somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তুমি ছুঁয়ে দিলে এ মন- আমি উড়বো আজীবন!

০৬ ই মে, ২০১৫ রাত ৯:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমি যাই বঙ্গে - আমার কপাল যায় সংগে। দেখতে গেলাম সিনডেরেলা, দেখে আসলাম 'ছুঁয়ে দিলে মন' :P এটাকে মোটেই ফিল্ম রিভিউ ভাববেন না - আপনাদের প্লিজ লাগে। সেই ২০০৩ সালের কথা, বাংলাদেশে ছিল একটা হৃদয়পুর। সেই হৃদয়পুরে ছিল একটা ছেলে আর একটা মেয়ে। ছেলেটার নাম আবির আর মেয়ের নাম নীলা। আমি এখন তাদের গল্প বলবোঃ-

নীলার দাদাজান আফতাব খান ৪০ বছর আগে একটা ফ্যাক্টরি বানিয়ে ছিলেন। ফ্যাক্টরি কিসের তা বলতে পারছি না, কারন নাম শুনলেও ফ্যাক্টরির চেহারা দেখার সৌভাগ্য আমার হয় নাই। এমনকি দাদাজানের চেহারাও না। তবে দাদাজানের স্কাপচার দেখেই বুঝেছি, দাদাজান মাশ-আল্লাহ প্রতাপশালী-ই ছিলেন। যা হোক,

১২ বছর আগের প্রেম জ্বলে উঠলো এক যুগ পরে এসে। ফিরে গেলাম বাল্য প্রেমের “অম্লমধুর” দিনে। স্কুলবয় আবির গীটার বাজিয়ে যে দারুন গান গাইলো (পুরাই ইঁচড়েপাকা) আর নীলার বাঁকা চোখার চাহনি , লা জওয়াব (পুরাই ডুবে মরতে ইচ্ছে করছিলো)। স্কুল ছুটির পরে নীলা গেছে খালাতো বোনের অভিসারের সঙ্গী হয়ে লাল পাহাড়ে, মেয়েকে খুঁজতে গিয়ে নীলার চাচার বড় প্রেমিক সোহেল ভাই কে পাহাড় থেকে নীচে ফেলে দেয়া আর কনা আপা কে (নীলার খালাতো বোন) জন সম্মুখ থেকে অদৃশ্য করে দেয়া পুরাই মগেরমুল্লুক এর আরেক নাম। এবার বিচারের পালা , প্রেমের অপরাধে আবির কে সপরিবারেচলে যেতে হল ঢাকায় । নীলার বাবা আফিজাল খানের নির্দেশ-ই হৃদয়পুরের রায়। তারপর—

আবির বাইক চালাতে চালাতে বড় হয়ে গেলো। নায়িকা কিভাবে বড় হলো সেটা পরিচালক দেখাননি তবে আমার ধারনা দোলনায় দুলে দুলে। ঘটনাক্রমে হরতাল অবোরধের কারনে ইচ্ছা না থাকা স্বত্তেও নায়ক নোয়াখালী যেতে গিয়ে দিনাজপুর এর হৃদয়পুর গিয়ে উপস্থিত! (হে বাংলাদেশ, মানচিত্রে তোমার জেলাগুলোর অবস্থান নতুন করে চিত্রিত হলো) এবার বহুল প্রতীক্ষিত সেই ক্ষণ; নায়িকার এন্ট্রি <<< সোনালি স্যান্ডেল পায়ে ঝুনঝুনি লাগানো পোশাক পরে পার্টি মেকাপ নিয়ে। (হৃদয়পুর মেডিকেলে পড়েন কিনা, একটু না সাজলে রোগীদের চিকিৎসা করবে কিভাবে?) নায়ক পিছু নিলো নায়িকার, চিনে আসলো হবু শ্বশুরের বাড়ী।

