somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সামিউল ইসলাম বাবু
অপরিকল্পিতভাবে যেমন সুন্দর বাগান তৈরী সম্ভব নয়,nতেমনি অপরিকল্পিত শিক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে একটা সুন্দর জাতী তৈরী সম্ভব নয়।nআগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায়- কর্মমুখী,নৈতিকতা সমৃদ্ধ ও যুগোপযোগী শিক্ষা চাই,nবর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় জাতির বোঝা তৈরী হয়, সম্পদ নয়।n

মীরজাফর অালী খানঃ স্বাধীনতা বিক্রয়ের গল্পো

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ ভোর ৬:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
বাংলাদেশ ও তুলোনামুলক প্রতিবেশি দেশ
ইতিহাসের পাতায় স্বাধীন বাংলা
অাসুন সুন্দর দেশ গড়ি
স্বাধীনতা(কবিতা)





বিশ্বাস ঘাতক যুহে যুগে একই রকম হয়ে থাকে।
(অামরা কাওকে অপমান করা বা গালি দিতে মীরজাফর নাম অামরা ব্যবহার করে থাকি)।মীরজাফরের ক্ষমতা লিপ্সা এবং কুট বুদ্ধির কারণে বাংলাদেশ তথা তখনকার মুৃঘল সম্রাজ্য প্রায় ২০০বছর পরাধীনতার শিকলে বন্ধি হয়ে যায়। এমনকি এখন পর্যন্ত অামরা ব্রিটিশ সরকারের নিকট বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ নিয়ে থাকি। অাইন প্রণয়ণের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ অাইন অনুষরণ করে থাকি। যাহোক, যে মীরজাফর শুধুমাত্র নিজে ক্ষমতা লাভের জন্য নিজ দেশকে বিকিয়ে দিতে কুন্ঠা বোধ করেনি।অাসুন এই বিজয়ের মাসে একজন বিস্বাস ঘাতক সম্পর্কে কিছু কথা অালোচনা করি। কারণ স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা অনেক কঠিন।

মীরফর আলী খান (মৃত্যু ১৭৬৫) বাংলার নওয়াব। (নবাব সিরাজুদ্দৌলা ছিলেন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব) ।

তিনি ছিলেন আরব বংশোদ্ভূত এবং সৈয়দ আহমদ নাজাফীর পুত্র। নবাব অালীবর্দী খানের মতোই তিনি একজন ভাগ্যান্বেষী হিসেবে ভারতে আসেন। আলীবর্দী খান তাঁর বৈপিত্রেয় বোন শাহ খানমকে জাফর আলীর সাথে বিয়ে দিয়ে তাকে বখশী (নওয়াবের পরবর্তী পদমর্যাদা) পদে উন্নীত করেন।

১৭৪১ খ্রিস্টাব্দে কটকের নিকটে শত্রু কবলিত শওকত জংকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করে এবং ১৭৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ডিসেম্বর মারাঠা বাহিনীকে পরাজিত করে জাফর আলী কিছুটা সাহসিকতার প্রমাণ দিলেও ১৭৪৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভোঁসলের নেতৃত্বে মারাঠা বাহিনীর অগ্রযাত্রার খবর পেয়ে তিনি মেদিনীপুর ছেড়ে বর্ধমানে পালিয়ে আসেন। কিছুদিনের মধ্যে তিনি রাজমহলের ফৌজদার আতাউল্যার যোগসাজসে আলীবর্দীকে ক্ষমতাচ্যূত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। কিন্তু ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে গেলে তাকে বখশী পদ থেকে অপসারণ করা হয়।

প্রধানত মীরজাফরের কূটবুদ্ধির এবং উচ্চাভিলাষী কর্মকান্ডের ফলেই নওয়াব সিরাজউদ্দৌলার সেনাবাহিনী পরস্পর বিরোধী বিভিন্ন উপদলে বিভক্ত হয়। আলীবর্দীর মৃত্যুর পর মীরজাফর পুর্নিয়ার শওকত জংকে বাংলা আক্রমণ করতে উৎসাহিত করেন। অন্যান্য কুচক্রীদের সাথে মিলিত হয়ে মীরজাফর শওকত জংকে উক্ত কাজে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি নবাব সিরাজউদ্দৌলাকেও ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন এবং দিল্লির সম্রাটের নিকট থেকে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার সুবাহদারির ফরমান সংগ্রহের গোপন চেষ্টার প্রয়াস পান। কিন্তু ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে গেলে সিরাজ মীরজাফরকে বখশীর পদ থেকে অপসারণ করে মীরমদনকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করেন।

ইংরেজরা যখন স্বাধীনচেতা নওয়াব সিরাজউদ্দৌলাকে অপসারণ করে একজন ক্রীড়নককে বাংলার মসনদে বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়, তখন কলকাতায় এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল যে, ধনকুবের জগৎ শেঠ ভ্রাতৃদ্বয় এবং প্রাক্তন দীউয়ান রায়দুর্লভের সাথে সিরাজউদ্দৌলাকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্রে মীরজাফরও জড়িত ছিলেন। ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিলের শেষে ইংরেজরা সিরাজের উৎখাতের জন্য মীরজাফরের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস লাভ করে। ওই বছর ১ মে কলকাতা কাউন্সিল শর্ত সাপেক্ষে মীরজাফরকে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার মসনদে বসানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক গোপন চুক্তি সম্পাদনে সম্মত হয়। কাসিমবাজার ফ্যাক্টরির প্রধান উইলিয়ম ওয়াটস ষড়যন্ত্র পাকাপাকি করেন। ৫ জুন তিনি গোপনে মীরজাফরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ওই চুক্তিতে স্বাক্ষর নেন এবং তার আনুগত্যের স্বীকৃতি লাভ করেন।


