সরকার নিয়ন্ত্রিত ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ারমত কেবল এক পক্ষের কথা প্রচারিত হলে ব্লগের মহাত্ম থাকে কি। তাই চলমান মানবতাবিরোধী বিচার নিয়ে একটু ভিন্নচিন্তার চেস্টা করছি। আশা করি এডমিনের এখনও ভিন্ন চিন্তা সহ্য করার ক্ষমতা একেবারে লোপ পায় নাই।
দেখুনতো প্রশ্নগুলি এবং তার উত্তর আমাদের অজানা কি না।
১.যাদের ফাঁসি দেয়া হচ্ছে তারা যদি রাজনীতি না করত তাহলে কি ফাঁসি হত?
উত্তর: নিশ্চয়ই নয়।
২. রাজনীতি করলেও যদি আওয়ামী লীগ বা বামপন্থি দল করত তাহলে কি ফাঁসি হত?
উত্তর: নিশ্চয়ই নয়
৩. জামাত করলেও যদি কেন্দ্রীয় নেতা না হত তাহলে কি ফাঁসি হত?
উত্তর: নিশ্চয়ই নয়
৪. কেন্দ্রীয় নেতা হলেও জামাত যদি '৯৬ এরমত আলাদা থাকত, বি.এন.পির সাথে জোট না করত তাহলে কি ফাঁসি হত?
উত্তর: কখনই নয়, '৯৬-২০০১ পর্যন্ত কোন মামলা হয় নাই।
৫. সরকার ও আওয়ামী-বামপন্থীদের এত চাপের মধ্যেও ট্রাইবুনাল প্রথম রায়ে কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবনের বেশী সাস্তি দিতে পারে নাই। যদি এই ট্রাইবুনালের প্রতি বাদি পক্ষের সামান্যতম আস্থা থাকত এবং সেই রায় মেনে নিত, ট্রাইবুনালের রায়ের বিরুদ্ধে শাহবাগে আন্দোলন না করত হালে কি ফাঁসি হত?
উত্তর: কখনই নয়। আন্দোলনের প্রভাবে সংসদে আইন পরিবর্তন করে কাদের মোল্লার ফাঁসি নিশ্চিত করা হয়েছে। সেই রায়ের বিরুদ্ধে ঐরকম আন্দোলন না হলে পরবর্তীতে কোর রায়েই ফাঁসির আদেশ হত না।
তাহলে ফাঁসির মুল কারণ কি '৭১ এর অপরাধ, নাকি রাজনীতি??
আর একভাবে চিন্তা করা যাক। এরা যদি '৭১ এ সত্যিই অপরাধ করত, তাহলে তাদের মনে নিশ্চয়ই অপরাধবোধ থাকত। এবং স্বাস্তি থেকে বাঁচার জন্য অনেক পথইতো খোলা ছিল -
- ১. দেশে না থাকলেই পারত। অনেকে পাকিস্তান থেকে দেশে ফেরে নাই, অনেকে লন্ডন আমেরিকায় চলে গেছে। এরাও চেস্টা করলে বিদেশে থাকতে পারত।
-২. দেশে ফিরলেও রাজনীতি না করতে পারত। বহু রাজাকার, স্বাধীনতা বিরোধী রাজনীতি থেকে দুরে আছে।
-৩. রাজনীতি করলেও জামাত বা আওয়ামী বিরোধী রাজনীতি নাও করতে পারত। বহু রাজাকার 'জয় বাংলা' শ্লোগান দিয়ে আওয়ামী লীগে ঢুকে গেছে।
-৪. জামাত করলেও প্রকাশ্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে নাও আসতে পারত। প্রশিক্ষক, পরামর্শক বা পর্দার আড়ালের নেতা হিসেবে থেকে যেতে পারত।
-৫. কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আসলেও আওয়ামী লীগের সাথে আপস করে চলতে পারতেন। অন্তত '৯৬ মত একলা চলার নীতিও ধরে রাখতে পারতেন।
-৬. মামলা হওয়ার আগে বা পরে পালিয়ে যেতে পারত - যেমন আবুল কালাম আজাদ পালিয়ে গেছে।
-৭. এমনকি রায় হওয়ার পর অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে পারত বা রাস্ট্রপতির কাছে প্রান ভিক্ষার আবেদন করতে পারত ( যদিও সেটা কখনই গৃহীত হত না )।
কিন্তু এরাতো কিছুই করল না - বাঁচার এত পথ থাকতেও এরা কেন ফাঁসির দিকেই এগিয়ে গেল? কোন সে শক্তি যা এদের এইরকম মানসিক দৃঢ়তা দিয়েছে?? এদের মধ্যে অপরাধীসুলভ কোন মানসিক দুর্বলতা কে নাই?
বর্তমানে আমরা জাতিগত ভাবে একটা ভয়ানক ক্রান্তি কাল অতিক্রম করছি - ইতিহাসে এই সময়টা কিভাবে চিন্হিত হবে জানি না, তবে সেটা যে আবেগের দ্বারা হবে না তা নিশ্চিত। তাই আবেগটাকে নিয়ন্ত্রনে রেখে ঠান্ডা মাথায় চিন্তা ও আলোচনা করার অনুরোধ রইল।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


