একজন লোক পানিতে পড়ে গেছেন। তিনি সাঁতার জানেন না। সাঁতরে তীরে উঠে এসে বাঁচার আশা নেই তাই। মাঝ নদীতে হাবুডুবু খাচ্ছেন, বাঁচানোর কেউও নেই।জীবন আর মৃত্যুর মাঝখানে দাঁড়িয়ে তিনি।
এমন সময় সেখানে এসে উপস্থিত হলো একটি নৌকা। নৌকার মাঝি সেই ডুবন্ত লোকটিকে জিজ্ঞেস করলো, 'তুমি কি আমার সাহায্য চাও?' লোকটি স্রেফ জানিয়ে দিলো, 'না, ধন্যবাদ। স্রষ্ঠা অবশ্যই আমাকে বাঁচাবেন।' উত্তর শুনে নৌকাটি চলে গেলো।
একটু পর আরেকটা নৌকা এলো এবং সেই নৌকার মাঝিও জানতে চাইলো তার কোনো ধরণের সাহায্য লাগবে কিনা। আগের মতো এবারও স্রষ্ঠার প্রতি অবিচল আস্থা রেখে লোকটি জানিয়ে দিলো, 'না, ধন্যবাদ। স্রষ্ঠা নিশ্চয়ই আমাকে রক্ষা করবেন।' সেই নৌকাটিও তাই চলে গেলো।
একটু পর, লোকটি সেই নদীর পানিতে ডুবেই মরলো এবং স্বর্গে/জান্নাতে/হেভেনে চলে গেলো। স্রষ্ঠার সামনে গিয়ে কান্না ও ক্ষোভমিশ্রিত কন্ঠে সে বললো, 'ঈশ্বর/আল্লাহ/গড, আমি তোমার একজন একনিষ্ঠ ভক্ত, এটা তুমি জানো। তোমার আরাধনায় কতো সময় ব্যায় করেছি আমি।আজ আমি এভাবে ডুবে মরলাম, কিন্তু তুমি আমাকে রক্ষা করলে না কেনো?'
ঈশ্বর শুনে হাসলেন। বললেন, 'আরে বোকা, আমিতো তোকে বাঁচাতেই দুই-দুইটা বিশাল নৌকা পাঠালাম!'
কী বুঝলেন এই গল্পটি থেকে? স্রষ্ঠায় বিশ্বাস রেখে তাঁর ওপর সব ছেড়ে দিয়ে বসে থাকলে হবে না, কাজ করে যেতে হবে। নিজের ভাগ্যকে বদলাতে নিজেকেই পরিশ্রম করতে হবে। ঈশ্বর শুধু আপনার কাজে সন্তুষ্ট হলে আপনার চলার পথটাকে একটু সহজ করে দিতে পারেন। কিন্তু তাই বলে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না। ইশ্বর আপনাকে তখনই টেনে তুলবেন, যখন আপনি উপরে ওঠার জন্য আগ্রহ দেখাবেন, হাত উপরে তুলবেন। কাজেই, অন্ধ অকেজো ভক্ত না হয়ে, কাজের কাজী ভক্ত হোন।
-দেব দুলাল গুহ।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:৫৮