![]()
বিশ্বের মোটামুটি সব দেশেই এমন কালচার রয়েছে, বিলবোর্ড বা অন্যান্য প্রচার সরঞ্জাম ব্যাবহার করে রাজনৈতিক প্রচারনা চালানোর। আওয়ামীলীগ তা চালালে দোষের কি আছে ঠিক বুঝে পাইনা। ভোট পেতে নিজেদের কাজগুলোর সারমর্ম তুলে ধরাটাই বরং অত্যন্ত স্বাভাবিক! অনেক দেশে আবার এরকম সংস্কৃতি নেই, সে হিসেব করলে বাংলাদেশে এটা কিছুটা অভিনব হয়ত। রাজনৈতিক নেতা নেত্রীর মৌখিক বক্তৃতার চেয়ে অবশ্যই বেশী কার্যকরী পদ্ধতি এটি!! তাই লীগকে স্বাগত জানাই এই ধরনের উদ্যোগ দেয়ার জন্য।
কিন্তু যে একটা বিষয় আমার খটকা লাগছে, সাধারন গ্রামের মানুষ, তৃনমূলের ভোটারদের কি হবে? যতদূর জানতে পারলাম, বিলবোর্ড প্রচারণা শুধু বড় বড় শহর, যেমন ঢাকা কেন্দ্রিক! আমার ধারনা ভোটার তৃনমূলেই বেশী যাদের চিন্তাভাবনা মেনুপুলেট করা খুবই সহজ। যাদেরকে বছরের পর বছর জামাত শিবির কানপড়া দিয়ে দিয়ে লীগকে 'নাস্তিক সরকার' বানিয়ে (!) ছাড়ছে! তাদের ভুল ধারনা ভেঙে দেবার জন্য ব্যবস্থা নিলেই বলতে পারবো হ্যাঁ, প্রচারের মতো প্রচারই হচ্ছে।
আর লীগকে মিথ্যা বলে প্রচার করতে হবে না কিছুই, বিএনপির মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির বিপরীতে সত্য ও সহজ পথই হোক লীগের পথ চলা এটাই কামনা করি। তাই সত্য মুখেই হোক বা বিলবোর্ডে, সত্য কখনই মিথ্যা হয়ে যায় না! বিএনপির সৎ সাহস থাকলে তারা নিজেদের কর্মকান্ডের ফিরিস্তি নিয়ে এগিয়ে আসুন! খাম্বা বাবা বিদ্যুৎ খাত নিয়ে কম্পারিজন করতে পারেন, সব সময়ের জন্যই ওয়েলকাম। দুর্নীতির গভীরতম খাদে দেশকে ফেলে দেয়ায় চ্যাম্পিয়নরা পারলে তুলনা করুণ সেখানেও!? এক পদ্মা সেতুর গান আর কতোদিন? দুর্নীতি আজও প্রমানও হলো না চোখেও দেখলাম না কোন প্রমান! শুধু বাঁশের কেল্লার মুমিনদের(!) আর ছুপা ছাগুদের মুখেই শুনি সেই বাতাসার গল্প যার অস্তিত্ব বাস্তবে খুঁজে পাই না। আর জিডিপি, রাস্তাঘাট ও অবকামঠামোর ব্যাপক উন্নতিও ছাড়িয়ে গেছে আগের যে কোন সময়ের রেকর্ড।
![]()
![]()
ছবিঃ সড়কপথ উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।
ব্যাক্তিগত কাজে সাময়িকভাবে ফিরে যাওয়া সজীব ওয়াজেদ জয় নিয়েও একটি বিশেষ মহলকে আতংকিত দেখাচ্ছে। এতোই আতংকিত যে তাদের পোষা কুকুরকে দিয়ে অনালাইনে হুমকি দেবার মতো হাস্যকর কাজেও নেমেছে তারা। কিন্তু কেন? কারণ কি শুধু এটাই যে ভয়াবহ দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, খাম্বা বাবা, হাওয়া বাবার বিপরীতে নিতান্তই পরিষ্কার ইমেজের একজন মানুষ দেশের জন্য কাজ করতে চায়? যেখানে সেই রাজপুত্তুরকে আজকেও অনলাইনে চোর-বাটপার (দুষ্টুজন অমুক চোরাও বলে থাকেন) বললে এমনকি হার্ডকোর বিএনপির সমর্থকরাও গালাগালি ছাড়া কোন বাস্তব প্রমান বা যুক্তি দেখাতে পারে না সেখানে জয়ের দেশের প্রতি যেমন কোন বিশেষ ভূমিকা নেই তেমনি দুর্নীতিতেও নেই কোন অংশগ্রহন। তরুণদের মাঝে কি পরিমান জনপ্রিয়তা রয়েছে তার সেটা এই কদিনেই দিবালোকের মতো পরিষ্কার হয়ে গেছে। সজীব ওয়াজেদ জয় হতে পারেন আওয়ামীলীগ তথা দেশের রাজনীতিরই নতুন এক ব্র্যান্ডনেম! হ্যাঁ এটা মেনে নিতেই হবে এ অঞ্ছলের রাজনীতির ভয়াবহ নোংরামীর সাথে তার সার্বিক পরিচয় যেমন নেই তেমনি এর কুটিলতা সামলে উঠতেও প্রয়োজন হবে সময়ের, কিন্তু ওই যে, পরিষ্কার ইমেজ? সেটাই তাকে দিচ্ছে অনেক বড় এডভান্টেজ।
