উনার নাম আমু হাজি । হাজি টাইটেল দেখে আবার ভেবে বসবেন উনি ব্লগার নতুন নকিবের মত মক্কা মদিনা থেকে ঘুরে এসেছেন । আসলে মোটেই তা নয়, কানা ছেলের নাম যেমন পদ্মলোচন হতে পারে সেভাবে উনার নাম হাজি । হজ করা তো দূরে থাক উনি গত ষাট বছরে একবারও অযু গোসল করেননি । উনার বিশ্বাস, গোসল করলে তিনি অসুস্থ হয়ে মারা যাবেন ! উনাকে কেউ জোর করে গোসল করাতে চাইলে কেঁদে কেটে প্রাণপণ ধস্তাধস্তি লড়াই করে ছুটে পালান ।
গোসল না করায় উনার গায়ে এবং চেহারাতে ধুলার আস্তর বসে গেছে । নাড়াচাড়া না করে চুপচাপ বসে থাকলে মনে হয় যেন মাটির তৈরি মুর্তি ।
খাবারের ব্যপারেও তিনি বেশ অদ্ভুত । তাজা টাটকা খাবার উনার মুখে রুচে না । তিনি সবসময় পচা মাংস খেতে ভালোবাসেন । বিশেষ করে মরা সজারুর নষ্ট মাংস তাঁর অন্যতম ফেভারিট খাবার । পুরনো ময়লা হওয়া পানির জগে দূষিত পানি খেয়ে তৃষ্ণা মেটান । তিনি ধূমপান করতেও ভালোবাসেন । তবে বিড়ি-সিগারেট এসব চেনা জিনিস দিয়ে ধূমপান করেন না । স্মোকিং পাইপে জন্তু জানোয়ারের শুকনো বিষ্ঠা ঢুকিয়ে আগুন দিয়ে ধূমপান করেন !
আমু হাজি ইরানের ফারস অঞ্চলের দেজগাহ নামক এক গ্রামের বাসিন্দা । অবশ্য গ্রামের লোকদের সাথে তিনি থাকেন না, গ্রামের লোকালয়ের বাইরে জনবিরল স্থানে থাকেন । কখনো থাকেন টয়লেটের মত ছোট খুপরিতে ।
আবার কখনো কবরের মত গর্ত বানিয়ে তাতে ঢুকে আরামসে ঘুমান ।
কোন মহিলা কখনো ভুলেও এই কিউট লোকটির উপর ক্রাশ খায়নি । তিনিও কোন মহিলাকে বিয়ে করেননি । কাজেই আশি বছর বয়সেও তিনি ব্যাচেলর ।
প্রশ্ন হল এই লোকটা এতো বিচিত্র হলেন কিভাবে ?
হাজিকে নিয়ে নির্মিত একটি রিপোর্টে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বলেছে, যৌবনে তাঁর আবেগে কিছু আঘাত এসেছিল, যে কারণে দুঃখ পেয়ে আমু হাজি হয়ে গেলেন নোংরা মামু ।
আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে তাঁর আবেগে কিসের আঘাত পেয়েছিলেন । তিনি কি প্রেমে ব্যর্থ হয়েছিলেন ? আমাদের দেশে অনেকে প্রেম বিষয়ে ডজ খেয়ে চুল দাঁড়ি কাটানো বন্ধ করে আমু হাজির মত হয়ে যায় ।
এনিওয়ে, আমু হাজি ইরানে জন্ম নিয়ে বেঁচে গেছেন । তিনি যদি বাংলাদেশের লোক হতেন তাহলে লোকালয় ছেড়ে এতো আরামে থাকতে পারতেন না । কিছু লোক উনাকে আধ্যাত্মিক মানুষ বানিয়ে পীর-মুরিদি শুরু করে দিত ।
তাকে কেউ পীর না বানালেও তিনি নিস্তার পেতেন বলে মনে হয় না । আমার ক্লাসের কিছু মেয়েকে দেখেছি যখন তখন যার তার প্রেমে পড়ে যায় । কোন পুরুষ লোক নিজেকে সামান্য ব্যতিক্রম করে উপস্থাপন করতে পারলেই সেই মেয়েগুলো ক্রাশ খেয়ে বেহুশ ! আমি নিশ্চিত, ব্যতিক্রম পুরুষ আমু হাজি এখানকার বাসিন্দা হলে ঐ মেয়েরা উনাকে প্রপোজ করা শুরু করে দিত, বেচারার নির্ভেজাল আরামের জীবনটাকে হেল বানিয়ে ছাড়ত ।
তথ্যসূত্রঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৭