ইলামিত্র
নামঃ যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ওরফে বাঘা যতিন।
(ব্যক্তিগত ভাবে জনদরদি, দক্ষ্য সংগঠক, দেশপ্রেমীক, মেধাবী, সাহসী, ডানপিটে ছিলেন। ছিলেন ভালো অভিনেতাও)
নামকরণঃ একাকি পথে বাঘের কবলে পড়লে, মল্লোযুদ্ধ করে বাঘ হত্যা করে। অতপরঃ নাম হয় বাঘা যতিন। অাসলে নামের সাথে বাস্তবতারও বিশাল মিল। ব্যক্তি জীবনে যতীন্দ্র নাথ ছিলেন বিশাল সাহসী।
বাবাঃ উমেশচন্দ্র মুখোপাধ্যয়।
মাঃ শরৎশশী দেবী। (একাধারে একজন কবি, উন্নয়ন কর্মী, সমাজ সেবক ও সাংস্কৃতিক কর্মী ছিলেন। ব্যক্তিগত ভাবে পরোপকারী,সাহসী ও প্রতিবাদী ছিলেন।)
বোনঃ একমাত্র দিদি বিনোদবালা।
জন্ম ও জন্মস্থানঃ ১৮৭৯ সালের ৭ ডিসেম্বর বৃহত্তর যশোর জেলার ঝিনাইদহ মহাকুমার(বর্তমান ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ডু থানার) রিশখালী গ্রামে। বসত ভিটা ছিলো নবগঙ্গা নদীর কুল ঘেসে।
শিক্ষাঃ ১৮৯৫/১৮৯৮ সালে এন্ট্রান্স পাশ করেন। এরপর কলেজে ভর্তি হলেও অার পড়া হয়ে উঠেনি। যোগদেন স্বাধীনতা অান্দোলনে।বিপ্লবী সংগঠনে।
কর্মজীবনঃ ১৮৯৯ সালে ফরিদপুরের ব্যারিস্টার কেনেডীর সেক্রেটারি হিসেবে যোগদেন। হাওড়া ষড়যন্ত্র মামলায় গ্রেফতার (১৯১০) হলে চাকুরি হারান। এবং পরে অার কোন ভালো চাকুরি পাননাই। অবশেষে ব্যবসা শুরু করেন।
রাজনৈতিক জীবনঃ ১৯০৩ সালে শ্রী অরবিন্দের সাথে পরিচিত হয়ে রাজনৈতিক জীবনে পদার্পণ করেন। ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ অান্দোলনে গুরুত্ত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
জাতীয়তাবাদীঃ যতীনদ্রনাথ ছিলেন জাতীয়তাবাদের মূর্তপ্রতীক। তাইতো জাতীয় জীবনের সকল অপমানকে নিজের অপমান মনে করতেন। এজন্য তার সমগ্র সত্তা ব্যাকুল হয়ে উঠেছিলো দেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য।
গ্রেফতারঃ ১৯১০ সালে হাওড়া ষড়যন্ত্র মামলায় গ্রেফতার হন এবং একবছর পর ১৯১১ সালে জামিনে মিক্তি লাভ করেন।
ঠিকাদারিঃ পুলিশের চেখকে ফাঁকি দিয়ে যশোর ঝিনাইদহ রেল পথের ঠিকাদারি ব্যবসা শুরু করেন।
বিবাহঃ মা-এর দেখা নির্ধারিত ইন্দু বালা দেবীকে বিবাহ করেন।
সন্তানঃ বাঘাযতিন ৪ সন্তানের জনক ছিলে।তারা হচ্ছেনঃ অতীন্দ্র, অাশালতা,তেজেন্দ্র এবং বীরেন্দ।
বসবাসঃ ৫ বছর বয়সে বাবার মৃত্যুর পর মাতুলালয় কবর্তমান #কুষ্টিয়া জেলার কয়া গ্রামে গমন করেন। প্রাথমিক শিক্ষার হাতে খড়ি সেখানেই হয়। তবে পরবর্তীকালে তিনি অাত্মগোপনে চলে যান।
ধর্মীয় জীবনঃ তিনি নিয়মিত ভগবাদ্ গীতা পাঠ করতেন। এবং ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতেন।
প্রিয় খেলাঃ ফুটবল। তিনি ভালো ফুটবল খেলতেন।
সামাজিক অবদানঃ যতীনের উদ্যোগে তার বন্ধুবর অমরেন্দ্র চট্রাপাধ্যায় নদীয়াতে হস্ত নির্মিত তাঁত বয়নে ছটি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন। কয়েক একর জমি ইজারা নিয়ে শশীদার সাহায্যে গোসাবায় যুব সমবায় ও জমিদারি সমাজের নামে পলিটেকনিক, কুটিরশিল্পো, হোমিওপ্যাথি ও অায়ুর্বেদ দাতব্য চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
মৃত্যুঃ ১৯১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর মুখমুখি সংঘর্ষে অাহত হন এবং ১০ সেপ্টেম্বর বালেশ্বর সরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
হাসপাতালে রক্ত বমির মধ্যে হাসতে হাসতে বলেছিলেনঃ
এতো রক্ত ছিলো শরীরে?
ভাগ্য ক্রমে, প্রতিটি বিন্দু অর্পন করে গেলাম দেশমাতার চরণে।
বাঘা যতিনের কয়েকটি ছবিঃ
তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট
ছবিঃ ইন্টারনেট।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:২২