মীরজাফর আলী খান
১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ জুন সংঘটিত পলাশীর যুদ্ধে নওয়াবের সেনাবাহিনীতে বিশ্বাসঘাতকতার লক্ষণ পরিস্ফুট হয়। নওয়াবের বিশ্বস্ত সেনাপতি মীরমদন যুদ্ধে নিহত হওয়ার পর সিরাজউদ্দৌলা মীরজাফরকে তাঁর তাঁবুতে ডেকে আনেন এবং তার আনুগত্য কামনা করেন। মীরজাফর শপথ করেন যে, তিনি ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে তৎপর হবেন, তবে নওয়াবকে সেদিনের যুদ্ধ বন্ধ ঘোষণা করে সেনাবাহিনীকে শিবিরে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিতে হবে, যাতে পরের দিন মীরজাফরের সেনাপতিত্বে তারা নতুন উদ্যমে আবার যুদ্ধ শুরু করতে পারে। কিন্তু নওয়াবের ক্যাম্প থেকে নিজ সৈন্যদের মাঝে ফিরে এসেই তিনি লর্ড ক্লাইভকে নওয়াবের অসহায়ত্বের খবর পৌঁছে দেন এবং তৎক্ষণাৎ নওয়াব বাহিনী ও তাঁর ক্যাম্প ঘেরাও করে ফেলার পরামর্শ দেন। ফলাফলে নওয়াব বাহিনীর শোচনীয় পরাজয় হয় এবং নওয়াব নিজেও তাঁর তাঁবু ছেড়ে যেতে বাধ্য হন। কিন্তু শীঘ্রই তিনি বন্দি হন। বন্দিদশায় সিরাজউদ্দৌলাকে মীরজাফরের পুত্র মিরনের নির্দেশে মোহাম্মদী বেগ নির্মমভাবে হত্যা করে।

২৯ জুন ক্লাইভ সিরাজউদ্দৌলার প্রাসাদ হীরাঝিলে মীরজাফরের সঙ্গে মিলিত হন। দেশীয় রাজন্যবর্গ ও সভাসদদের উপস্থিতিতে তিনি মীরজাফরের মসনদে বসান এবং অনুরূপভাবে সভাসদরাও তার প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেন।

মীরজাফরকে বাংলার মসনদে বসানোর পুরস্কারস্বরূপ ইংরেজরা তার নিকট থেকে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যায় বিনাশুল্কে বাণিজ্য করার অনুমতি লাভ করে। সিরাজউদ্দৌলার কলকাতা আক্রমণের ক্ষতিপূরণ বাবদ মীরজাফর কোম্পানিকে আরও এক কোটি সাতাত্তর লক্ষ টাকা প্রদান করতে বাধ্য হন। উপঢৌকন হিসেবে কোম্পানির কর্মকর্তাদের অর্থ প্রদান করতে হয়। তাছাড়াও কোম্পানির কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নওয়াবকে কোন শুল্ক প্রদান করতে হতো না। পুতুল নওয়াব মীরজাফরকে ব্যবহার করে ইংরেজ কোম্পানি ও কর্মকর্তাগণ এভাবে বাংলার ধনসম্পদ লুণ্ঠন করতে থাকে।

মীরজাফর যখন বুঝতে পারলেন যে, ইংরেজদের ক্রমবর্ধমান লোভলালসার দাবি পূরণ করা তার পক্ষে আর সম্ভব নয়, তখনই ইংরেজরা প্রচার শুরু করেন যে, মীরজাফর তার প্রতিশ্রুতি পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। ১৭৬০ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসে ইংরেজরা তাঁকে স্বীয় জামাতা মীরকাসিমের অনুকূলে নওয়াবী ছেড়ে দিতে বাধ্য করে। কিন্তু তাতেও সমস্যার সমাধান হয়নি। মীরকাসিম নিজেকে স্বাধীন নওয়াব হিসেবে ভাবতেন, আর ইংরেজরা চাইতেন নতুন নওয়াব যেন তাদের ক্রীড়নক হয়ে থাকে। এর পরিণতিস্বরূপ মীরকাসিমের সাথে ইংরেজদের সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে ওঠে। ১৭৬৩ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজরা মীরকাসিমকে সরিয়ে মীরজাফরকে পুনরায় মসনদে বসায় এবং তাঁর কাছ থেকে অর্থ আদায় করে। ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে মীরজাফরের মৃত্যুর সঙ্গে তাঁর নওয়াবীর অবসান ঘটে।



তথ্য সূত্রঃ উইকিপিডিয়া।
ছবিঃ গুগোল
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ ভোর ৬:৪৭
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×