রাজনীতির মাঠের বড় খেলোয়াড় জামাত-শিবির-রাজাকারদের ‘তথাকথিত হারানোর’ পরে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীর সাহাজ্য প্রার্থনা সহ জামাতে ইসলামী পাকিস্তানের জামাত নিষিদ্ধের প্রতিবাদে সক্রিয় হওয়া আবার আমাদের সজাগ হতে বলছে সেই পুরোনো আশংকাটির বিষয়েই! আবারও কি ফিরে আসবে সেই বোমাতঙ্ক? ফিরে আসবে বাংলা ভাই কিংবা সায়খ আব্দুর রহমানের মতো কোন ফ্রাংকেস্টাইন? জামাত যদি আন্ডারগ্রাউন্ডে থেকে দেশে অস্থিতিশিলতা সৃষ্টির চেষ্টা চালায় বিএনপির এ ক্ষেত্রে ভূমিকা কি রকম হবে তাও কিছুটা কনফিউজিং! তবে দৃশ্যমানভাবেই জামাত শিবির এর সাথে দেশের সমস্ত নিষিদ্ধ ঘোষিত ও কোনঠাসা জঙ্গি সংগঠনগুলো হাত মিলিয়েছে। তাদের একটিভিটি যে রকম প্রচণ্ড শান্ত হয়ে এসেছে তা বড় ঝড়েরই পূর্বাভাস, দেশ নিয়ে নির্মম কোন খেলারই নীল নকশা আঁকতে ব্যাস্ত এখন তারা এ কথা হলফ করে বলা যায়। যত মৃত্যু ক্ষমতায় যাবার পথ ততও প্রশস্ত হবে কিনা! সব সময়ে বিরোধীতা করে আসা আরেক
ধর্মব্যাবসায়ী ও জঙ্গি সম্পৃক্ততা থাকা ইসলামিস্ট গ্রুপ তথাকথিত হেফাজতে ইসলাম এর নামে এখন জামাতকেই সমর্থন দিয়ে চলেছে, যা মুলত একটি ভয়াবহ মৌলবাদী ও জঙ্গি সক্রিয়তার দেশ এর অশনি সংকেতই দিচ্ছে এই মুহূর্তে।
![]()
ছবিঃ "এসো ভুলে যাই - কাদের মদদে এসব হচ্ছিল!"
এসবকে পাশে রেখেও বলাই যায়, জামাতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার সাহসী সিদ্ধান্তে সাথে থাকার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামীলীগকে কোটি ধন্যবাদ। এ ছিল প্রানের চাওয়া। যেমন ছিল রাজাকারদের বিচার এর বিষয়টা। সেক্ষেত্রে কখনও কখনও আশাহত হতে হয়েছে বটে। কিন্তু বাস্তবতা মেনে না নিয়ে কিছু করারও নেই। সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত আদালতই দেয়, সরকার তার আওতায় থাকা সবটাই করেছে বলেই দৃশ্যমান হয়। আর আরও রুঢ়তর বাস্তবতা হচ্ছে, জামাত নিষিদ্ধ, ঘৃণ্য রাজাকারদের বিচার এবং সর্বোচ্চ শান্তির মতো বিষয়গুলো বিএনপির আমলে কোনদিনই সম্ভব হতো না। আর সিদ্ধান্ত কার্যকরী অবশ্যই হবে যদি সরকার এর সদিচ্ছা নাও থাকে কারণ উচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপের পরে আর কারো কিছু কি আদৌ করার থাকে?
প্রশ্ন তবু থেকে যাবে, মাঠে যাদের বিচার রুখতে বিএনপি যান দিয়ে দিয়েছে তাদেরকে কি ফাঁসিতে ঝুলতে দেবে? কতো নির্লজ্জভাবে শাসকেরা এই দেশে ক্ষমতার অপব্যাবহার করেছে অতীতে সে বলাই বাহুল্য!
বিষয়গুলো ভেবেই সিদ্ধান্ত নিন, আপনি আওয়ামীলীগ করেন, বিএনপি করেন বা অন্য কিছু, সব শেষে আপনি একজন বাংলাদেশী, দেশের মঙ্গলের দিকেই তাকানো আপনার নাগরিক কর্তব্য! নৈর্বেক্তিকভাবে একবার অপশন এ আরেকবার অপশন বি চাপার সংস্কৃতি আঁকড়ে থাকলে শুধু চলবে না, ভাবতে হবে দেশটাকে নিয়ে, ভাবতে হবে দেশপ্রেমের যায়গা থেকে।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:০৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




