somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে ম্যাচটি না জিতলে বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাস অন্যরকম হত

১৬ ই মার্চ, ২০১১ বিকাল ৩:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ড পরস্পরের বিপক্ষে খুব বেশি ম্যাচ না খেললে ও নেদারল্যান্ড বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হিসেবে অনেক কষ্টের কান্না আর আনন্দের কান্নার সাক্ষী হয়ে আছে।১৯৯৪ ও ১৯৯৭ সালে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখিমুখি হয়েছিল দল দুটি।যা বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


১৯৯৪ সালে নাইরোবিতে আইসিসি ট্রফিতে নেদারল্যান্ডের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ।মাত্র ২০৫ রানে নেদারল্যান্ডের ইনিংস গুটিয়ে যায়। বাংলাদেশের কোচ অমরনাথ খেলোয়াড়দের বললেন,কোন রিস্ক নয়।শুধু ক্রিজে টিকে থাক তাহলেই জিতে যাবা সহজে।বাংলাদেরশের খেলোয়াড়রা এত গুরুত্ব দিয়েছিল সেই কথাটিকে যে প্রথম ১৪ ওভারে মাত্র ১২ রান সংগ্রহ করে।শেষ পর্যন্ত সেই ম্যাচে ৪৭ রানে পরাজয় বরণ করতে হয়।১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন সফল আর হয় না।

তিন বছর পর কুয়ালালামপুরে আবার প্রতিপক্ষ সেই নেদারল্যান্ড।প্রুপ পর্যায়ের শেষ ম্যাচ।যেখানে লুকিয়ে ছিল বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন।প্রথম তিন দল বিশ্বকাপ খেলতে পারবে যা আগে থেকেই ঠিক ছিল।

খেলা শুরু হলে মাত্র ১৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে বিপদের মুখে বাংলাদেশ।ম্যাচটি পরিত্যাক্ত হলে এক পয়েন্ট নিয়ে সেফিফাইনালে যাবে জেনে আকরাম খান আর মিনহাজুল আবেদিন নান্নু খেলার ভিতর সময় নষ্ট করতে থাকেন নানা ভাবে কারণ যে কোন মুহূর্তে বৃষ্টির সম্ভাবনা ছিল উজ্জ্বল।টিভিতে ম্যাচ দেখাচ্ছিল না কিন্তু বেতার ধারাবিবরণী প্রচার করতেছিল।
বাংলাদেশের নানা প্রান্ত থেকে ধারাবিবরণী শোনা সবার একটাই কামনা তা হল বৃষ্টি।

একটা পর্যায়ে জানা যায় ম্যাচ জিততেই হবে তা না হলে রান রেটে পিছনে থেকে বিদায় নিতে হবে কেননা আয়ারল্যান্ড সাত পয়েন্ট নিয়ে রানরেটে এগিয়ে।বাংলাদেশের ছয় পয়েন্ট।নেদারল্যান্ড সাথে না জিততে পারলে আয়ারল্যান্ড সেমি তে যাবে।

তখন ডার্কঅয়ারথ লুইস মেথড অনেকটা নতুন।বৃষ্টি আসলে নিজেদের হিসেবে আকরাম খান আর নান্নু জেতার জন্য প্রয়োজনীয় রানের থেকে বেশি রান নিচ্ছিলেন।আবার বৃষ্টি শুরু হয়।বাংলাদেশ জিতে যাবে এখন যদি খেলা আর না হয় এমনটা ই ধারনা তখন।

তখনই ম্যাচ রেফারির কাছ থেকে জানা যায় হিসেবে গরমিলের কারণে আর খেলা না হলে বাংলাদেশ হেরে যাবে।রেডিও তে প্রচার করা হল তা।যে জনগণ এতক্ষণ বৃষ্টির অপেক্ষা করতেছিল তারাই এখন বৃষ্টি থামার জন্য দোয়া করা শুরু করে।


কোটি মানুষের আকাঙ্কা পূর্ণ হয়।বৃষ্টি থামে।আবার খেলা শুরু হল।আকরাম খান খেলেলেন অতিমানবীয় একটা ইনিংস।সাইফুল ইসলামের সাথে গড়লেন অসাধারণ একটি জুটি।আকরাম খান ম্যাচ জিতিয়ে ফিরলেন।শেষ পর্যন্ত থাকলেন ক্রিজে।

আকরাম খান সেদিন খেললেন এমন এক ইনিংস যার উপর বাংলাদেশের ক্রিকেট দাঁড়িয়ে।সেই ম্যাচে না জিতলে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার জন্য আরও অনেক অপেক্ষা করতে হত।
আতাহার আলী খান,সেই ম্যাচের ওপেনার ছিলেন।তার ভাষায় আমরা সেদিন ওয়াইল্ড সেলিব্রেশন করেছিলাম।
আকরাম খানের ভাষায়,আমরা কেঁদেছিলাম।মাঠের দর্শকরা কেঁদেছিল।দেশে থাকা হাজার হাজার মানুষ কেঁদেছিল।সবচেয়ে বেশি কেঁদেছিলেন Gordon Greenidge।

"Gordon Greenidge cried the most. Everybody was crying, he couldn't hold himself back."



তারপরের ইতিহাস জানা।১৯৯৭ এ আই সিসি ট্রফি জেতা।৯৯ এ বিশকাপে খেলা।পাকিস্তান কে হারান।২০০০ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া।বর্তমানে শক্তিশালী বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।আর বেশিদিন নেই যেদিন আমরা নিজেদের ঘরে বিশ্বকাপ ট্রফি তুলবো।

সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মার্চ, ২০১১ বিকাল ৩:১৭
৪৯টি মন্তব্য ৪৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×