একটি পথশিশু, শুয়ে আছে ক্যাম্পাসের ফুটপাথে। পাশেই ওর মা ফুলের মালা তৈরি করতে ব্যস্ত। ছেলেটি রাস্তার পাশে হাজারো কোলাহলের মাঝেই দিব্যি ঘুম দিচ্ছে। মাথার নিচে বালিশের কাজ করছে নিজের ছোট্ট হাতটি। আমি তো টানা ৫ মিনিট হাতের ওপর মাথা রেখে শুতে গেলেই হাত ব্যাথা করে, ঝিরঝির করে। ও কিভাবে পারে?
এইসব না খেয়ে না পড়ে থাকা পথশিশুগুলি দিনে-রাতে আমাদের সামনে এসে যখন হাত পেতে দাঁড়ায়, কিংবা জামা-কাপড় ধরে টানাটানি করে, কারোরই নিশ্চয়ই ভালো লাগে না। ভালো লাগে না ওদের ফিরিয়ে দিতেও। কিন্তু, বাস্তবতা হল, এরাই একদিন খিদের জ্বালা সইতে না পেরে মাস্তান হয়, ছিনিতাইকারি হয়। এরাই একসময় সমাজের বোঝা থেকে শত্রু হয়ে দাঁড়ায়। এদের এই পরিণতির জন্য আমরা নিজেরাও দায়ী। আমরা ওদেরকে মানুষ করতে পারিনি।
আজ ৮ নং বাসে চড়ে মতিঝিল থেকে শাহবাগ ফিরছিলাম। পল্টন মোরে ৯ টার দিকেও কিছুটা ভিড়। বাস থেমে আছে। জানালার পাশে ফোনে কথা বলছিল একটা ছেলে। হঠাৎ বাইরে থেকে ওর মোবাইলটা হাতের থেকে খপ করে কেড়ে নিয়ে গেল একটা পিচ্চি ছেলে। গায়ে জামা নেই, ময়লা আর ময়লা। আমি দেখে ধমক দিলাম। বাস তখন চলতে শুরু করেছে। যার মোবাইল নিল, ঘটনার আকস্মিকতায় সে কিছুই বুঝে উঠতে না পেরে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেছে। আমি বললাম, "বসে বসে দেখছেন কি? যান, নেমে দৌড়ান!" সম্বিৎ ফিরে পেয়ে সে নেমে দৌড়াল বটে, কিন্তু ততক্ষণে চোর বাবাজি পগাড় পার!
দেশটা আসলে কোনদিকে যাচ্ছে বলতে পারেন?
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১:৫৬