ফেইসবুক নিয়ে ১৮ তারিখ থেকে যা শুরু হইসে, মনে হয়, এর আগে অন্যকোন সাইট বন্ধ হওয়া নিয়ে এতোকিছু হয়নাই। সরকারের নীতি নির্ধারক পদে যারা আছেন, তাদের মাথায় গোবর ছাড়া কিছু আছে কিনা জানিনা আমি।
বেশ কয়েকবছর আগের কথা, সরকার ব্ল্যাকবেরী ফোন ব্যবহার করা বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল কারন সেইটা নাকি এনক্রিপটেড একটা সার্ভিস।আর এখন বন্ধ করেছে ফেইসবুক, ভাইবার ইত্যাদি সার্ভিস, যা মানুষের জন্য উপকারই করে আসছিলো।
সিম্পল কথা, সরকারি ভাবে নাহয় এইসব সেবা বন্ধ, কিন্তু আসলেই কতটা বন্ধ? আমি তো পরিচিত-অপরিচিত সবাইকেই দেখছি ফেইসবুকে আছে, ভাইবারে কথা বলছে। আর পরিচিত অনেককেই দেখেছি ভাইবারের বদলে আরও এনক্রিপটেড একটা মেসেজিং সার্ভিস ব্যবহার করতে। লাভ কি হলো তাহলে? কোন মানুষ অপরাধ করতে চাইলে সাধারণ পথে যাবেনা। দুই কদম ঘুরে তার জন্য নিরাপদ পথ বের করেই নিবে। আর এন্ড্রয়েড বা আইফোনের জন্য এমন হাজারো অ্যাপ আছে, যেটা সবাই হয়তো জানেই না। অপরাধীরা চাইলে সেইসব ব্যবহার করবে, আমজনতা যা করছে, সেইটা করবেই না কখনো।
এই সহজ কথাটা যতদিনে সরকার বুঝবে ততই মঙ্গল।
ক্ষতি হয়ত আমাদের হচ্ছেনা, কিন্তু যাদের হচ্ছে, তাদের অনেকের পরিবারের কোন কোন সদস্য দেশের বাইরে থেকে হাজার হাজার টাকা রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন, কোন কোন ছোট ফেইসবুক ভিত্তিক ব্যাবসার বিক্রি কমে গেছে, যেসব সাইটে ফেইসবুক দিয়ে রেজিস্টার করা ঝামেলা এড়াতে সেইসব সাইটে ঢুকা যাচ্ছেনা। এইসব ভাবা উচিত সরকারে।
কেউ এইটাও বলতে পারে যে, ফেইসবুক কি সব নাকি? বা ভাইবার নাহলে অন্যকিছু ব্যবহার করে কথা বলবে। ধরলাম ফেইসবুক বন্ধ হওয়াতে কিছু অপরাধ কমে গেলো, কিন্তু এর উপকারিতা কত ছিলো তারা কি জানেন? রক্ত খোজা থেকে শুরু করে এলাকাভিত্তিক ছোট ছোট পজিটিভ মুভমেন্ট চলে ফেইসবুকে। রাস্তার অবস্থা জানতেও ফেইসবুকের পেইজ ব্যবহার করে অনেকেই। মজা লস টাইপের অনেক কিছু আছে, যারা বিভিন্ন অপরাধী ধরতে পুলিশকে হেল্প করেছে। কতশত সামাজিক উন্নয়নের কাজ শুরু হয় ফেইসবুক থেকেই। ব্যাবসার প্রচার বা প্রসারের জন্য ওয়েবসাইটের আগে ফেইসবুক ব্যবহার করে সবাই। এইটুকু সরকারের বুঝা উচিত। আর এর মাধ্যমে কি ঘুষ নেয়া, পুলিশের অহেতুক ঝামেলা করা, যানজট কমেছে নাকি যানজটের খবর দিতে পারে সরকারি কোন প্রতিষ্ঠান? আর যেই মানুষটাকে ভাইবারে কল দিতে হলে অন্য কারো সাহায্য নিতে হয় সে কি পারবে অন্য রাস্তা খুজে নিতে?
এমনিতেই দেশে মন খুলে আওয়ামী লিগের দোষ বলা যায়না। তার উপরে এইভাবে চলতে থাকলে আওয়ামী লিগের বোকামিই প্রকাশ পাবে, আর কিছুই না। আওয়ামী লিগের বিন্দুমাত্র ধারনা নাই, একমাত্র ভাইবারে কথা বলার কত ডলার বেচে যাচ্ছে।
জনগণকে উলটাপালটা বুঝায়ে রাখতে পারা এখনকার দিনে এত্তো সহজ না। ভিপিএন এর ব্যবহারকারীকে বাংলাদেশের দুর্বল আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তো ধরা দূরে থাক, জানতেও পারবেনা কে কোথায় বসে ব্যবহার করছে। খোদ আমেরিকাই পারেনা এইটা।
আর একটা খবর না দিলেই না, এই বছর জানুয়ারী থেকে জুন মাস পর্যন্ত ফেইসবুকের কাছে বাংলাদেশ সরকার ৩ জনের তথ্য জানতে চেয়েছে এবং ফেইসবুক বাংলাদেশ সরকারকে কারো তথ্য দিতে অস্বীকার করেছে।
রেফারেন্সঃ Click This Link
আশা করি মিসেস(নাকি মিস) হালিম এইসব তার মগজ দিয়ে দ্রুত বিবেচনা করবেন।