somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভাল পুলিশ খারাপ পুলিশ ফ্যাক্ট -নুরুন নাহার লিলিয়ান

০১ লা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


( ছবি ইন্টারনেট )
বাপরে বাপ পুলিশের কতো ক্ষমতা! গত কাল রাতে পুলিশ বাহিনীর কতিপয় এক দল Police আমাদের আবাসিক এরিয়ায় অবৈধ অনুপ্রবেশ করে । আবার তাদের এমন নিয়মিত অবৈধ অনুপ্রবেশে বাধা দেওয়ায় উনারাই আমাদের আবাসিক এরিয়ার নিরাপত্তা দায়িত্বে থাকা অফিসের দারোয়ান আর আনসার সদস্যদের সাথে চরম খারাপ ব্যবহার করেছে । উল্টা আমাদের অসহায় আনসার এবং দারোয়ানদের ছবি তুলে নিয়ে গেছে ।তাদের নানা রকম হুমকি ও দিয়েছে । এখন দেশের কতিপয় পুলিশের এতোটাই ঐশ্বরিক ক্ষমতা তাদের ইউনিফর্ম , জুতা , কথা চাল চলন সব কিছুতেই আলিফ লায়লা সিরিজের ক্ষমতাবান জীন ভূতদের মতো শুধু ক্ষমতার ঘ্রান পাওয়া যায় । এই জাতীয় কতিপয় পুলিশ নিজেদের প্রতিষ্ঠান গোটা পুলিশ বাহিনীর মান সম্মান এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে । অথচ প্রায় প্রতিদিন টিভিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলে থাকেন যে কোন বাহিনীর কেউ ক্ষমতার অপব্যবহার করলে তাদের কাউকে ছাড়া হবে না । জনগনের জান মাল রক্ষা করতেই তাদের নিয়োগ করা ।জনগনের টাকায় তাদের বাড়ি , গাড়ি , রেশন ,তাদের ক্ষমতা দেখানোর অস্ত্র সব কেনা । অথচ বাস্তবে জনগণের জান মালের ক্ষতি করা এবং ক্ষমতার অপপ্রয়োগে প্রায়ই কিছু পুলিশের নাম উঠে আসছে । কিছু দিন আগে ও এক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার কুকর্ম আর ক্ষমতা সাধারনের কাছে কতোটা নিচু ভাবে আসছে ।যা একটা দেশের জন্য পজিটিভ বার্তা বহন করে না ।
POLICE শব্দটার কিন্তু অনেক সৌন্দর্য আছে । এই শব্দটার অনেক এব্রিভিয়েসন আছে তার মধ্যে একটা বলি Polite obedient loyal intelligent courageous efficient . এই শব্দটার মধ্যে কতো সুন্দর সুন্দর কথা অন্তর্নিহিত আছে । তাদের এই সুন্দর কথা গুলোই মেনে চলা দায়িত্ব । ওদের ও অনেক নিয়ম কানুন আছে । ইচ্ছে করলেই তাঁরা নিয়ম ভাঙতে পারে না । যারা এই বাহিনীতে থেকে সঠিক ভাবে জনগনের সাথে ভাল ব্যবহার করে না সঠিক পুলিশিং পালন না করে তবু ও এই বাহিনীর সদস্য দাবী করে তারা কি পুলিশ ? তারা আসলে কি ? সাধারন জনগণের কাছে এই জাতীয় পুলিশের অনেক সমার্থক নাম আছে । যে গুলো শব্দ গুলো ব্যবহার করলে অনেক মানহানিকর হবে ।

