শুনুন ক্ষমতা আর টাকার কাছে নারী পুরুষের আসল চেহারা সমান । তাই নারী দিবসে শুধু নারীদের ভাল দিক কিংবা প্রশংসার প্রসারই নারী উন্নয়নের পথ রচনা করতে পারে না ।একজন নারীর উন্নয়নে অনেক পুরুষের অবদান থাকে । পুরুষ থেকে আলাদা করে নারীকে চিন্তা করতে শিখিয়ে কোন দিন সুস্থ শৃঙ্খল পৃথিবী হবে না । শুধু কি নারীরাই অসহায় ? সমাজে অনেক পুরুষ আছে অবহেলিত ,নিগৃহীত আর অসহায় কুচক্রী নারীর কবলে পড়ে জীবন এলোমেলো । অফিস আদালতে ,কাগজে কলমে , দেশে ,বিদেশে আর ইতিহাসে নারীরা অসহায় । কিংবা তাদের প্রতি সমাজের সহানুভূতির ইমেজ সব জায়গায় প্রচলিত আছে । অথচ পৃথিবীতে যতো অন্যায় কাজ গুলোর ইতিহাস আছে সব কিছুর পেছনেই পুরুষের সাথে নারীরা ও সম্পৃক্ত । পৃথিবীর অনেক অনেক মহৎ কাজে পুরুষের সাথে নারীরা ও আছে । সুতরাং নারী দিবস পালন করে নারীকে আলাদা করার কোন মানে নেই । এই পৃথিবীর সুন্দর মানব সভ্যতা রক্ষা করতে নারী এবং পুরুষ কে মানবিক শিক্ষায় জ্ঞান অর্জন করতে হবে । গতকাল একদল নর পশুর কবলে পড়ে স্কুল ছাত্রী লাঞ্ছনার খবরে ইউটিউব মিডিয়া রসগল্পে মুখরিত । মেয়েটির ফেসবুকে দেওয়া কষ্টের আপডেটে লিখেছে" এই নরপশুদের দেশে থাকব না " তারমানে এই দেশটা কি নর পশুদের হাতে বন্দি হয়ে যাচ্ছে ?বাংলাদেশে কি ভাল মানুষ নেই । অবশ্যই অনেক ভাল মানুষ আছে । আর আছে বলেই সাধারন মানুষ গুলো এই সব আচরনের প্রতিবাদ ও করছে ।
অথচ পৃথিবীর সব দেশেই কিন্তু ধর্ষণ , টিজিং কম বেশি আছে ।পৃথিবীর সব দেশেই নিরাপত্তা ইস্যুতে নারীরা অবশ্যই অসহায় । তবে বাংলাদেশে ইদানিং প্রচুর এই ধরনের খবর গুলো শোনা যাচ্ছে । কারন শাস্তি না হওয়ার কারনেই এই অপরাধ গুলো দিনের পর দিন কান সহ্য করে যাচ্ছে ।
বাংলাদেশটা খুব ভয়ংকর কিছু স্বার্থপর মানুষের চালবাজিতে চলছে ।সব জায়গায় অমানবিক স্বার্থের খেলা । আর সেই খেলায় এখন নারী পুরুষ উভয়ই জড়িত । অং সাং সুচি ! তিনিও কিছু দিন আগেও মমতাময়ী নারী ছিলেন । কতো শত মহৎ স্বীকৃতি পেয়েছেন । এখন হাজার হাজার অসহায় রোহিঙ্গা নিধনে তিনি নারী নামের এক কলঙ্ক । সময় তাকে রাক্ষসী হিসেবেই চিনবে । ইতিহাস রাক্ষসী নারী হিসেবেই জানবে । তদ্রুপ আজকাল ক্ষমতার আর স্বার্থের কারনে নারীরা কতো ধরনের যে প্রপাগান্ডা চালায় বা চালাতে পারে তা কেবল তারাই জানে যাদের অভিজ্ঞতা আছে । মানুষ মাত্রই ভাল এবং মন্দ । তেমনি নারীরা ও মানুষ । নারীদের মধ্যেও ভাল এবং মন্দ থাকবে ।
