somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সবকিছুকে ছাপিয়ে গিয়ে রাজত্ব করছে "সেলফি।"

১৯ শে মার্চ, ২০১৬ ভোর ৫:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


Selfie অথবা সেলফি শব্দটির সাথে ছোট-বড় সবাই নিবিড় ভাবে পরিচিত। যার বাংলা আভিধানিক অর্থ “আত্মপ্রকৃতি”। বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত শব্দ হিসেবে সেলফি সবার কাছে শীর্ষে। যে কোন মহুর্তের নিজের আত্মপ্রকৃতিকে স্মার্ট ফোনে বন্দী করা হলো সেলফির মূখ্য উদ্দেশ্য। এ যুগে আমরা আমাদের আটপৌরে জীবনের খাওয়াদাওয়া, বেড়ানো থেকে শুরু করে সবকিছুকেই যেন সবিস্তারে প্রকাশ করতে চাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তা সে ফেসবুক-টুইটারে একটা ‘স্ট্যাটাস’ দিয়েই হোক কিংবা একটা ছবি প্রকাশ করে। এ প্রবণতায় এখন সবকিছুকে ছাপিয়ে গিয়ে রাজত্ব করছে সেলফি।

সেলফির ইতিহাস কি?
সাম্প্রতিক এ ধারণাটি দুনিয়ার এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত এতটাই জনপ্রিয় হয়েছে যে, দ্রুতই অভিধানেও অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে তা। অক্সফোর্ড অভিধান সেলফিকে ‘২০১৩ সালের সবচেয়ে আলোচিত শব্দ’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। অভিধানটিতে সেলফির অর্থ—‘এমন ছবি যা নিজে নিজে তোলা হয়েছে, সাধারণত স্মার্টফোন বা ওয়েবক্যামেরায় তোলা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করা।’
নিজের প্রতিকৃতি নিয়ে মানুষের এই বাড়াবাড়ি কি আগের দুনিয়াতেও ছিলো যার কিছুটা পরিবর্তিত রুপ আজকের সেলফি।

মার্কিন আলোকচিত্রী রবার্ট কর্নেলিয়াস ১৮৩৯ সালে নিজের ছবি নিজে তুলে পৃথিবীর প্রথম সেলফি তৈরি করেন। কিন্তু এ যুগে সেলফি বলতে যা বোঝায় সেই ‘সেলফি’ শব্দটি অস্ট্রেলিয়ার একটি অনলাইন ফোরাম সর্বপ্রথম ব্যবহার করে ২০০২ সালে।

তবে ইতিহাসে চোখ বুলালে হয়তো বিশ্বখ্যাত ওলন্দাজ চিত্রশিল্পী “রেমব্রান্টকে” এ ধারার পথিকৃত বলা যেতে পারে, হয়তো বলা যেতে পারে তিনিই সেলফির জনক। কেননা, মাত্র ৬৩ বছরের জীবনে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রায় ৮০টির মতো আত্মপ্রতিকৃতি এঁকেছিলেন এ বিখ্যাত চিত্রশিল্পী!
১৬০৬ সালে এখনকার নেদারল্যান্ডসের লেইডেনে জন্মেছিলেন রেমব্রান্ট। নানা উত্থান পতনের মধ্য দিয়ে জীবন কাটে এই চিত্রশিল্পীর। জীবনীকারদের মতে, রেমব্রান্টের জীবনের নানা টানাপোড়েনের সাক্ষ্য হয়ে আছে জীবেনর বিভিন্ন পর্যায়ে আঁকা তাঁর আত্মপ্রতিকৃতিগুলো। হিসেবে কিছুটা ভিন্নমত থাকলেও পেইন্টিং, প্রিন্ট ও ড্রইং মিলিয়ে রেমব্রান্টের আত্মপ্রতিকৃতির সংখ্যা তাঁর আঁকা মোট চিত্রকর্মের প্রায় ২০ ভাগ বলেও মনে করেন কেউ কেউ। শিল্পকলার ইতিহাসে এত বড়মাপের আর কোনো শিল্পীই এত বিপুল সংখ্যক আত্মপ্রতিকৃতি আর আঁকেননি। ইউরোপীয় চিত্রশিল্পের পুরোধা শিল্পী রেমব্রান্ট মারা যান ১৬৬৯ সালে।
শিল্প সমালোচকেরা রেমব্রান্টের আত্মপ্রতিকৃতিগুলোকে তিন ভাগে ভাগ করে থাকেন। প্রথম পর্যায়টি রেমব্রান্টের তরুণ বয়সের। এ সময়ে তিনি প্রতিকৃতিতে আলো-ছায়ার খেলা এবং নানা অভিব্যক্তি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। এসব প্রতিকৃতিতে তাঁর শিল্পীসত্ত্বার উন্মেষের তীব্রতা টের পাওয়া যায়। দ্বিতীয় পর্যায়ে আছে রেমব্রান্টের ২৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সের মধ্যে আঁকা আত্মপ্রতিকৃতি। আর তৃতীয় পর্যায়টি শুরু হয়েছে প্রায় সাত বছরের বিরতি দিয়ে ১৬৫২ সালে। জীবনের শেষ পর্যায়ের এসব প্রতিকৃতিগুলোকে রেমব্রান্টের জীবনের আঁকা শ্রেষ্ঠ চিত্রকর্মগুলোর অন্তর্ভুক্ত করে থাকেন অনেকেই।