ভিলেনের এন্ট্রি <<< ছাত্রনেতা ড্যানি ভাই, খুন খারাবি একদমই পছন্দ করেন না, তাই তার চ্যালা চামুন্ডারা লাঠি শোঠা নিয়ে মারামারি করতে গিয়ে পাল্টা ধাওয়া খেয়ে ফিরে আসে।এই প্রথম আমার দেখা কোন বাংলা সিনেমায় ভিলেন কে নায়িকের চেয়েও ড্যাশিং লেগেছে। তো ছাত্রনেতা ড্যানি ভাই আবির কে কলেজ ফাংশানে গান গাওয়ার জন্য চূড়ান্ত করেন।সেই গানে গানে – লাল রুমালে রুমালে নায়ক নায়িকের প্রেমের সূত্রপাত।লাল পাহাড় এ নায়ক গেলো উড়ে আর নায়িকা? অবশ্য-ই হাই হিল পরে দৌড়ে দৌড়ে।পাহাড়ের চূড়ায় প্রেমের চূড়ান্ত করে দেখানো হলো।

নায়িকা নীলা’র পারিশ্রমিক কত আমি ঠিক জানিনা। তবে তাকে দিয়ে যে পরিমান দৌড়ঝাপ করানো হয়েছে আর ঘনঘন নিঃশ্বাস নেয়ানো হয়েছে, তার জন্য নায়িকাকে অতিরিক্ত দুই লাখ টাকা প্রদানের জোর দাবী জানাচ্ছি।

কাহিনীতে ফিরে যাক, নায়িকা এদিকে হৃদয়পুরে জমিয়ে প্রেম করছে সে কেউ রাখছে না (শুধু পরিচালক ছাড়া)।রাখার কোন উপায় আছে বলুন? নায়িকা ঝর্ণার পানিতে ভিজে প্রেম করে আর শুকনা কাপড়ে বাড়ী ফিরে (বাচ্চারা কিছু শিখো), পাহাড়ময় দৌড়ে দৌড়ে প্রেম করে, নদীর ঘাটে শুয়ে শুয়ে বিশ্রাম নিয়ে, তারপর বাড়ী ফেরে। নো ক্লু – নো সন্দেহ -- নো তদন্ত।

একি হেরিনু অকস্মাৎ- বিনা মেঘে বজ্রপাত। হঠাৎ, নায়িকার বিয়ে!পুরোনো ফর্মুলা- বিয়ের আসর থেকে নায়িকার পলায়ন। সারারাত বিয়ের পোশাকের সাথে বোরখা পরে স্টেশনে নায়কের সাথে বসে বসে ঘুমালো (কেউ জানলো না- কেউ দেখলো না)।নায়ক প্রতিশোধ নিলো- নায়িকা কে একা করে ফিরে গেলো ঢাকা। প্রভাব পড়লো নায়িকার মেকাপে। এখন আর নীলা ঠিক মতো মেকাপ করেনা, পোশাকের ঝুনঝুনি-টুনটুনির পরিমান গেল কমে।বাড়ী থেকেই আর বের হতে চায় না। কী হবে বের হয়ে? যে দেশে আবির নীলা কে কষ্ট দেয় সে দেশে মেডিকেলের ক্লাস করে কী হবে?

নায়কের অনুশোচনা- পরিবার পরিজন সহ ফিরে আসা-নায়িকার বাবার মুখোমুখি- “আপনার মেয়েকে আমি বিয়ে করতে চাই”- নায়িকার বাবার শর্ত চাপানো- ১৫ দিনে অক্লান্ত পরিশ্রম করে- বাচ্চা দের নিয়ে নেচে গেয়ে শর্ত পুরোন। ঘুম ভাঙ্গলো ভিলেনের- না এই অপমান মেনে নেয়া যায় না- নীলা শুধু ড্যানি ভাইয়ের।ড্যানি ভাই বিয়ের দিন ধাহ্য করলো। নায়িকা বিয়ের মেকাপ নিলো- না এবার পালিয়ে স্টেশনে -নয়, সেই লাল পাহাড়ে (ইশ, ঢাকায় যদি একটা লাল পাহাড় থাকতো!)

এবার যৌথ অভিযান। নায়ক নায়িকা দিলো পাহাড় থেকে লাফ (নায়িকার মেকাপ সেই জিনিস, পানিতে চুবনি খাইয়াও জ্বলজ্বল করছে)- সোজা স্টেশন- অপেক্ষা করছে নায়কের পরিবার পরিজন আর ভিলেন- নায়কের এক ঘুষিতে ভিলেনের সানডে মানডে ক্লোজ। তারপর? কী আর; দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে ;) ;)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:২৭
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×