( ছবি ইন্টারনেট )
বাপরে বাপ পুলিশের কতো ক্ষমতা! গত কাল রাতে পুলিশ বাহিনীর কতিপয় এক দল Police আমাদের আবাসিক এরিয়ায় অবৈধ অনুপ্রবেশ করে । আবার তাদের এমন নিয়মিত অবৈধ অনুপ্রবেশে বাধা দেওয়ায় উনারাই আমাদের আবাসিক এরিয়ার নিরাপত্তা দায়িত্বে থাকা অফিসের দারোয়ান আর আনসার সদস্যদের সাথে চরম খারাপ ব্যবহার করেছে । উল্টা আমাদের অসহায় আনসার এবং দারোয়ানদের ছবি তুলে নিয়ে গেছে ।তাদের নানা রকম হুমকি ও দিয়েছে । এখন দেশের কতিপয় পুলিশের এতোটাই ঐশ্বরিক ক্ষমতা তাদের ইউনিফর্ম , জুতা , কথা চাল চলন সব কিছুতেই আলিফ লায়লা সিরিজের ক্ষমতাবান জীন ভূতদের মতো শুধু ক্ষমতার ঘ্রান পাওয়া যায় । এই জাতীয় কতিপয় পুলিশ নিজেদের প্রতিষ্ঠান গোটা পুলিশ বাহিনীর মান সম্মান এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে । অথচ প্রায় প্রতিদিন টিভিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলে থাকেন যে কোন বাহিনীর কেউ ক্ষমতার অপব্যবহার করলে তাদের কাউকে ছাড়া হবে না । জনগনের জান মাল রক্ষা করতেই তাদের নিয়োগ করা ।জনগনের টাকায় তাদের বাড়ি , গাড়ি , রেশন ,তাদের ক্ষমতা দেখানোর অস্ত্র সব কেনা । অথচ বাস্তবে জনগণের জান মালের ক্ষতি করা এবং ক্ষমতার অপপ্রয়োগে প্রায়ই কিছু পুলিশের নাম উঠে আসছে । কিছু দিন আগে ও এক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার কুকর্ম আর ক্ষমতা সাধারনের কাছে কতোটা নিচু ভাবে আসছে ।যা একটা দেশের জন্য পজিটিভ বার্তা বহন করে না ।
POLICE শব্দটার কিন্তু অনেক সৌন্দর্য আছে । এই শব্দটার অনেক এব্রিভিয়েসন আছে তার মধ্যে একটা বলি Polite obedient loyal intelligent courageous efficient . এই শব্দটার মধ্যে কতো সুন্দর সুন্দর কথা অন্তর্নিহিত আছে । তাদের এই সুন্দর কথা গুলোই মেনে চলা দায়িত্ব । ওদের ও অনেক নিয়ম কানুন আছে । ইচ্ছে করলেই তাঁরা নিয়ম ভাঙতে পারে না । যারা এই বাহিনীতে থেকে সঠিক ভাবে জনগনের সাথে ভাল ব্যবহার করে না সঠিক পুলিশিং পালন না করে তবু ও এই বাহিনীর সদস্য দাবী করে তারা কি পুলিশ ? তারা আসলে কি ? সাধারন জনগণের কাছে এই জাতীয় পুলিশের অনেক সমার্থক নাম আছে । যে গুলো শব্দ গুলো ব্যবহার করলে অনেক মানহানিকর হবে ।
পুলিশ শব্দটা সারা পৃথিবীতে অনেক আধুনিক আর জনপ্রিয় । তাই এই প্রতিষ্ঠানের সৌন্দর্য নষ্ট করতে দুই একটা ঠোলাই যথেষ্ট ।
কতিপয় ক্ষমতা প্রদর্শন করতে আগ্রহী একদল তাদের দাবি যেকোন আবাসিক এরিয়ায় বিনা অনুমতিতেই তারা ঢুকতে পারে , দ্রুত গতিতে গাড়ি ও চালাতে পারে । কি সুন্দর ক্ষমতা! আহা রে এই দেশের কর্মজীবী মানুষ গুলি যদি এমন টাইপ বিবেকহীন পুলিশ না হয়ে জন্ম নিত তাহলে প্রতিদিন ট্রাফিক জ্যামের আপডেট আর ভোগান্তির চিত্র দেখতে হতো না ।
বিসিএসআইআর গবেষণাগার ঢাকার আবাসিক এরিয়ায় ঢুকতে কয়েকটা গেট আছে । ধানমন্ডির দিকে ল্যাব এইড হাসপাতালের একটা গেট আর এলিফেন্ট রোডের একটা গেট সব সময় ব্যস্ত থাকে । পুলিশের কমপক্ষে দশ বারোটা গাড়ি অন্যায় অনুপ্রবেশ করে নিয়মিত । কারণটা হল সায়েন্স ল্যাবের মোড়ের জ্যাম থেকে বাঁচতে তারা আবাসিক এরিয়ার ভেতর দিয়ে যায় । যায় ভাল কথা । ভদ্র ভাবে যান । কার ও বাড়ির উপর দিয়ে গেলে তাদের সাথে ভাল ব্যবহার করুন । অথচ এই আবাসিক এরিয়ায় বিকেলে কিংবা সন্ধ্যার পর অনেক ভাবিরাই হাঁটতে বের হয় , কেউ ব্যায়াম করতে , বাচ্চাদের হাটাতে বের হয় ,মাঠের/ পার্কের গাছের নিচে চেয়ারে বসে থাকে বাতাস খেতে । নিজের বাসার এরিয়ায় সাধারনত মানুষ যা করে ।
