somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গাছগুলো যথাস্থানে রেখেই রাস্তা প্রশস্ত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হোক!

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১৮২৬ সালে যশোরে কালী প্রসাদ পোদ্দার নামে এক ধনী বণিক ছিলেন। তাঁর মা এই পথ দিয়ে গঙ্গা স্নানে যেতেন। নদীয়ার যেসব মানুষ পুণ্যস্নানের জন্য হরিদ্বার আর বেনারস পর্যন্ত যেতে পারতেন না তারা চাকদহ নামক ঐ তীর্থস্থানটিতে যেতেন।
তখন পথটি এমন ছিল না। যাত্রী এবং পালকিবাহকরা এই দীর্ঘ যাত্রায় রোদে পুড়ে যেতেন। কোন গাছপালাই ছিল না।
বিশ্রামের জন্য সামান্য ছায়া পেতেন না।
একবার কালী প্রসাদের মা স্নান করে ফিরে ছেলেকে বলেছিলেন, 'এত দীর্ঘ পথ আমার কষ্ট হয়।
তুমি এত কিছু করো, এই পথটা ধরে গাছ লাগিয়ে দিতে পার না?'
.
কালী প্রসাদ মায়ের যাত্রা পথ শীতল করতে এই পথে তখন হাজার হাজার গাছ লাগান।
শত বছর পরেও এই গাছগুলো রয়ে গেছে।
.
.
এই পথে আমি বহুবার বাংলাদেশ হতে ভারতে গিয়েছি, ফিরে এসেছি।
কি যে মায়ায় ঘেরা এই পথটুকু যারা গেছেন শুধু তারাই অনুভব করতে পারবেন।
প্রতিটি গাছই যেন একটি ইতিহাস।
দীর্ঘদিন বেচে থাকার কারণে তাদের অবলম্বন করেও জন্ম হয়েছে অনেক গাছের। তাদের সারা গায়েও অন্যান্য আরও ছোট প্রজাতির নানা গাছ গাছালি :)
পুরো পথটি যেন রূপকথার কোন রাস্তা।
মায়া আর সবুজে ছাওয়া এই পথ তাই আমাদের সকলের কাছে অতি প্রিয়। ভালোবাসার একটি রাস্তা।



যশোর শহরের দড়াটানা মোড় থেকে বেনাপোল পর্যন্ত সড়কটির দুপাশে দুই হাজারেরও বেশি গাছ আছে। তারমধ্যে অনেক গাছ শতবর্ষী। রাস্তার দুই পাশে এই বৃক্ষরাজি কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
সীমান্তের ওপারে এই সড়কটি পরিচিত যশোর রোড নামে।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এই সড়কটির রয়েছে ঐতিহাসিক অবস্থান।
লাখ লাখ শরণার্থী এই সড়ক ধরে ভারতে গেছেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় মার্কিন কবি অ্যালেন গিন্সবার্গ যুদ্ধ এলাকা পরিদর্শন করেছিলেন। দেশে ফিরে গিয়ে তিনি লিখেছিলেন তার ঐতিহাসিক কবিতা ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’।
.
.
স্মৃতিবিজড়িত এই রাস্তাটি ৪ লেনে উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সময়ের দাবিতে এটাই বাস্তবতা। মানুষ বেড়েছে, গাড়ি বেড়েছে; রাস্তাও তাই বাড়াতে হবে।

আমাদের চাওয়া হলো রাস্তাটি চার লেন করার জন্য রাস্তার দুই পাশে থাকা ২ হাজার ৩১২টি গাছ কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে তা যেন করা না হয়। গাছগুলো রেখেই রাস্তা প্রশস্ত করা হোক। সীমান্তের ওপারে ভারতের অংশেও রাস্তা বড় করা হয়েছে তারা কিন্তু গাছ না কেটেই রাস্তা প্রশস্ত করার কাজটি করেছে। একটা গাছও কাটা হয়নি।

.
.
গাছগুলো যথাস্থানে রেখেই রাস্তা প্রশস্ত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হোক!





সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:৪৬
১২টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরূপের সাথে হলো দেখা

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৫



আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×