somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে কারণে রাত জেগে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন দেখবেন

১১ ই মে, ২০১৮ রাত ১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



প্লিজ, এখনই কেউ ঘুমাবেন না। আরেকটু জেগে থাকুন। ৩টার দিকে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে তারপর ঘুমান। এমনিতেও কাল শুক্রবার।
.
বুঝতেই পারছেন, আমি আজ খুবই এক্সাইটেড। আমি মনে করি আজ প্রত্যেক বাংলাদেশীর জন্য আনন্দের দিন, উত্তেজনা নিয়ে ইতিহাসের সাক্ষী হওয়ার জন্য অপেক্ষা করার দিন। উন্নয়নশীল দেশ হয়েও বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে আমরাও একটি স্যাটেলাইটের গর্বিত মালিক হতে চলেছি। এটা সম্মানের, এটা আনন্দের। আমাদের এই যোগাযোগ স্যাটেলাইটটির নাম জাতির জনকের নামে, 'বঙ্গবন্ধু-১'।
.
আজ রাতে যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে স্পেসএক্স কোম্পানির রকেটের মাধ্যমে মহাকাশে পাঠানো হবে এই স্যাটেলাইটকে। এই কাজের জন্য ২ ঘন্টা সময় বরাদ্দ পেয়েছে স্পেসএক্স। এর মধ্যে নাহলে আবার পরে চেষ্টা করবে। তবে আবহাওয়া আমাদের অনুকূলে এখনও। সরাসরি দেখা যাবে বিটিভিতে, দেখা যাবে কোম্পানিটির ইউটিউব চ্যানেলে, এমনকি ফেসবুকেও। ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। দেখবে গোটা বিশ্ব। কারণ, শুধু বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট পাঠানো হচ্ছে যে বিষয়টা এমন সাধারণ নয়। ২০১০ সাল থেকে যাত্রা শুরু করা বিখ্যাত উদ্যোক্তা এলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের এই ফ্যালকন-৯ রকেটটি এই কোম্পানির তৈরি সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট। ওদের ভাষ্যমতে, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মিশনটাই হবে ফ্যালকন-৯ ব্লক-৫ রকেটকে প্রথম কাজে লাগানোর মিশন, যা কিনা সবচেয়ে ক্ষমতাধর, সবচেয়ে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য এবং খুব সম্ভবত স্পেসএক্সের ওয়ার্কহর্স অরবিটাল লঞ্চার(কক্ষপথ উৎক্ষেপক) এর সর্বশেষ ভার্সন।
.
২০১০ এর জুনে যাত্রা শুরু করে স্পেসএক্স এতোদিনে তার রকেটগুলোকে করেছে আরও বেশি উঁচু হালকা এবং উন্নত প্রযুক্তির। যে রকেটটির সাহায্যে বঙ্গবন্ধু-১ কে তার নির্দিষ্ট কক্ষপথে পাঠানো হবে, সেটি যাত্রা শুরুর প্রায় ৩৩মিনিট পরে বঙ্গবন্ধু-১ কে পৃথিবী থেকে প্রায় ২২ হাজার ২৩০ মাইল উপরে পাঠিয়ে আবার পৃথিবীতে ফিরে আসবে এবং একে আবারও ব্যবহার করা যাবে। অন্য রকেটগুলোর মতো এটি মহাসাগরে হারিয়ে যাবে না। রকেটের ৭০ শতাংশ খরচই হয়েছে এর ১৬ তলা উচ্চতার 'বুস্টার' অংশ বানাতে, যা রকেটকে উপরের দিকে ঠেলে দেবে। এটি বঙ্গবন্ধু-১ কে তুলে দিয়ে এসে কিছুক্ষণ পরেই আবার নামবে আটলান্টিক মহাসাগরের 'অবশ্যই আমি এখনও তোমাকে ভালোবাসি'(কোনো এক রোমিও বানিয়েছে নিশ্চয়ই!) নামের একটি ড্রোনশিপে! স্পেসএক্সের ৬ হাজার কর্মী এক হয়ে এই রকেটটিতে তাদের সকল প্রচেষ্টা ঢেলে দিচ্ছে, তাই এটাই এই রকেটের সর্বশেষ সংস্করণ হবে বলে বলা হচ্ছে। জেনে রাখুন, এই রকেটে করেই মঙ্গল গ্রহে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন মাস্ক!
.
ওদিকে, আমাদের স্যাটেলাইটটি বানিয়েছে যে প্রতিষ্ঠান, তার নাম থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস। এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বাংলাদেশের অধিবাসীরা অনেক বৃহৎ মাত্রায় সম্প্রচার ও যোগাযোগ কার্যক্রম চালাতে পারবে বলে তাদের আশা। শুধু দেশের ১৬কোটি নয়, এই স্যাটেলাইট পার্শ্ববর্তী দেশ নেপাল ভুটান মায়ানমারকেও ফোন রেডিও টিভি আর ইন্টারনেটের কাজে এই স্যাটেলাইট ভাড়া দিয়ে উপার্জন করতে পারবে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা। কাজেই, অনেক খরচ হলেও আমাদের লাভ হবে আরও অনেক বেশি। আমরা যুদ্ধাপরাধের বিচার দেখেছি, পদ্মা সেতু হতে দেখছি, সাবমেরিনের মালিক হয়েছি, সমুদ্রসীমা জয় করেছি, এবার আসুন আমরা আরেকটি ইতিহাসের অংশ হই। জয় বাংলা।
.
সারা বিশ্ব দেখে যাও,
মহাকাশে আমরাও ♥
.
[শেয়ার করবেন]

দেব দুলাল গুহ


সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মে, ২০১৮ রাত ১:৫৩
৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×