বিশ্বজুড়ে মুসলিম দেশগুলোতে চলছে প্রিডেটর বা ড্রোন হামলার সন্ত্রাসী তা-ব। চালকবিহীন এ ড্রোনের মাধ্যমে নিখুঁতভাবে সামরিক বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। লক্ষ লক্ষ মুসলমানের উপর নির্মম গণহত্যা চালানো হয়। কিন্তু এত নিখুঁত হামলার ম্যাপ কোন কোন মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়? যা ঘরের বেডরুমকেও দৃষ্টি সীমার মধ্যে নিয়ে আসে? এ প্রশ্ন রয়েছে জনমনে।
এক সময় স্যাটেলাইটে তোলা ছবি দিয়ে (গুগল আর্থ) গোটা দুনিয়াটাকে ‘ফ্রি’ করে রাষ্ট্রের অনেক নীতি-নির্ধারকেরই ঘুম হারাম করে দিয়েছিল গুগল। সেই উদ্বিগ্নতা এখনো যায়নি। বরং উত্তোরোত্তর তা আরো বেড়েই চলেছে। কারণ বাস্তব ম্যাপ দেখে সন্ত্রাসবাদীদের জন্য হামলার ছক তৈরি যেমন দুধভাত হয়ে গেল, তেমনি শত্রু দেশের কাছেও প্রকাশ পেয়ে গেল- কোনো দেশের ঠিক কোন অঞ্চলটায় রয়েছে সামরিক ঘাঁটি, খনিজ সম্পদসহ স্পর্শকাতর সংরক্ষিত স্থাপনাসমূহ।
আর বর্তমান অবস্থাতো আরো উদ্বেগজনক! আগে আকাশ থেকে নেয়া হতো স্যাটেলাইট ইমেজ। আর এখন দেশের অলি-গলিসহ স্পর্শকাতর সংরক্ষিত স্থাপনাসমূহের পাশ দিয়েই চলছে গুগলের স্ট্রিট ভিউ কার! সংগ্রহ করছে স্পর্শকাতর সব ছবি।
শুধু তাই নয়, এর মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির অজান্তে অন্য ব্যক্তি তার উপর নজরদারি করতে পারবে। তাছাড়া গুগলের এ গাড়িতে অনেক উঁচুতে ক্যামেরা স্থাপনের ফলে তা মানুষের বাসার দেয়ালের উপর দিয়ে ঘরের ভেতরের বেডরুম পর্যন্ত নাগরিকের অবস্থান পর্যন্ত প্রদর্শন করবে। যা গভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তমূলক।
কোনো দেশের বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি, পর্যটন খাত সম্প্রসারণ, বিনোদনের পরিধি বাড়ানো ইত্যাদি হরেক রকম লোভ দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট দেশকে ম্যানেজ করে গাড়ির ছাদে ক্যামেরা বেঁধে ছদ্মবেশে এখন রাস্তায় নেমেছে কথিত ইন্টারনেট দস্যুখ্যাত গুগল।
আগেও ‘গুগল আর্থ’-এ কারো বাড়ির ছাদের ছবি তুলতে গুগল যেমন দ্বিধা করেনি, তেমনি এখনো তারা কারো জানালা দিয়ে ক্যামেরা হাতে বেডরুমের দিকে উঁকি দেয়াটাকেও গোপনীয়তা লঙ্ঘন বলে স্বীকার করবে না কখনো এবং তা শুরুতেই দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে। শুরুর অবস্থায়ই পত্রিকায় খবর এসেছে ‘বাড্ডার রাস্তায় গুগল কার: রুট প্লান নিয়ে লুকোচুরি’ অর্থাৎ কঠোর গোপনীয়তার মধ্যেই চলছে ‘গুগলের স্ট্রিট ভিউ কার’ প্রকল্পের কাজ। শুরুতেই ব্যক্তিগত ছবি প্রকাশ করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে গুগল স্ট্রিট ভিউ প্রকল্প।