কেন তুলি সেলফি?
নিজেকে সুন্দর করে অন্যের সামনে তুলে ধরার প্রবণতা মানুষের জন্মগত।এই প্রবণতা স্বাভাবিক এবং মানবিকও বটে। আর সেই চাহিদা থেকেই সেলফি।
২০১৩ সালে প্রকাশিত “সাইকোলজি অব সেলফিজ” নিবন্ধে গবেষক ক্রিস্টি বারলেট বলেন, “যারা বেশি বেশি সেলফি তোলে ও পোস্ট করে তাদের বেশির ভাগের মধ্যেই রয়েছে অন্যের মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টা এবং তারা কেউ কেউ ব্যক্তিজীবনে অনেকখানিই একা ।”
অবশ্য এই নিবন্ধে মন্তব্য করা আরেকজন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, “নিজেকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে অন্যের কাছে তুলে ধরাটা নান্দনিক আর এতে কোনো সমস্যা নেই ।”
নানা অনলাইন মাধ্যমের বিশিষ্ট গবেষকদের উদ্ধৃতি দিয়ে সেলফির পক্ষে বেশ কয়েকটি যুক্তি প্রকাশ করা হয়। যেমন নিজেকে অন্যের কাছে তুলে ধরা যায়, আবার অন্যেরা আপনাকে কেমন ভাবছে তাও সেলফির মাধ্যমে জানা যায়। সামাজিকভাবে সম্পৃক্ত হতে সাহায্য করে সেলফি। নিজেকে একজন মানুষ যতটুকু মনে করে সে যে তার চাইতে আরও বেশি বড় তা সেলফির মাধ্যমে প্রমাণ হতে পারে, হতে পারে দ্রুত যোগাযোগের বিকল্প। ‘আমার এই পোশাকটি কেমন’ সঙ্গে সঙ্গে সে অনেকের মতামত পেয়ে যায়, অন্যের কাছে স্বীকৃতি পাওয়ার মাধ্যমে সে তার চাহিদার সোপানের একধাপ ওপরে উঠে যেতে পারে, মনোবল বেড়ে যায়, সাজানো-গোছানো ফরমায়েশি ছবির চেয়ে সেলফি অনেক বেশি বাস্তবসম্মত ও প্রাকৃতিক। এতে প্রকৃত মানুষটিকে চেনা যায়, পর্যায়ক্রমিক সেলফির মাধ্যমে একজন মানুষের রুচি ও মানসিকতার পরিবর্তনও অনুসরণ করা যায়।

