁটেছি পথ ধরে,একই রাস্তায় একি তোরণ সে যে!
হেঁটে হেঁটে একই ছবি আসছে বারে বারে।প্রতিটি তোরণের মাথার উপর তাকিয়ে আছে মস্ত বড় ঘড়ি।প্রতিটি ঘড়ির রঙ নীল।ঘড়ির কাঁটাগুলো কালো।
নগরীর কোন কোলাহল নেই এখানে।এখানে কোন গাড়ি ছুটে চলে না কিংবা ছুটে গেলেও শুনতে পাই না।এখানে হয়ত সব থেমে আছে শুধু চলমান দুটো গতি হেটেঁ চলার সাথে সাথে সময়ের গতি।
ঘড়িগুলো চলছে বিকট শব্দ নিয়ে।এক একটা কাঁটা যেন নৃত্যের তাল নিয়ে নেচে চলেছে।একটা করে গেট পার হচ্ছি আর সামনের ঘড়িতে দেখেছি কত সময় ধরে এখানে আছি আমি!
সময়গুলো খরচ হয়ে যাচ্ছে,হেঁটে যাচ্ছি পথ ধরে।সময় বেঁধে নিয়ে যারা এগিয়ে যাচ্ছে মানুষ হতে -ফিরে ফিরে তারা হারিয়ে যাচ্ছে সময়ের কাছে।
পথিক আমি,এত সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি অথচ নিজের জন্য কোন সময় নেই।সময়গুলো খরচ হয়েছে মানুষ হতে গিয়ে,অথচ মানুষ হতে পারিনি।
মানুষ হতে পারা সে তো অনেক কঠিন, পাগলও হতে পারিনি তবুও কখনও পাগলের মত প্রলাপ করি,সেও কম কিসের!পাগলরা হয়ত ভাবে আমরা তো পাগল সেজে থাকি,তা না হলে কেমন করে সহ্য করব তোমাদের মানুষ থেকে অমানুষ হয়ে উঠার গল্প।অমানুষেরা তো দেখতে মানুষের মত।
সময়ের দাবীতে জীবন বদলে দিচ্ছে জীবনের গল্প।
আমি হেঁটে চলি শুধু, ঝকঝকে দৃষ্টি নিয়ে আমার আর দেখা হয়ে উঠে না ফসলের মাঠে শুয়ে নরোম রোদের এক টুকরো আকাশ ,ফসলের মিষ্টি সুগন্ধি বাতাস লাগে না হৃদয়ে ,শুয়ে শুয়ে দেখতে পাখির ডানা ঝাপটানো।
বহুদিনের পরমায়ু নিয়ে আমি হেঁটে চলেছি,অবশেষে হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে গেছি গন্তব্যে,পেছন ফিরে দেখেছি শুধু কতগুলো তোরণ পার করে এসেছি।
ঘড়িতে বারটা বেজে দশ।ভালো করে তাকালাম।
এই ঘড়িতে কোন সেকেন্ডের কাঁটা নেই।ঘড়িটা থেমে গেছে।সময়ের খরচে সময় ফুরিয়ে গেছে সব।এখানের আকাশ সম্পূর্ণ কালো, জানা হয়নি রাতের আঁধারে ঢেকেছে আকাশ নাকি একি কোন বিচ্ছিন্ন কোন প্রাণের ব্যথার দীর্ঘশ্বাস!
থেমে গেছে সময় কিংবা জীবনের সুদীর্ঘ ইতিহাস!
( এইভাবে মানুষ তোরণের পর তোরণ পার করে জীবন সায়াহ্নে পেছন ফিরে তাকায়
১ জুন, ২০১৭
ছবি ইন্টারনেট
©রুবাইদা গুলশান
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:৪৫