পুলিশ শব্দটা সারা পৃথিবীতে অনেক আধুনিক আর জনপ্রিয় । তাই এই প্রতিষ্ঠানের সৌন্দর্য নষ্ট করতে দুই একটা ঠোলাই যথেষ্ট ।
কতিপয় ক্ষমতা প্রদর্শন করতে আগ্রহী একদল তাদের দাবি যেকোন আবাসিক এরিয়ায় বিনা অনুমতিতেই তারা ঢুকতে পারে , দ্রুত গতিতে গাড়ি ও চালাতে পারে । কি সুন্দর ক্ষমতা! আহা রে এই দেশের কর্মজীবী মানুষ গুলি যদি এমন টাইপ বিবেকহীন পুলিশ না হয়ে জন্ম নিত তাহলে প্রতিদিন ট্রাফিক জ্যামের আপডেট আর ভোগান্তির চিত্র দেখতে হতো না ।
বিসিএসআইআর গবেষণাগার ঢাকার আবাসিক এরিয়ায় ঢুকতে কয়েকটা গেট আছে । ধানমন্ডির দিকে ল্যাব এইড হাসপাতালের একটা গেট আর এলিফেন্ট রোডের একটা গেট সব সময় ব্যস্ত থাকে । পুলিশের কমপক্ষে দশ বারোটা গাড়ি অন্যায় অনুপ্রবেশ করে নিয়মিত । কারণটা হল সায়েন্স ল্যাবের মোড়ের জ্যাম থেকে বাঁচতে তারা আবাসিক এরিয়ার ভেতর দিয়ে যায় । যায় ভাল কথা । ভদ্র ভাবে যান । কার ও বাড়ির উপর দিয়ে গেলে তাদের সাথে ভাল ব্যবহার করুন । অথচ এই আবাসিক এরিয়ায় বিকেলে কিংবা সন্ধ্যার পর অনেক ভাবিরাই হাঁটতে বের হয় , কেউ ব্যায়াম করতে , বাচ্চাদের হাটাতে বের হয় ,মাঠের/ পার্কের গাছের নিচে চেয়ারে বসে থাকে বাতাস খেতে । নিজের বাসার এরিয়ায় সাধারনত মানুষ যা করে ।
ছোট ছোট অনেক বাচ্চা আছে ,মসজিদে নিয়মিত মানুষ যাতায়াত করে , বাচ্চাদের স্কুল আছে । সেই স্কুলের সামনে দিয়েই তারা দ্রুত গতিতে গাড়ি চালিয়ে হাব ভাব দেখিয়ে বের হয় ।পিক আপ ভ্যানে থাকা পুলিশ গুলো কখন ও নানা রকম অঙ্গভঙ্গি ও করে ,মহিলাদের দিকে বাজে ভাবে তাকায় ।
খুব অসহায় লাগে । আমরা নিজের ঘরেই কতো অসহায় । নিজের বাসস্থানেই কতো অসহায় । নিরাপত্তা যে কোথায় ? জাপান থেকে ফেরার পর চিটাগাং কয়েক মাস ছিলাম । সেখানের ভয়াবহতা আর ও করুন । কোনদিন মন থেকে মুছবে না । বিসিএসআইআর একটা সরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান ।গবেষকরা এখানে এতো ব্যস্ত থাকে সমাজের সাথে তেমন যোগাযোগ হয় না । তাই এই সব প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে অনেক সাধারন জনগণই জানে না । চিটাগাং এর তুলনায় ঢাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা , আনসারদের চেকপোষ্ট অনেক বেশি সিরিয়াস । প্রথম দিকে যখন আমরা কোয়াটারে এলাম । নিরাপত্তার উপর এতোটা আস্থা তৈরি হয়েছিল যে বাসায় লক না দিয়ে ও বাইরে যেতাম ।
হলি আর্টিজানের ঘটনার পর সব জায়গায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয় । দোকান পাট , বাসা বাড়ি , অফিসে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয় ।সেই হিসেবে সরকারী সব প্রতিষ্ঠানেই নিরাপত্তা বাড়ানো হয় ।
এই পুলিশ গুলো এভাবে নিজেরা ও সরকারী প্রতিষ্ঠানের অন্য আরেকটি সরকারী প্রতিষ্ঠানের আবাসিক এরিয়ায় রাত বিরাতে অবৈধ অনুপ্রবেশ কতোটুকু যৌক্তিকতা আছে ? আর নিরাপত্তা দায়িত্বে থাকা আনসার আর দারোয়ানদের সাথে তাদের অসৌজন্য মূলক আচরন আর ক্ষমতা প্রদর্শন কতো টুকু এই স্বাধীন দেশে মেনে নেওয়া যায় ।

যারা কর্তব্য পালন করছে তাদের দায়িত্ব কে অসম্মান করা কি তাদের কোন অধিকার আছে । এমন একটি নিরাপদ পরিবেশে থেকে ও আমরা নিরাপদ না । এই জন্যই এই ধরনের দুই একটা পুলিশের ভুল কার্যকলাপের কারনে এরা সাধারন পথচারীদের কাছে ও মাইর খায় , সাধারন মানুষ এদের ঘৃণা করে , গালি হিসেবে ব্যবহার করে পুলিশ শব্দটা ।অথচ পুলিশ শব্দটা কতো সৌন্দর্য বহন করে । পুলিশ তাদের ভাল ব্যবহার দিয়ে হয়ে উঠতে পারে সুপার হিরো , জনগনের সব চেয়ে কাছের বন্ধু । গুঁটি কয়েক স্বেচ্ছাচারী আর দায়িত্বহীনদের জন্য পুরো পুলিশ বাহিনীর ইমেজটাই নষ্ট হয় ।পুলিশ বাহিনীতে আমাদের আত্মিয় ,বন্ধু , পরিচিত অনেকেই আছে । আমরা মোটেই এই বাহিনীকে খারাপ ভাবে দেখতে পছন্দ করব না এটাই স্বাভাবিক । আমরা চাইব আমাদের দেশের পুলিশ বাহিনীর আর ও মানবিক সৌন্দর্য বিকশিত হউক । তারা জনগণের সমস্যা গুলো মানবিক মন দিয়ে অনুভব করুক । শুধু দুঃখ হয় কিভাবে এমন একটা বাহিনীতে এদের মতো মানুষ গুলোর জায়গা হয় ।
#ভাল পুলিশ খারাপ পুলিশ ফ্যাক্ট
#নুরুন নাহার লিলিয়ান
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:১০
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×