বর্তমান সময়ের বাংলা ভাষার শক্তিমান কথাসাহিত্যিক দেবেশ রায়ের ৭৮তম জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
বর্তমান সময়ের বাংলা ভাষার শক্তিমান ভারতীয় কথাসাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবী দেবেশ রায়। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগ হওয়ার পর এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জন্মের পর, অর্থাৎ সুদীর্ঘ ষাট বছরে ইতিহাসের মধ্য দিয়ে যেভাবে দুটি দেশ অগ্রসর হয়েছে, তাতে বাংলাদেশের শিল্পসাহিত্য পশ্চিমবঙ্গের থেকে আলাদা হয়ে গেছে। পশ্চিমবঙ্গের লেখকেরা মনে করেন তাঁরাই হচ্ছেন বাংলা ভাষার প্রধান দপ্তর। বাংলাদেশের অনেক লেখকও ভাবেন, পশ্চিমবঙ্গের লেখক বা সমালোচকেরা স্বীকৃতি দিলেই তবে তাঁরা আসলে স্বীকৃতি পেলেন। এই দুটো প্রবণতাই ক্ষতিকর। কারণ কোনো রকম নির্ভরশীলতা বা পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সাহিত্য তৈরি হয় না। বাঙালির ইতিহাস নতুন পথে বাঁক নেওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গের বাংলা কথাসাহিত্যের ভার যাঁরা হাতে তুলে নিয়েছিলেন, দেবেশ রায় ছিলেন সেই দলে। ক্রমশ পাকা হয়ে ওঠা কথাসাহিত্যের রাজপথ ছেড়ে আস্তে আস্তে তিনি সরে আসেন নিজের গড়ে তোলা এক আলপথে এবং বিশিষ্ট হয়ে ওঠেন। ১৯৮০-র দশকের শুরু থেকে তিনি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত-প্রতিষ্ঠিত পরিচয় পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। আজ এই কথাসাহিত্যিকের ৭৮তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৩৬ সালের আজকের দিনে তিনি পাবনা জেলার বাগমারাতে জন্মগ্রহণ করেন। শক্তিমান কথাসাহিত্যিক দেবেশ রায়ের ৭৮তম জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।
দেবেশ রায় ১৯৩৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশের পাবনা জেলার বাগমারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শৈশবের কয়েকটি বছর কাটে উত্তাল যমুনার পারে। দেশভাগের কিছু আগে ১৯৪৩ সালে তিনি তাঁর পরিবারের সঙ্গে পূর্ববঙ্গ ছেড়ে জলপাইগুড়ি চলে যান। তাঁর প্রথম উপন্যাস যযাতি।বাংলা সাহিত্যে তাঁর নতুন অভিজ্ঞতা সঞ্চারের সূচনা ঘটে ১৯৭০-এর দশকে। বাংলা সাহিত্যে উপনিবেশের প্রভাব ও বাংলা ভাষার নিজস্ব প্রতিভা তাঁর অনুসন্ধানের বিষয়। গত দেড় দশক ধরে দেবেশ রায়ের অন্যতম কৌতূহল বাংলাদেশের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও জনজীবন। লাদেশের নির্মীয়মাণ নাগরিকতা ও বাংলা ভাষার আঞ্চলিক রূপের ঐশ্বর্য এই দুইয়ের মধ্যে দেখতে পান এ দেশের সাহিত্যের এক উর্বর জমি। নদী, মাটি আর মানুষ তার সাহিত্যকর্মের মূল উপজীব্য। তিস্তা নদীর কথা তার লেখায় বারবার ফিরে আসে। এক সময় সরাসরি রাজনীতি করার সুবাদে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত হয়েছিলেন নদীটিকে রক্ষার আন্দোলনে। পরবর্তী জীবনে সাহিত্য এখন তার প্রতিবাদের ভাষা।
বাংলাদেশ নিয়ে তাঁর উপলব্ধির সামান্য আভাস পাওয়া যাবে বাংলাদেশের নাটকনভেল: কিছু আনাড়ি আন্দাজ বইটিতে। বাংলাদেশ নিয়ে তাঁর উপলব্ধির সামান্য আভাস পাওয়া যাবে বাংলাদেশের নাটকনভেল: কিছু আনাড়ি আন্দাজ বইটিতে। তাঁর উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলি হল: মানুষ খুন করে কেন (১৯৭৬), মফস্বলী বৃত্তান্ত (১৯৮০), সময় অসময়ের বৃত্তান্ত (১৯৯৩), তিস্তা পাড়ের বৃত্তান্ত (১৯৮৮), লগন গান্ধার (১৯৯৫) ইত্যাদি। তিস্তা পাড়ের বৃত্তান্ত উপন্যাসটির জন্য ১৯৯০ সালে তিনি ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কারে সম্মানিত হন। তিস্তাপাড়ের বৃত্তান্ত-এ রূপায়িত ইতিহাস আর মানুষের অচরিতার্থ স্বপ্নের চিরন্তন দ্বন্দ্বের এক মনুষ্যপ্রতিমা তাঁর এ উপন্যাসের চরিত্র বাঘারু।
বাংলাদেশের গল্প-উপন্যাসের নানারূপতা ও বিবিধ মাহাত্মে মুগ্ধ কথাসাহিত্যিক দেবেশ রায়ের আজ ৭৮তম জন্মবার্ষিকী। শক্তিমান কথাসাহিত্যিক দেবেশ রায়ের জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার
এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।
আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন
কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই
দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।
সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন
রম্য : মদ্যপান !
প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন
= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=
এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।
বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন
Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই
শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন