ভার্সিটির শেষ দিককার সময়। বন্ধুদের সুবাদে বামেদের সাথে ওঠাবসা ভালোই ছিল। পাঠচক্রে মাঝেমাঝেই যেতাম। সবার আন্তরিকতা, জ্ঞান আর সুস্থচিন্তার চর্চা টানত খুব। ভাবতে ভালো লাগত কেউ না কেউতো মানুষের মুক্তির কথা ভাবে। কর্পোরেট পূঁজি কিভাবে মানুষকে শোষণ করছে, সাম্রাজ্যবাদ বা সাংস্কৃতিক আগ্রাসন কিভাবে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দিচ্ছে না, ইত্যকার নানান বিষয় সমন্ধে বিশদ জেনেছি তাদের কাছ থেকে। মানুষের মতকে কিভাবে সন্মান করতে হয়, নারীকে কোন চোখে তাকাতে হয়, সব শিখেছি তাদের কাছ থেকে। বিশ্ব দেখার নতুন চোখ তাদের কাছ থেকেই পাওয়া। এত ভালো মতাদর্শ কেন সাধারণে প্রিয় হচ্ছে না সেটা অনেকের মত আমারও কাছে বড় একটা প্রশ্ন। উত্তর কিছু জানি, সবটা জানি না। একটা ঘটনা বলছি।
একবার পাঠচক্রে ঢাকা থেকে আগত এক তুখোড় ছাত্রনেতার কথা শুনছিলাম। কর্পোরেট পূজি রুখতে ছাত্রদের কি করণীয় সে বিষয়ে নাতিদীর্ঘ বক্তৃতা দিলেন। খুব উজ্জীবিত হলাম। যাইহোক বক্তৃতাপর্ব শেষে চা বিড়ির টাইমে আমার এক বন্ধু বলল, চলতো সামনের মোড় পর্যন্ত যাই। কারণ জ্ঞিগেস করলাম। বলল- ভাই গোল্ডলিফ খান না, বেনসন খান। আমি আর কিছু বললাম না, তবে আহত বোধ করলাম। মোটামুটি সব বামপন্থীরাই কর্পোরেট সিগারেট খান, আমার স্বল্প পর্যবেক্ষন।
এটি একটা আচরণ, একটা ইঙ্গিত বড় কোন বিষয়ের। জ্ঞানীরা হয়ত ভালো বলতে পারবেন, ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। আমার মত স্বল্পজ্ঞানের মানুষ উপরিতল দেখেই বিচার করার চেষ্টা করি, ভুল শুদ্ধ নিয়ে তেমন ভাবি না। তবে বিশ্বাস করি, কথা আর আচরণ এক না হলে কেউ সফল হয় না, বিপ্লবও করতে পারে না। আর একটা কথা, বামপন্থা মানেই নাস্তিকতা নয়। তবে আমার স্বল্পদিনের অভিজ্ঞতা বলে, তারা সেটাই প্রমাণ করার চেষ্টা করেন যে, বামপন্থা হলো নাস্তিকতার আরেক নাম। আশা করি , একদিন তারা্ও প্রকৃত অর্থে পরিবর্তিত হবেন আর জগতটাক্ওে বদলাবেন। অবশ্যই প্রগতির দিকে।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:৪৮