সেলফির সমস্যা কী?
যুক্তরাজ্যের ড্যানি বোম্যান বড় ধরনের সমস্যায় পড়েছিলেন সেলফি নিয়ে। চলতি বছরের মার্চে ডেইলি মিরর-এ প্রকাশিত তথ্যে জানা যায়, ১৯ বছর বয়সী বোম্যান মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের বড়ি খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন—যার কারণ সেলফি! তিনি তিন বছর আগে থেকে সেলফি পোস্ট করেন। কিন্তু তাঁর চেহারার বিষয়ে বন্ধুদের বক্রোক্তি নিয়ে তিনি বিচলিত হন এবং বছর দুয়েক ধরে প্রতিদিন গড়ে ২০০টি সেলফি পোস্ট করতে থাকেন, এর জন্য দিনে গড়ে ১০ ঘণ্টার মতো সময় ব্যয় করতেন। সেলফি না তুললে তাঁর তীব্র উৎকণ্ঠা হতে থাকত। একপর্যায়ে সুন্দর একটি সেলফি দিতে না পারার যন্ত্রণায় তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
উদ্ধারের পর মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা জানান, বোম্যানের বডি ডিসমরফিক ডিসঅর্ডার ও অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার নামের মানসিক সমস্যা রয়েছে। লন্ডনের মোউস্ডলে হাসপাতালের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ভিয়ালে মন্তব্য করেন, সম্প্রতি সেলফিকেন্দ্রিক মানসিক সমস্যা নিয়ে তরুণ-তরুণীরা হাসপাতালে আসছে। গত বছরের এপ্রিলে সাইকোলজি টুডে-তে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে মনোবিশ্লেষক ড. পামেলা রূটলেজ সেলফির কারণে মানুষের আত্মবিশ্বাস কমে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন। তিনি মনে করেন, বেশি বেশি সেলফি পোস্ট যারা করে তারা মূলত একাকী ও তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস কম। আত্মপ্রেম বা নার্সিসিজমের সঙ্গেও সেলফির যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করেছেন গবেষকেরা। কোনো কোনো গবেষকের মতে, নার্সিসিস্টিক ব্যক্তিত্বের সমস্যার সঙ্গে মাত্রাতিরিক্ত সেলফি তোলার সম্পর্ক রয়েছে। এ ধরনের ব্যক্তিত্বের সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন তাঁরা নিজের গুরুত্ব, ক্ষমতা, সৌন্দর্য নিয়ে সব সময় আচ্ছন্ন থাকেন ও সেগুলোকে লালন ও প্রচার করতে আগ্রহী হন। এই বিবেচনায় এঁরা মাত্রাতিরিক্ত সেলফি ব্যবহার করতে পারেন বলে ধারণা করা হয়। সেলফির কারণে অনেক সময় ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হতে পারে, এটি প্রতিরোধে পারস্পরিক বোঝাপড়াটা জরুরি। অনেক সময় সেলফি তুলতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে—সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজায় চলন্ত গাড়িতে সেলফি তোলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবুর্গে জেনিয়া নামের এক তরুণী এ বছরের এপ্রিল মাসে তার ১৮তম জন্মদিনে একটি রেলব্রিজের ওপর ঝুঁকিপূর্ণ সেলফি তুলতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

সেলফি নিয়ে থাকতে পারে বিতর্ক। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের বিপ্লবের এই যুগে সেলফিকে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। সেলফি তুলুন, পরিমিতভাবে।
আত্মবিশ্বাসী হোন, প্রকৃত নিজেকে সামনে এগিয়ে নিয়ে আসুন। নিজেকে অপরের কাছে মেলে ধরুন আপনার কাজ আর ভাবনা দিয়ে—সেই প্রক্রিয়ায় সেলফিও থাকবে কিন্তু পরিমিত পরিমাণে, শিষ্টাচারের মধ্যে থেকে।
সেলফির শিষ্টাচার কি?
 আপনার সেলফিতে অন্যের মুখাবয়ব চলে এলে তার অনুমতি নিন।
 সামাজিক রীতি ও প্রচলিত আইন মেনে ছবি তুলুন।
 নিজের ও অপরের নিরাপত্তার দিকে মনোযোগ দিয়ে ছবি তুলুন ও পোস্ট করুন, অযথা ঝুঁকি নেবেন না।
 অপরের প্রতি সম্মান দেখান, হাস্যরসের নামে অশালীনতা যেন না প্রকাশ পায়।
 অন্যের সেলফিতে কটু ও ব্যাঙ্গাত্মক মন্তব্য করবেন না।
 সেলফি তোলার সময় আশপাশের মানুষ যেন বিরক্ত না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।
 দলবেঁধে সেলফি তোলার সময় অপরের চলার পথ বন্ধ করবেন না।
 ভাবগম্ভীর অনুষ্ঠানে সেলফি তোলা থেকে বিরত থাকুন।
 সেলফির কারণে অপরের সঙ্গে বিবাদে জড়াবেন না।
 সেলফি তোলা, পোস্ট করা ইত্যাদি আপনার কাজ, পড়ালেখা, চাকরি ও প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটানোকে বিঘ্নিত করছে কি না, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০১৬ ভোর ৬:৫১
৬টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস-পরীক্ষার হলে দেরিঃ পক্ষ বনাম বিপক্ষ

লিখেছেন BM Khalid Hasan, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



বর্তমানের হট টপিক হলো, “১ মিনিট দেরি করে বিসিএস পরীক্ষার হলে ঢুকতে না পেরে পরীক্ষার্থীর স্বপ্ন ভঙ্গ।” প্রচন্ড কান্নারত অবস্থায় তাদের ছবি ও ভিডিও দেখা যাচ্ছে। কারণ সারাজীবন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

×