somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"হুজুর আমাগো ধোঁকা দিছে"--- সত্যই মায়া হয় এই অসহায় এতিম শিশুদের জন্যে।

০৭ ই মে, ২০১৩ ভোর ৫:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আবদুস সালাম বলে, 'মাদ্রাসার হুজুর আমাগো ধোঁকা দিছে, মিছা কথা কইয়া ঢাকা আনছে। হুজুরের কথায় আর আসুম না।' আমিনুল বলে, 'হুজুর কইছে ঢাকায় বড় ওয়াজ মাহফিল হইব আর আমরা বইসা শুধু শুনমু। হুজুরের কথায় মাদ্রাসার দেড় শ ছাত্র আমরা ঢাকায় আসি, কিন্তু ঢাকায় আইয়া দেখি একেবারে যুদ্ধ লাইগা গেছে। একটুর লাইগ্যা মাথায় গুলি লাগে নাই।' সোহেব নিজের পিঠে লাঠির আঘাতের চিহ্ন দেখিয়ে বলে, 'অল্পের জন্য বাইচ্যা আইছি। আমরা কিছু করি নাই, আমাগো লগের অনেকেই পুলিশের ওপরে ঢিল মারছে, দোকানপাটে আগুন দিছে।'

শিশুদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহারঃ হেফাজতের নেতারা মাদ্রাসার ছোট ছোট শিশুকে সমাবেশ ও অবরোধ কর্মসূচিতে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মাদ্রাসাছাত্ররা অভিযোগ করে, ঢাকায় নিয়ে আসা হলেও অনেককে দুপুরের খাবার খেতে দেওয়া হয়নি। অনেকেই বিস্কুট, চিঁড়া খেয়ে দিন পার করেছে।


ছবিঃ সংঘর্ষ চলাকালীন পুলিশের আশ্রয়ে অসহায় এক কিশোর

ডেইলি ইত্তেফাকের এক সাংবাদিক এই ছবিটি তুলেছেন। ছবিটি শেয়ার করার পরে তার কাছ থেকে জানা গেছে এই মাদ্রাসায় পড়ুয়া ছেলেটি ভয় পেয়ে পুলিশ ভাইটার পিছনে এভাবে আঁকড়ে ধরে ছিলো। সাংবাদিক অবাক হয়ে দেখেছেন যে পুলিশ হুই হুই দৌড়া দৌড়া বলে তাড়িয়ে দিচ্ছিলো, কিন্তু প্রায় মিনিট খানেক সময় এই ১৪/১৫ বছরের ছেলেটিকে তার পিছনের আশ্রয় থেকে তাড়িয়ে বা সরিয়ে দেয়নি।

নরসিংদীর বেলাব বাজার হাফিজিয়া মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলে, "আর ঢাকা শহরে আসব না। ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে ওয়াজ মাহফিলের কথা বলে আমাদের আনা হয়, কিন্তু নিজের চোখেই দেখলাম হেফাজতের লোকজনই বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনের দোকানগুলোতে আগুন দিল। সেই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল শত শত ইসলামী বই ও অনেক কোরআন শরিফ। এটা আমি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না।"


ছবিঃ আল্লাহ রসুলের পাক কালামও ওদের সহিংসতার হাত থেকে রক্ষা পায়নি।

ভেবে দেখুন তো একজন "বিধর্মী" "নাস্তিক" যাই বলেন, এইকাজ করেছে? কোথায় আপনার ধর্মঅনুতি এখন??

ওই মাদ্রাসার আরেক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলে, "যাদের ডাকে নাস্তিকদের বিরুদ্ধে ঢাকায় এসেছি কর্মসূচিতে, সেই তারাই যদি কোরআন শরিফে আগুন দেয় তাহলে এরা কেমন লোক! হেফাজতের ডাকে আর ঢাকায় আসব না।"

শাপলা চত্বরের সমাবেশ থেকে দাউদকান্দি ফিরে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাদ্রাসাছাত্র বলে, 'দাউদকান্দির ২০টি মাদ্রাসা থেকে প্রায় আট/নয় শ ছাত্র-শিক্ষক সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন। প্রতিটি মাদ্রাসার মোহতামিম (অধ্যক্ষ) ও শিক্ষকরা ভয়-ভীতি দেখিয়ে তাদের ঢাকায় নিয়ে গেছেন। তবে ঢাকায় নেওয়ার পর তাঁরা আর কোনো খোঁজ-খবর রাখেননি। আবার উত্তেজনার সময় এসে হাতে লাঠি ধরিয়ে দিয়ে পুলিশের সঙ্গে মারামারি করার নির্দেশ দিয়ে আমাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেন তাঁরা। শিক্ষকদের কথা শুনে আমরা শত শত নিরীহ ছাত্র হতাহত হয়েছি। অনেকে গুলি খেয়ে নিহত হয়েছে, আবার অনেকে গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে।'


ছবিঃ আহত ব্যাক্তিটির সেবা করছেন র‍্যাব সদস্যরা, অথচ এই ছবিই ব্যাবহার করা হয় যখন সে শুয়ে ছিল তখন ক্যাপশনে মৃত জুড়ে দিয়ে।

এই হচ্ছে বাস্তবতা!! হেফাজতের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ মাদ্রাসাছাত্রেরই বয়স ১৮ বছরের নিচে। অনেকের মা-বাবাও জানেন না তাঁদের সন্তানদের ঢাকায় হেফাজতের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার কথা। অনেক মাদ্রাসাছাত্র জানায়, আল্লাহ ও রাসুলের (সা.) বিরুদ্ধে যারা মাঠে নামছে, তাদের বিরুদ্ধে ওয়াজ মাহফিলে বক্তৃতা দেওয়া হবে- এমন কথা বলেই শিক্ষকরা তাদের ঢাকায় নিয়ে আসেন।

------------- -------------- --------------- -----------------
এদের জন্যে নিতান্তই খারাপ লাগে। কিছুই করার ছিল না ওদের। শুধু অসহায়ের মতো নিয়তির হাতে মার খেয়েছে!! খবই দুঃখজনক।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মে, ২০১৩ ভোর ৫:১২
১২টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×