পৌষের মাঝামাঝি এসে দেশের বিভিন্ন স্থানের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ ছাড়া শৈত্যপ্রবাহসংলগ্ন এলাকায় বিস্তার লাভ করতে পারে। দেশের উত্তরের কিছু জেলায় শুরু হয়েছে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। এটি ধীরে ধীরে দক্ষিণাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ছে। ঢাকা বিভাগের তাপমাত্রাও নেমে এসেছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি থেকে ৬ ডিগ্রি হলে তা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলে গণ্য করা হয়। এছাড়া ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা হলে মাঝারি এবং তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি হলে তা হালকা শৈত্যপ্রবাহ বলে ধরা হয়। হঠাৎ করে জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় শীত ও শীতজনিত বিভিন্ন রোগে শিশু ও বয়স্কদের আক্রান্তের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া সকালে ও রাতের বেলা খড়কুটা জ্বালিয়ে অনেকে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
আবাহাওয়া অধিদফতর বলছে, দেশের কোথাও মাঝারি, কোথাও হালকা কোথাও তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বেড়েছে কুয়াশা। ঢাকা জেলা ও তার আশপাশে শনিবারের (৬ জানুয়ারি) তাপমাত্রা বিরাজ করছে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাতে আরো ৩ ডিগ্রির মতো কমবে। আবাহওয়া অফিস শনিবার সকাল থেকে আগের ২৪ ঘণ্টার এক পরিসংখ্যান থেকে জানিয়েছে, ঢাকা বিভাগের সর্বনিম্ন তাপামাত্রা ছিল গোপালগঞ্জে, ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস; টাঙ্গাইল ও ফরিদপুর ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলিসিয়াস, মাদারীপুরে ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং নিকলিতে ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর দেশের সবচেয়ে কম তাপমাত্রা ছিল রাজশাহী ও চুয়াডাঙ্গায়, সেখানে ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদফতর। অর্থাৎ, এই দুই স্থানে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ চলছে। এছাড়া ঈশ্বরদীতে ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি, বগুড়ায় ৮ ডিগ্রি, বদলগাছীতে ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি, তাড়াশে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি, রংপুরে ১০ ডিগ্রি, দিনাজপুরে ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি, সৈয়দপুরে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি, তেঁতুলিয়ায় ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি, রাজারহাটে ১০ ডিগ্রি, খুলনায় ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি, সাতক্ষীরায় ৯ ডিগ্রি, কুমারখালীতে ৯ ডিগ্রি, শ্রীমঙ্গলে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলিসিয়াস তাপামাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী মঙ্গলবার অবধি শীতের তীব্রতা কমবে না। তাপমাত্রা ক্রমশ হ্রাস পাবে। এ সময় রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলিসিয়াস নেমে যাবে। এ মাসেই তিনটি শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা আছে। জানুয়ারিতে দেশের উত্তরাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে একটি মাঝারি (৬ ডিগ্রি-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস), একটি তীব্র (৪ ডিগ্রি-৬ ডিগ্রি সে.) ধরনের শৈত্য প্রবাহ, অন্যত্র দুই থেকে তিনটি মৃদু (৮ ডিগ্রি ১০ ডিগ্রি সে.) বা মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
আগামী ২৪ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও এর আশপাশের এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। লঘুচাপের প্রভাবে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও মাঝরি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। দেশের যেসব অঞ্চলের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে তা আশপাশের এলাকায় বিস্তার লাভ করতে পারে।
সম্পাদনাঃ নূর মোহাম্মদ নূরু
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৭