আমি আমার পূর্বের কর্মস্থলের এক নারীর গল্প বলি । তিনি নিজেই নিজের স্বামী কে ত্যাগ করেছে । তার নিজের কিছু খারাপ স্বভাবের কারনে । অথচ বাইরের সমাজে নিজেকে সে ধার্মিক এবং স্বামীর জন্য তার ন্যাকা আবেগ শো অফ করতো । অফিসের বেশির ভাগ পুরুষকে তিনি তার কবজায় রাখতো । পুরুষ গুলো তাঁর নোংরা ক্ষমতার কাছে অসহায় থাকতো ।আর সব সময় দীর্ঘশ্বাস ফেলতো আর অভিশাপ দিতো । আর নারীরা পড়তো তাঁর বিষাক্ত হিংসার রোষানলে । যে মানুষ হিসেবেই ছিল স্বার্থপর ,উচ্চবিলাসি আর ক্ষমতা পাগল সেচ্ছাচারি । নারী স্বভাব সহজাত ভালোবাসা তার মধ্যে ছিল না । সে ও নারী হিসেবেই জন্মেছে । ছদ্মবেশী নারী পুরুষ ও তো আর কম দেখলাম না । আরেকটা কাহিনী বলি । এক পরহেজগার মহিলা ইঞ্জিনিয়ার রোজার দিনে ঘুষ হাত দিয়ে নিবে না বলে সবাইকে ড্রয়ার খুলে দিত ...।
এমন শত শত বাস্তব গল্প আছে । যেখানে একদিকে নারী মহীয়সী অন্য দিকে নারী রাক্ষসী ।
এবার অন্য প্রসঙ্গে বলি বোরকা পড়লেই যেমন ধার্মিক হয় না । তেমনি স্লিভ লেস ব্লাউজ আর কপালে বড় টিপ দিলেই কেউ সত্যিকারের সুশীল হয় না ।( নির্দিষ্ট একটা বয়সে কিংবা ফিটনেসের মেয়েদের ভাল দেখাতে পারে ।কিন্তু সব বয়সী বা সব ফিটনেসের সবাইকে মানায় না তা অনেকে ভুলেই যায় ) কিছু মহিলা পারলে কাপরহীন সুশীলতার কার্ড ধারন করে । যা ভীষণ অরুচিকর!! দিনে দিনে মানুষের ভেতর থেকে শালীনতার চর্চা , সভ্যতার চর্চা আর মানবিকতার চর্চা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে । তাই মনের কুপ্রবৃত্তি গুলোই বেশি নাড়া চাড়া দেয় । পোশাকের স্বাধীনতা এবং জীবন যাপনের স্বাধীনতা সবার আছে । অন্য দেশের সংস্কৃতি ফলো করতে গিয়ে আমরা যে কখনও কি কি করি ! মহান আল্লাহ্ ছাড়া কেউ ব্যাখ্যা দিতে পারবে না । পোশাক মানুষের মনের অভিরুচি সভ্যতা প্রকাশ করে । যারা নিজেদের উন্মোচিত রাখতে ভালোবাসে তাদের মনে সভ্যতার ঘাটতি আছে । কারন এক সময় অসভ্য জাতিরাই কাপড় বিহিন থাকতো । অথচ দেখুন বেগম রোকেয়া এবং মাদার তেরেসা এরা কিন্তু কেউ এমন কপালে বড় টিপ বা স্লিভলেস ব্লাউজ পড়েনি । সময়ের পর সময় ধরে তাদের চিন্তা চেতনা মানবিক বোধ গুলো কিন্তু ঠিক মানুষ হৃদয়ে ধারন করেছে ।আবার অনেকে বোরকা পড়ে ঠিক । লজ্জা মনেহয় সব মাথায় । একশ কেজি কাপড় মাথায় জড়িয়ে রাখে । আর শরীরের অন্য স্থান গুলো সেনসেটিভ জায়গা গুলো দিব্যি উন্মুক্ত রেখেছে । শালীনতা আর ভদ্রতা সভ্য সুস্থ মানুষের পরিচায়ক । এখন এই পৃথিবী অনেক বেশি মিশ্র । তবুও নারী পুরুষের জীবন যুদ্ধ আর বেঁচে থাকার গল্প কিন্তু মানচিত্র পেরিয়ে সব জায়গায় এক । নারী পুরুষের সভ্যতা আর ভদ্রতা সব দেশেই আছে ।নারী পুরুষ শব্দ দুটোকে আলাদা না করে নিজের মনের পবিত্রতা , সততা আর ভালোবাসা দিয়ে পৃথিবীটাকে সুন্দর করি । একটি সুন্দর পৃথিবীর জন্য মানুষের জন্য মানুষের ভালোবাসার জায়গাটা পরিস্কার করি । গোটা পৃথিবীটা কিন্তু মানব মানবীর যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত এক অভিন্ন পরিবার ।এই পৃথিবী নামক পরিবারকে ভালবাসতে হবে । তবেই পৃথিবী আপনাকে সুন্দর সুন্দর উছিলা উপকরনে ভাল রাখবে । আমরা নারী কিংবা পুরুষ হওয়ার আগে মানুষ হই ।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:৩০