গত ৯ ফেব্রুয়ারি (২০১৩ ঈসায়ী) শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দেশের রাস্তায় উদ্ভোধন করেছেন গুগলের স্ট্রিট ভিউ কার। গুগলের এ কার্যক্রমে সহায়তা দিচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্প।
এর উদ্দেশ্য হিসেবে দাবি করা হচ্ছে, গুগল ম্যাপসের স্ট্রিট ভিউ বাংলাদেশের পর্যটন খাতের উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। বিদেশী পর্যটকেরা পাবে বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রের দিক-নির্দেশনা। এছাড়া স্ট্রিট ভিউয়ের এ কার্যক্রমের মাধ্যমে গুগল ম্যাপ বা গুগল আর্থ ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন স্থানের রাস্তা ও এর আশপাশের স্থাপনার বিস্তারিত ছবি দেখতে পারবে গ্রাহকরা। অথচ এক পর্যটন খাতের উন্নয়নের নামে গোটা দেশ যে এখন পাকিস্তান, আফগানিস্তানের মতো সন্ত্রাসবাদীদের বা শত্রুর শিকারে পরিণত হতে যাচ্ছে, সে বিষয়টি ভেবে দেখার দেশপ্রেমিক কর্মকর্তারা কোথায়?
কেননা উদ্বেগ আর দুশ্চিন্তার কারণ রয়েছে বহু। প্রমাণ রয়েছে ভুরি ভুরি। কারণ দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি ও বিতর্কিত এ ‘গুগল স্ট্রিট ভিউ কার’ প্রকল্প ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশে নিষিদ্ধ হয়েছে, বিভিন্ন দেশে মামলার জালে আবদ্ধ হয়েছে।
যেমন, ব্যক্তিগত জীবনের তথ্যের গোপনীয়তা ভঙ্গ করার দায়ে ‘গুগল স্ট্রিট ভিউ’ নিষিদ্ধ করেছে চেক প্রজাতন্ত্র। গুগল স্ট্রিট ভিউয়ের জন্য ছবি সংগ্রহ করতে গুগলের আবেদন সম্প্রতি নাকচ করে দেশটির তথ্য সংরক্ষণ বিভাগের প্রধান মুখপাত্র হানা স্টেপানকোভা বলেছে, ‘গুগলের স্ট্রিট ভিউ’ সেবা সম্প্রসারণে নতুন করে ছবি সংগ্রহের আবেদন আমরা অনুমোদন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা বিঘেœর দায়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে গুগল স্ট্রিটের ছবি সংগ্রহ কার্যক্রম। (রয়টার্স)
তাছাড়া সেই ২০০৯ সালের নভেম্বরে গুগলের ‘স্ট্রিট ভিউ’য়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সুইজারল্যান্ডও। এ সেবাটির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির অজান্তে অন্য ব্যক্তি তার উপর নজরদারি করতে পারে। অতীতেও ইউরোপে স্ট্রিট ভিউ নিয়ে বেশ কয়েকবার সমালোচনার মুখোমুখি হয় গুগল। সুইজারল্যান্ডের আদালত সূত্র জানিয়েছে, তারা গুগলের স্ট্রিট ভিউ অ্যাপ্লিকেশনটি দেশের জনজীবনে নিরাপত্তার হুমকিস্বরূপ বিবেচনা করেছে। সুইজারল্যান্ডের তথ্য নিরাপত্তাভিত্তিক কমিশনার হ্যান্সপিটার থুয়ারের মতে, গুগল স্ট্রিট ভিউ মানুষের বিভিন্ন স্থানে অবস্থানের তথ্য প্রকাশ করে। আর স্থানগুলো হচ্ছে হাসপাতাল, কারাগার ও বিদ্যালয়। তাছাড়া সে গুগলের স্ট্রিট ভিউ প্রকল্পের গাড়িতে লাগানো তথ্য সংগ্রাহক ক্যামেরা নিয়ে আপত্তি তুলেছে।
তার মতে, ক্যামেরাগুলোর উচ্চতা সঠিক নয়। গুগলের গাড়িতে অনেক উঁচুতে ক্যামেরা স্থাপনের ফলে তা মানুষের বাসার দেয়ালের উপর দিয়ে ঘরের ভেতরে নাগরিকের অবস্থান প্রদর্শন করে। যা সাধারণ মানুষকে নানা সময় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে। ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সে আরও বলেছে, ২০০৯ সালের আগস্টে বিষয়গুলো নিয়ে গুগলকে বেশ কয়েকবার সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু তারা সেদিকে কোনো কর্ণপাতই করেনি। ফলে গুগলকে সুইজারল্যান্ডে স্ট্রিট ভিউয়ের মাধ্যমে তোলা মানুষের বাসার ভেতরের সব ছবি সার্ভার থেকে মুছে ফেলতে বলা হয়েছে। যেসব ছবিতে যানবাহনের চিত্র ফুটে উঠেছে সেসব ছবিতে গাড়ির নম্বরের স্থানটি মুছে ফেলতে বলা হয়েছে। সুইজারল্যান্ডের আদালতের মতে, দেশের মানুষের নিরাপত্তা তাদের কাছে সবকিছুর আগে আলোচ্য বিষয়। (এপি)
দেশের রাস্তায় ‘গুগল স্ট্রীট ভিউ কার’ ভবিষ্যৎ ড্রোন হামলার অগ্রদূত?

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





