আগের পর্ব
এরশাদের শাসন আমলে বাংলাদেশে হেরোইনের প্রসার। ঢাকায় শুরুতে এই হেরোইনের বিক্রিটা সীমাবদ্ধ ছিলো অল্প কিছু জায়গায়। আসক্তদের মধ্যে চালু রসিকতাটা ছিলো- রাজার নেশা কিনতে যাইতে হয় ফকিরনিগো কাছে। মোহাম্মদপুর টাউন হল, জেনেভা ক্যাম্প ও মীরপুর-বিক্রেতারা সব বিহারী। বিশাল বস্তিগুলোতে সহজলভ্য হওয়ার আগ পর্যন্ত এগুলোই ছিলো ডেন। এবং পরেরদিকে পাইকারি আড়ত। অদ্ভুত সব কায়দায় এদেশে হেরোইন ঢুকতো। বিমানবন্দরে যেসব বড় চালান ধরা পড়েছিলো তার মধ্যে ছিলো চাঞ্চল্যকর মাধ্যমের কয়েকটি ছিলো টুথপেস্ট, বিদেশী পুতুল, সিগারেটের কার্টন। (১০)
বলা হয়ে থাকে বড় চালান পার করার জন্য এসব কয়েক কেজির চালান ইচ্ছে করেই ধরিয়ে দেওয়া হতো। বাহক হিসেবে বহু পাকিস্তানী এখনও ঢাকা কারাগারে পচে মরছে। পরে এ তালিকায় যুক্ত হয়েছে আফ্রিকান কিছু যুবক যারা স্রেফ টাকার লোভে পাকিস্তান থেকে এসব নিয়ে এদেশে আসতো। স্মরণে পড়ছে চট্টগ্রামে জাহাজে করে একটি বিশাল চালন আটকের কথা, যার নেপথ্যে রওশন এরশাদ এবং জনৈক কানা ফকিরের যুক্ত ছিলো বলে শোনা যায়। জাহাজটি ছিলো সালা্হউদ্দিন কাদের চৌধুরীর। (১১)
বাংলাদেশ জামাতে ইসলামীর সঙ্গে শুরুতেই এই মাদক ব্যবসায় সংশ্লিষ্ঠতার প্রমাণ মেলেনি। তবে চোরের সাতদিন গৃহস্থের একদিন। ২০০৬ সালের মে মাসে যুক্তরাজ্যে সাড়ে ২২ কেজি হেরোইন পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় বদরুদ্দোজা চৌধুরী নামে এক ব্যক্তিকে। বিডি ফুডস নামে একটি কোম্পানির এই মালিক জামাতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তার ছেলে হাসান শাহরিয়ার চৌধুরী দৈনিক নয়া দিগন্তের পরিচালক মন্ডলীর সদস্য এবং দিগন্ত টিভিতেও তার অংশীদারিত্ব রয়েছে। সবজী, টিস্যু পেপার, কসমেটিকসের মধ্যে করে এসব হেরোইন পাচার করতো তার কোম্পানি। চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে তারা এসব চালান নিয়ে আসতো। এই পাচারে ব্যবহার করতো এমদাদ ট্রেডার্স এবং জামিল ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং কোম্পানি নামে দুটো ভুয়া কোম্পানিকেও। (১২)
(চলবে)
সূত্র :
১০/১১ : ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা
১২ : Click This Link
Click This Link