somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শহরের দিনলিপি -৩

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা থেকে আমি যখন আমিতে ফিরে যাই
তখন আমি মুছে দিতে চাই সব, সবটা অতীত হয়ে যাওয়া মুহূর্ত।
অথচ আমি তে সবটা সময় জুড়ে থাকো তুমি, তোমরা, তোমাদের কথা,
যেখানে আমার অসহ্য নীরবতা ভাংচুর করে আমার ভেতর!
----------------------------------------------------------


মনে মনে এই আমিই যতটা অপরাধের নীল নকশা তৈরী করি,
প্রতিদিন ভেঙে ফেলি যতটা আইন,
যতটা নীচে নামতে থাকি পদস্খলিত আত্মাকে ধরে
তার কোন বিচার হয় না।
এইসব জিঘাংসার বিচার হলে পৃথিবীতে গারদ ছাড়া মানুষের কোন ঘর হতো না।
----------------------------------------------------------


আমি কখনো পাখি হতে চাইনি, অথচ একবার পাখি হয়েছিলাম স্বপ্নে।
কিংবা পাখি না অন্যকিছু।
যেখানে ভেসে গিয়েছিলাম একটা নদীর উপর দিয়ে,
একপাশে সবুজ ঘাসের মাঠ অন্যপাশে বন, যে বনের কথা ভুলে গেছে তাবৎ পৃথিবী…..
একবার, মাত্র একবার এ জীবন
খুব কম হয়ে যায়..
----------------------------------------------------------


নিজের গল্প টা সবসময় অপ্রকাশিত ই থেকে যায়।
আত্মজীবনী তে কাটাছেড়া, সেলাইয়ের দাগ; জীবনের মোড়কে মস্তিষ্কের তীব্র উপস্থিতি। আত্মজীবনী মানেই মেধা চিন্তাশক্তি স্বপ্ন আর আকাঙ্ক্ষা র গালগল্প।
----------------------------------------------------------


এই শেষ দুপুরেই পূর্ব আকাশে স্পষ্ট হয়ে উঠছে চাঁদের অবয়ব,
তার ছায়া-অবতল উপত্যকা, গিরিখাদ, আলো-উজ্জ্বল অস্থিশুভ্র মাটি।
যাকে নিয়ে এ দূর পৃথিবীতে রাত নামতেই ঝরে পড়ে সহস্র কবিতা।
সেই সব রাতে আজো আসে কবিতা পড়ার সময়।
তবু সময় মেলে না। কবিতার ঘর-বাড়ি দখল করে বসে থাকে শূন্যদীর্ঘশ্বাস।
----------------------------------------------------------


মাঝে মাঝে চার পাশ টা একদম চোখ খুলে দেখতে ইচ্ছা করে না। সব কিছু খুব বিরক্ত লাগে।
দৃশ্য গুলো বিরক্ত লাগে। মানুষ গুলো তে বিরক্ত লাগে।
তখন মনে হয় কাওকে ভালোই বাসি না, আমার পছন্দের মানুষ এবং মুহূর্তের তালিকা শূণ্য।
ভাল লাগা না লাগা, প্রেম, পরিণয় সব ই একটা ধরা বাধা নিয়ম।
রোজ যেমন ঘুম না এলেও ঘুমোতে যেতে হয়, খিদে না পেলেও প্লেটে ভাত নিয়ে নাড়াচাড়া করতে হয়,
ভালোবাসা ও ঠিক তেমন ভাল লাগে না তাও ভালবাসতে হয়, জীবন অর্থহীন তাও বয়ে বেড়াতে হয়,
মানুষ কে অসহ্য লাগে তাও মানুষের মাঝে থাকতে হয়.....!
মানুষ কখনো ই তার নিজের ইচ্ছায় বাঁচে না।
গতিশীল ভিরের মধ্যে স্থির দাঁড়িয়ে থাকতে চাওয়া যেমন অসম্ভব তেমনি অসম্ভব নিজের মত চলা।
মানুষ কে তার চারপাশের সব কিছুর ধাক্কায় একটা দিকে এগিয়ে যেতেই হয়,
হোক সেটা তার পছন্দের কিংবা অপছন্দের দিকে। আর যে কোন দিকে এগিয়ে যাওয়া ই জীবন!
----------------------------------------------------------



এমন একটা বর্তমানে আটকে গেছি যেখানে ভবিষ্যৎ গুলো রোজ রোজ বর্তমান হয়ে যায় দুঃস্বপ্নে।
আর আমি শীতের দীর্ঘ অন্ধকার রাতের পর একটা প্রত্যাশিত আগুন রং সূর্যের মত ভিন্ন বর্তমানের কাছে তুলে দিচ্ছি আমার সকল বর্তমান।
----------------------------------------------------------


ছাদে অবসরের চায়ের টেবিল, বই পড়ার চিলেকোঠা, প্রশস্ত জানালায় পড়ন্ত বিকেলের শহর সব আজ বড় বেশি অর্থহীন, অবহেলায় পড়ে থাকা ধুলোময় বাহুল্য সখ।
আজো সব আছে, শুধু নেই কোন অবসর।
আমাদের অবসর গুলোকে গোছাতে গোছাতে আমরা অবসরগুলো পেরিয়ে গেছি।
স্ট্রোকের পর আব্বা আজ আর ছাদেই ওঠার কথা চিন্তা করে না,
আম্মা ও সিঁড়ি ভেঙে ওঠে না উপরে,
চায়ের টেবিল পড়ে থাকে ঘূণেকাটে অন্ধকার ঘরে।
চিলেকোঠার এখন অখন্ড অবসর, ছুটি হয়ে গেছে স্বপ্নদের,
জানালায় ভারি পর্দায় অদৃশ্য শহর।
তবু মাঝে মাঝে সিঁড়িঘরে জ্যোৎস্না এসে এখনো থমকে দেয় কিছুটা সময়!
আমাদের কাক্ষিত সময় গুলো আমরা পাইনি কখনো, নয়তো খরচ করে ফেলেছি অবেলায়।
জানি এখন আর স্বপ্ন নেই, আর হঠাৎ পেয়ে গেলেও দীর্ঘ কোন অবসর সে গুলো আর কখনোই ছোঁবে না স্বপ্নে দেখা আমার সময়।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:০৯
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×