এক মেয়ে রেখে ভদ্র মহিলার স্বামী মারা যান ৷ ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও সামাজিক, পারিবারিক চাপ, নিজের নিরাপত্তা এবং মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অবশেষে দ্বিতীয় বারের মত বিয়ের পিঁড়িতে বসতে বাধ্য হন ৷ যাকে রক্ষক ভেবে তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন, সেই রক্ষকেরই লালসার শিকার হয় তার ছয় বছরের বুকের ধন ৷
চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর মেয়ে তনু, টিউশনি এবং থিয়েটারে কাজ করে সংসারে সহায়তা করে ৷ তাকেও আজ লালসার শিকার হয়ে জীবন দিতে হয়েছে ৷ তাও আবার ক্যার্ন্টম্যানের মত সংরক্ষিত এলাকায় ৷ এটাও কি ভাবা যায়! দিন দিন আমাদের নির্ভরতার জায়গাগুলো ক্রমশ সংকুচিত হয়ে আসছে ৷ কোথায় যাচ্ছি আমরা?
মানুষের মানুষকে ভালোলাগাটা সাধারণত দু'ধরনের হয় অনুভূতি কেন্দ্রিক, শরীর কেন্দ্রিক ৷ কোন সুন্দর বস্তু দেখে কেউ চেয়ে থাকতে পারে এটা স্বাভাবিক অনুভূতির ব্যাপার ৷ আর কেউ কেউ আছে ছলে, বলে, কৌশলে যেভাবেই হোক ঐসুন্দর বস্তুটি আমার চাইই চাই ৷ এই শরীর কেন্দ্রিক ভালোলাগা পুরুষদের জন্যই হয়ত বলা হয়, "Every male is a street dog."
এই কুকুরের স্বভাব যে আমার মাঝে নেই তা বললে মিথ্যা বলা হবে ৷ কিন্তু আমার বাবা নামক একজন শাসক ছিলেন যার সিদ্ধান্ত ছিলো, অবিবাহিত কোন মেয়ের সাথে কোন সম্পর্কের খোঁজ পেলে বিয়ে, আর বিবাহিত মেয়ের সাথে কিছু পেলে সোজা ঘর থেকে বের করে দিবেন ৷ বেকার মানুষের বিয়ের চেয়ে মাঘ মাসে ভোরে গলা সমান পানিতে দাঁড়িয়ে থাকা সহজ, আর বাইরে খাওয়া এবং ঘুম দু'টাতেই আমার সমস্যা হয় ৷ আমাদের মত পরিবারগুলোতে প্রায় সবারই মা, বাবা, ভাই, বোন নামক একজন না একজন শাসক থাকে তাই অনেক কিছুতেই আমাদের সংযত থাকতে হয় ৷ যারা লাওয়ারিশ তাদের সংযত রাখার দায়িত্ব হচ্ছে রাষ্ট্রের শাসকদের যেমন বেওয়ারিশ কুকুরদের নিয়ন্ত্রণ করে ৷ রাষ্ট্র কি তার সেই দায়িত্ব পালন করছে?
এইতো কিছু দিন আগে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি রহিত করা হয়েছে ৷ পাঠ্য পুস্তকে থেকে নৈতিক শিক্ষা বাদ দিয়ে যৌন শিক্ষা অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে ৷ চটি বই বিক্রেতা নিরাপদে থাকছে আর ধর্মীয় বই কেউ ভয়ে কিনছে না ৷ হিজাব নিষিদ্ধ করা হচ্ছে ৷ দেশীয় সংস্কৃতির বদলে "ধর্ষণ রাষ্ট্র" এর সংস্কৃতি প্রবেশ করানো হচ্ছে ৷ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদ গুলোতে যোগ্য লোকদের বাদ দিয়ে দল দাসদের নিয়োগ করা হচ্ছে ৷ এই যদি রাষ্ট্রীয় অভিবাবকদের অবস্থা তাহলে এসব অন্যায়ের বিচার করবে কে? নিজেদের স্বার্থে এদেশের রাষ্ট্রীয় অভিভাবকরা বিচার শব্দটির "র" বর্ণ অনেক আগেই তুলে ফেলেছে ৷ এখন যেটি আছে সেটি দিয়ে প্রতিদিন ধর্ষিত হচ্ছি আমি, আপনি, আমাদের মত সাধারণ মানুষ ৷ তাই এখন সৃষ্টিকর্তা ছাড়া কারো কাছে কোন কিছুর বিচার আশা করি না ৷
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:১৩