আমরা থেকে আমি যখন আমিতে ফিরে যাই
তখন আমি মুছে দিতে চাই সব, সবটা অতীত হয়ে যাওয়া মুহূর্ত।
অথচ আমি তে সবটা সময় জুড়ে থাকো তুমি, তোমরা, তোমাদের কথা,
যেখানে আমার অসহ্য নীরবতা ভাংচুর করে আমার ভেতর!
----------------------------------------------------------
মনে মনে এই আমিই যতটা অপরাধের নীল নকশা তৈরী করি,
প্রতিদিন ভেঙে ফেলি যতটা আইন,
যতটা নীচে নামতে থাকি পদস্খলিত আত্মাকে ধরে
তার কোন বিচার হয় না।
এইসব জিঘাংসার বিচার হলে পৃথিবীতে গারদ ছাড়া মানুষের কোন ঘর হতো না।
----------------------------------------------------------
আমি কখনো পাখি হতে চাইনি, অথচ একবার পাখি হয়েছিলাম স্বপ্নে।
কিংবা পাখি না অন্যকিছু।
যেখানে ভেসে গিয়েছিলাম একটা নদীর উপর দিয়ে,
একপাশে সবুজ ঘাসের মাঠ অন্যপাশে বন, যে বনের কথা ভুলে গেছে তাবৎ পৃথিবী…..
একবার, মাত্র একবার এ জীবন
খুব কম হয়ে যায়..
----------------------------------------------------------
নিজের গল্প টা সবসময় অপ্রকাশিত ই থেকে যায়।
আত্মজীবনী তে কাটাছেড়া, সেলাইয়ের দাগ; জীবনের মোড়কে মস্তিষ্কের তীব্র উপস্থিতি। আত্মজীবনী মানেই মেধা চিন্তাশক্তি স্বপ্ন আর আকাঙ্ক্ষা র গালগল্প।
----------------------------------------------------------
এই শেষ দুপুরেই পূর্ব আকাশে স্পষ্ট হয়ে উঠছে চাঁদের অবয়ব,
তার ছায়া-অবতল উপত্যকা, গিরিখাদ, আলো-উজ্জ্বল অস্থিশুভ্র মাটি।
যাকে নিয়ে এ দূর পৃথিবীতে রাত নামতেই ঝরে পড়ে সহস্র কবিতা।
সেই সব রাতে আজো আসে কবিতা পড়ার সময়।
তবু সময় মেলে না। কবিতার ঘর-বাড়ি দখল করে বসে থাকে শূন্যদীর্ঘশ্বাস।
----------------------------------------------------------
মাঝে মাঝে চার পাশ টা একদম চোখ খুলে দেখতে ইচ্ছা করে না। সব কিছু খুব বিরক্ত লাগে।
দৃশ্য গুলো বিরক্ত লাগে। মানুষ গুলো তে বিরক্ত লাগে।
তখন মনে হয় কাওকে ভালোই বাসি না, আমার পছন্দের মানুষ এবং মুহূর্তের তালিকা শূণ্য।
ভাল লাগা না লাগা, প্রেম, পরিণয় সব ই একটা ধরা বাধা নিয়ম।
রোজ যেমন ঘুম না এলেও ঘুমোতে যেতে হয়, খিদে না পেলেও প্লেটে ভাত নিয়ে নাড়াচাড়া করতে হয়,
ভালোবাসা ও ঠিক তেমন ভাল লাগে না তাও ভালবাসতে হয়, জীবন অর্থহীন তাও বয়ে বেড়াতে হয়,
মানুষ কে অসহ্য লাগে তাও মানুষের মাঝে থাকতে হয়.....!
মানুষ কখনো ই তার নিজের ইচ্ছায় বাঁচে না।
গতিশীল ভিরের মধ্যে স্থির দাঁড়িয়ে থাকতে চাওয়া যেমন অসম্ভব তেমনি অসম্ভব নিজের মত চলা।
মানুষ কে তার চারপাশের সব কিছুর ধাক্কায় একটা দিকে এগিয়ে যেতেই হয়,
হোক সেটা তার পছন্দের কিংবা অপছন্দের দিকে। আর যে কোন দিকে এগিয়ে যাওয়া ই জীবন!
----------------------------------------------------------
এমন একটা বর্তমানে আটকে গেছি যেখানে ভবিষ্যৎ গুলো রোজ রোজ বর্তমান হয়ে যায় দুঃস্বপ্নে।
আর আমি শীতের দীর্ঘ অন্ধকার রাতের পর একটা প্রত্যাশিত আগুন রং সূর্যের মত ভিন্ন বর্তমানের কাছে তুলে দিচ্ছি আমার সকল বর্তমান।
----------------------------------------------------------
ছাদে অবসরের চায়ের টেবিল, বই পড়ার চিলেকোঠা, প্রশস্ত জানালায় পড়ন্ত বিকেলের শহর সব আজ বড় বেশি অর্থহীন, অবহেলায় পড়ে থাকা ধুলোময় বাহুল্য সখ।
আজো সব আছে, শুধু নেই কোন অবসর।
আমাদের অবসর গুলোকে গোছাতে গোছাতে আমরা অবসরগুলো পেরিয়ে গেছি।
স্ট্রোকের পর আব্বা আজ আর ছাদেই ওঠার কথা চিন্তা করে না,
আম্মা ও সিঁড়ি ভেঙে ওঠে না উপরে,
চায়ের টেবিল পড়ে থাকে ঘূণেকাটে অন্ধকার ঘরে।
চিলেকোঠার এখন অখন্ড অবসর, ছুটি হয়ে গেছে স্বপ্নদের,
জানালায় ভারি পর্দায় অদৃশ্য শহর।
তবু মাঝে মাঝে সিঁড়িঘরে জ্যোৎস্না এসে এখনো থমকে দেয় কিছুটা সময়!
আমাদের কাক্ষিত সময় গুলো আমরা পাইনি কখনো, নয়তো খরচ করে ফেলেছি অবেলায়।
জানি এখন আর স্বপ্ন নেই, আর হঠাৎ পেয়ে গেলেও দীর্ঘ কোন অবসর সে গুলো আর কখনোই ছোঁবে না স্বপ্নে দেখা আমার সময়।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:০৯