ছোট ছোট অনেক বাচ্চা আছে ,মসজিদে নিয়মিত মানুষ যাতায়াত করে , বাচ্চাদের স্কুল আছে । সেই স্কুলের সামনে দিয়েই তারা দ্রুত গতিতে গাড়ি চালিয়ে হাব ভাব দেখিয়ে বের হয় ।পিক আপ ভ্যানে থাকা পুলিশ গুলো কখন ও নানা রকম অঙ্গভঙ্গি ও করে ,মহিলাদের দিকে বাজে ভাবে তাকায় ।
খুব অসহায় লাগে । আমরা নিজের ঘরেই কতো অসহায় । নিজের বাসস্থানেই কতো অসহায় । নিরাপত্তা যে কোথায় ? জাপান থেকে ফেরার পর চিটাগাং কয়েক মাস ছিলাম । সেখানের ভয়াবহতা আর ও করুন । কোনদিন মন থেকে মুছবে না । বিসিএসআইআর একটা সরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান ।গবেষকরা এখানে এতো ব্যস্ত থাকে সমাজের সাথে তেমন যোগাযোগ হয় না । তাই এই সব প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে অনেক সাধারন জনগণই জানে না । চিটাগাং এর তুলনায় ঢাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা , আনসারদের চেকপোষ্ট অনেক বেশি সিরিয়াস । প্রথম দিকে যখন আমরা কোয়াটারে এলাম । নিরাপত্তার উপর এতোটা আস্থা তৈরি হয়েছিল যে বাসায় লক না দিয়ে ও বাইরে যেতাম ।
হলি আর্টিজানের ঘটনার পর সব জায়গায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয় । দোকান পাট , বাসা বাড়ি , অফিসে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয় ।সেই হিসেবে সরকারী সব প্রতিষ্ঠানেই নিরাপত্তা বাড়ানো হয় ।
এই পুলিশ গুলো এভাবে নিজেরা ও সরকারী প্রতিষ্ঠানের অন্য আরেকটি সরকারী প্রতিষ্ঠানের আবাসিক এরিয়ায় রাত বিরাতে অবৈধ অনুপ্রবেশ কতোটুকু যৌক্তিকতা আছে ? আর নিরাপত্তা দায়িত্বে থাকা আনসার আর দারোয়ানদের সাথে তাদের অসৌজন্য মূলক আচরন আর ক্ষমতা প্রদর্শন কতো টুকু এই স্বাধীন দেশে মেনে নেওয়া যায় ।
যারা কর্তব্য পালন করছে তাদের দায়িত্ব কে অসম্মান করা কি তাদের কোন অধিকার আছে । এমন একটি নিরাপদ পরিবেশে থেকে ও আমরা নিরাপদ না । এই জন্যই এই ধরনের দুই একটা পুলিশের ভুল কার্যকলাপের কারনে এরা সাধারন পথচারীদের কাছে ও মাইর খায় , সাধারন মানুষ এদের ঘৃণা করে , গালি হিসেবে ব্যবহার করে পুলিশ শব্দটা ।অথচ পুলিশ শব্দটা কতো সৌন্দর্য বহন করে । পুলিশ তাদের ভাল ব্যবহার দিয়ে হয়ে উঠতে পারে সুপার হিরো , জনগনের সব চেয়ে কাছের বন্ধু । গুঁটি কয়েক স্বেচ্ছাচারী আর দায়িত্বহীনদের জন্য পুরো পুলিশ বাহিনীর ইমেজটাই নষ্ট হয় ।পুলিশ বাহিনীতে আমাদের আত্মিয় ,বন্ধু , পরিচিত অনেকেই আছে । আমরা মোটেই এই বাহিনীকে খারাপ ভাবে দেখতে পছন্দ করব না এটাই স্বাভাবিক । আমরা চাইব আমাদের দেশের পুলিশ বাহিনীর আর ও মানবিক সৌন্দর্য বিকশিত হউক । তারা জনগণের সমস্যা গুলো মানবিক মন দিয়ে অনুভব করুক । শুধু দুঃখ হয় কিভাবে এমন একটা বাহিনীতে এদের মতো মানুষ গুলোর জায়গা হয় ।
#ভাল পুলিশ খারাপ পুলিশ ফ্যাক্ট
#নুরুন নাহার লিলিয়ান
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:১০