যাকে নিয়ে তারকাদের এতো মায়াকান্না, তিনি নিশ্চয়ই মোটেও শিশুটি নন। তিনি কি জানতেন না, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো অনুচিত? হয়তো এই দেশে মদ্যপ হয়ে গাড়ি চালানো এবং সাধারণ দুই-চারজনকে অন্ধকারে চাপা দিয়ে গেলেও তারকাখ্যাতি বা ক্ষমতার জোরে পার পেয়ে যাওয়া যায় বলেই তিনি জেনে-বুঝে হয়তো অনেকবার এমন সাহস দেখিয়েছেন।
যাকে এই মামলায় পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে এবং যিনি 'তার গাড়িতে আঘাত পেয়ে' (সেটা বিচারাধীন) গুরুত্বর আহত হয়ে আইসিইউতে আছেন, দুজনকেই আমি ব্যাক্তিগতভাবে চিনি। চিনি পেশাগত কারণেই। প্রথমজন আজকের মাতাল নন। সেলিব্রেটি হওয়ার আগে জগন্নাথ হলের সাউথের একটি রুমে হলের কিছু পলিটিক্যাল আদু ভাইয়ের সঙ্গে মদের পার্টিতে নিয়মিত অংশ নিতে চলে আসতেন তিনিও, হলের ছাত্র না হয়েও। তাদেরই একজন যখন আমার রুমমেট ছিলেন, তখন তাঁর নাটক দেখলে খুব গর্বের সঙ্গে এই স্মৃতিচারণ করতেন!
আমি মদ খাইনা, তার মানে এই নয় যে অন্য কেউ খেলে আমি বাধা দেবো। আমি বাধা দেবো তখন, যখন দেখবো সে মদ খেয়ে এমন কিছু করে ফেলছে যা তার করা উচিৎ নয় এবং অন্য কারো জন্য ক্ষতির কারণ। কথা হলো, তিনি যদি নির্দোষই হবেন, তবে তিনি কেন হাসপাতালে গিয়ে নিজেই দোষ স্বীকার করে নিলেন? একমাত্র বেশি মাতাল অবস্থাতেই কি মানুষ ভেতরের সব কথা গড়গড় করে বলে ফেলে না? আমি সেখানে তখন ছিলাম না। যদি সত্যিই সবার সামনে স্বীকার করে থাকেন, তবে তাঁর শাস্তি কম হতে পারে, কিন্তু শাস্তি হওয়া বাধ্যতামূলক। সেটা আদালতের ওপরই ছেড়ে দেই। কিন্তু এরপরেও কিছু অনলাইন পত্রিকায় নতুন নতুন গল্প ফেঁদে ঘটনাটিকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা দেখতে ভালো লাগছে না।
আসুন, সর্বক্ষেত্রে মাতাল ড্রাইভারকে গাড়ি চালানো থেকে বিরত রাখি। রাস্তার ট্রাফিক পুলিশকে দায়িত্ব দেয়া হোক মদ্যপ ড্রাইভার সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার। আর যেহেতু এই বিষয়টি এখন আদালতের বিচারাধীন, সেহেতু আশা করবো আসামী দোষী হলে উপযুক্ত শাস্তি পাবে। আর যিনি আইসিইউতে, যার অপেক্ষায় তাঁর দুই সন্তান ও সহধর্মিনী, সহকর্মী, আপনজন, তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসুন।