somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রিয় প্রধানমন্ত্রী শেখ ফজলুল হক মনির মুজিব বাহিনীর হাতে যে সকল মুক্তিযোদ্ধা নিহত হয়েছে তাদের বিচার কবে হবে? নাকি মনি যাদের মেরেছে তারা রাজাকার ছিল? তাহলে ঠিক আছে।

২১ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ৭:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মুজিব বাহিনীর সিরাজুল আলম খান, হাসানুল হক ইনু, আব্দুর রাজ্জাকরা তখনো বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধে নামেনি কিন্তু শেখ ফজলুল হক মনি যুদ্ধ শুরু করে দেয় পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সাথে আর যুদ্ধরত বাম পন্থী মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে।

ট্রেনিং প্রাপ্ত মুজিব বাহিনীর সদস্যরা ১৯৭১ সালের আগষ্ট মাসে বাংলাদেশ প্রবেশ শুরু করে। কিন্তু তাদের দুই মাস আগেই মনিপন্থী মুজিব বাহিনী দেশে ঢুকে যুদ্ধ শুরু করে যুদ্ধরত বামপন্থী মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে।

বৃহত্তর বরিশাল জেলায় পেয়ারা বাগানে সিরাজ শিকদারের সর্বহারা পার্টির সাথে মিশে এক মরনপন যুদ্ধে লিপ্ত হয় পাকিস্তানী আর্মির বিরুদ্ধে।

ওই যুদ্ধ সন্মন্ধ্যে ১৯৭১ সালের ৭ ই জুন সর্বহারা পার্টির এক প্রচারপত্রে বলা হয়, “পূর্ব বাংলা শ্রমিক আন্দোলনে প্রতিনিয়ত আওয়ামী লীগ ও তার নেতৃত্বাধীন মুক্তি বাহিনী সকল দেশ প্রেমিক পার্টি ও জনসাধারনের ঐক্যবদ্ধ হয়ে সঠিক পথে সংগ্রাম পরিচালনা করতে আহ্বান জানায়। তাদের অংশ গ্রহনে অন্যান্য দেশ প্রেমিকদের নিয়ে স্থানীয় ভিত্তিতে জাতীয় মুক্তিফ্রন্ট গঠন হয়”।

ঐক্যবদ্ধ মুক্তিবাহিনী তফশীলি হিন্দু সম্প্রদায় অধ্যুষিত পূর্ব বাংলার বৃহত্তম পেয়ারা বাগান, কুরিয়ানা, ডুমুরিয়া, ভীমরুল এলাকায় গেরিলা যু দ্ধ পরিচালনা করে ( বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র, চতুর্থ খন্ড পৃঃ ৫২০-৫২২)।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই রত সকল বামপন্থী সহযোদ্ধা হিসাবে সিরাজুল, রাজ্জাক, ইনুর কাছে গন্য হলেও মনির কাছে এরা ছিলেন কেবল মাত্র বামপন্থী আর শত্রু চর। অতএব আগষ্ট মাসে বাংলাদেশে ঢুকে মনি গ্রুপের মূখ্য লড়াই হয়ে দাড়ায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী নয় বামপন্থী নিধন অভিযান। অথচ এই বামপন্থীরা আর মুক্তিযোদ্ধারা কিন্তু এদেশে মুজিব বাহিনী ঢোকার অনেক আগেই পাকিস্তানী আর্মিদের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

মনিপন্থী মুজিব বাহিনী সন্মূখ সমরে না নেমে তারা বেছে নেয় গুপ্তহত্যা প্রক্রিয়া। কোথাও কোথাও সরাসরি লড়াই।

লেখক অধ্যাপক আসহাব উদ্দীন আহমেদ তার ‘ইন্দিরা গান্ধীর বিচার চাই’ গ্রন্থটি উৎসর্গ করেছেন ষোলজন মুক্তিযোদ্ধার নামে যার চৌদ্দজন মারা যায় মুজিব বাহিনীর ব্রাশ ফায়ারে। চট্টগ্রামের বাশখালী থানার নাপোড়া পাহাড়ে রাতের আধারে ঘুমন্ত অবস্থায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধরত এই সকল মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করে মুজিব বাহিনীর মনি গ্রুপ যাদের কে বিশ্বাস করে ওই মুক্তিযোদ্ধারা তাদের দলে স্থান দিয়েছিল।

সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার সৈয়দ কামেল বখত গুপ্ত হত্যার শিকার হয় মনিপন্থী মুজিব বাহিনীর হাতে। ভাগ্য ক্রমে বেচে যান সৈয়দ দীদার বখত ( পরবর্তীতে এরশাদ সরকারের প্রতিমন্ত্রী)। বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন সৈয়দ কামেল। নিজের একক প্রচেষ্টায় জুন মাসের মাঝামাঝি নিজ বাহিনী নিয়ে দখল করেন তালা থানা আর সর্ব প্রথম তালা থানায় তোলেন বাংলার স্বাধীন পতাকা। এর আরো বীরত্ব গাথা আছে যাতে পুরো পোষ্ট হয়ে যায়। সেদিকে না যাই।

মুজিব বাহিনীর তিনজন প্রবেশ করে ডুমুরিয়া থানায় পালিয়ে যাবার সময় হত্যা করে সর্বজন প্রিয় মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট আব্দুর রউফ কে।

খুলনা জেলার ছয় জন বামপন্থী মুক্তি যোদ্ধাদের হত্যা করে রাজাকারদের সহায়তায়।

পাকিস্তান সেনা বাহিনীর বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধরত আলাউদ্দিন-মতিনের পূর্ব বাংলা কমিউনিষ্ট পার্টির বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে নেমে পড়েন পাবনার শাহপুরে। এই যুদ্ধে আলাউদ্দিন- মতিন গ্রুপের এমন কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাদের মুজিব বাহিনী হত্যা করে যারা এপ্রিল থাকে পাক বাহিনীর সাথে লড়ে আসছিল।

নরসিংদী প্রচন্ড রকম যুদ্ধ শুরু হত মুক্তিযোদ্ধা আর মনিপন্থী মুজিব বাহিনীর মধ্য যদি না রাজ্জাক ইনুরা সময় মত বাধা দিত।

১৯৭০ সালের ১২ ই আগষ্ট অনুষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় বৈঠকে স্বাধীন সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রস্তাবের উপস্থাপককে নির্মম ভাবে গুম করা হয় স্বাধীনতার পর দিন ১৭ ই ডিসেম্বর হাসপাতাল থেকে। এর কিছুদিন পর গায়েব হয়ে যায় স্বপনকে পরিচর্যা করা নার্স। অন্যায়? কারা স্বপন কে গুম করেছে তাদের দেখে ফেল ছিল। এ প রিপ্রেক্ষিতে ‘বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধে র এবং সি আই এর ভূমিকা’র লেখাক মাসুদুল হককে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পরিস্কার ভাবে হাসানুল হক ইনু মনিকে দায়ী করেন।

স্বাধীনতা যুদ্ধে অন্যায়ভাবে হত্যাকারী প্রতিটি রাজাকারের বিচার আমরা চাই। সেই সাথে চাই এই সব মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যার নিরপেক্ষ তদন্ত।


আওয়ামীলীগ এমনই একটি দল যে দল বিরুদ্ধমত কখনই সহ্য করতে পারে না সেই স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরু থেকে।

এ আর অবাক করা কি শেখ হাসিনা একটুতেই উত্তেজিত হয়ে ১৭০ জন অবুজ মানুষ কে পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে হত্যা করবে। আবার সেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে মানবাধিকার পুরুস্কার দেবে। কি চমৎকার এই দেশ। এই ১৭০ জন যদি রাজাকার হয় আমি এই হত্যাকান্ড সমর্থন করি। আবার লজ্জার মাথা খেয়ে বলে এই নিয়ে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিচার করবে। ছিঃ। থুঃ।

কই ত্বকি হত্যার কি হোল? যেখানে ত্বকির বাবা পরিস্কার বলে দিছে কে তার সন্তান হত্যাকারী। আর কত দিন? আল্লাহর আরশ ও কেঁপে ওঠবে ত্বকির বাপের কান্নায়।

বিএনপিকে নিয়ে টানা হেচড়া করবেন না। রাজাকার বিচারে মনোযোগ দিন সাথে পাবেন। মনে রাখবেন আপনার আওয়ামীলীগের থেকে এই বিএনপি হাজারগুন শক্তিশালী। মানূষ আপনাদের পেটোয়া বাহিনীর ভয়ে মুখ খোলে না। কিন্তু আর কতদিন? ধৈর্য্যর বাধ ভেঙ্গে যাচ্ছে। এইবার ভোটে মানুষ কি ভাবে আপনাদের ট্রিট করে সেই দেখার অপেক্ষায় আছি যদি আল্লাহ বাচিয়ে রাখে।
১৫টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×