আরেফিন রুমী’র মা গানটা প্রথম শোনার সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলাম খুব, সেই সময়েই পড়ছিলাম তসলিমা নাসরিনের ‘নেই কিছু নেই’ বইটি। তসলিমার বই পড়া হয়নি আগে, প্রথম তার বই পড়ে মুগ্ধ হচ্ছিলাম। মাকে নিয়ে তার নিজের অবহেলার কথাই লিখেছেন পুরো বইয়ে। মাকে নিয়ে অব্যক্ত কথা গুলো লিখে ফেলেছেন অবলীলায়, মার জন্য সুপ্ত ভালবাসা জেগে উঠেছে মা যখন গত। বইটি পড়ার সময় প্রতিটি মুহুর্তে মনে হয়েছে আমরাও কি মা’কে প্রতিদিন অবহেলা করছিনা এভাবেই! বই পড়তে পড়তে, আরেফিন রুমী’র গান শুনতে শুনতে যখন আচ্ছন্ন সেই সময়েই খবর পেয়েছি মা আমাকে দেখতে ঢাকায় আসবে।
মা’কে তুই সম্বোধন করেই অভ্যস্ত হয়েছি ছোটবেলায়। মায়ের কথার অবাধ্য হইনি কখনো তবু কেন জানি কখন একটা দুরত্ব তৈরি হয়েছে, দুরত্বটা এমন নয় যে মাকে সবকথা বলতে পারিনা, ছোটবেলার মত সব আবদার মার কাছে করতে পারিনা। এসব ঠিকই আছে কিন্তু উচ্ছ্বাস প্রকাশের সাবলীলতা হারিয়েছি। আমার খুব ইচ্ছে করে অনেকদিন পর বাড়িতে গিয়ে যখন মাকে দেখি জড়িয়ে ধরে চুমু খাই, অথচ কেমন আছে এ কথাটি বলাই অস্বাভাবিক মনে হয়, হয়তো জিজ্ঞেস করি বাবা কোথায়। বয়স কতটা বেড়ে গেছে অথচ আমি জানি মনটা এখনো কতটা শিশু আমার। তাইতো সময় পেলে সেই আগের মতই রান্নার সময় চুলার পাশে বসে থাকি, অকারনেই জেরা করি এটা কি, এটা কেন? মা বিরক্ত হয় না অথচ অকারনে মা কোন প্রশ্ন করলেই কতটা বিরক্ত হই জানি আমি। রংপুরে গেলাম, ঝিল্মিলদের বাসায় গেলাম কিনা এটা তাকে জানতেই হবে! কিন্তু সন্ধ্যা হলে আমারই শুনতে ইচ্ছে করে ছোটবেলায় যে গজল আমাকে শোনাত মা(কিসে হব পার, ফুলসেরাতের রাস্তা হবে সওয়াত্তুর হাজার,চুলের মত ধার), এখন কি মা আমাকে শোনাবে সেই করুন সুরে! একবার যদি শোনাত, যদি রেকর্ড করে রাখতে পারতাম!
তসলিমা নাসরিনের মা তাকে দেখতে সুইডেন গিয়েছিলেন। তিনি তার মাকে একটি জার্মান শ্যাম্পু ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন। মার চুল দেখে সেই শ্যাম্পুর প্রশংসা করেছিলেন অনেক। মা যখন দেশে ফিরে আসে তখন তিনি একদিন বাথরুমে গিয়ে দেখলেন শ্যাম্পুর বোতল ভরাই আছে মা ব্যবহার করেন নি। পরে দেখলেন যে সেটা শ্যাম্পু ছিল না ছিল কন্ডিশনার। জার্মান ভাষা বোঝেন না জন্য না জেনেই শ্যাম্পু ভেবে কন্ডিশনার ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন মাকে। তিনি নিজেও ব্যবহার করেছেন জার্মান শ্যাম্পু তার বেলায় তো ভুল হলো না মাকে দেওয়ার সময় কেন এই ভুল হলো? এই রকম ছোট বিষয় গুলোও তার বইটিতে অনেক সূক্ষভাবে তুলে ধরেছেন। বইটি পড়ার সময় থেকেই ভাবছি মা’কে নিয়ে একটা লেখা লিখব, অথচ অনেকবার লিখতে বসেও কিছুই লিখতে পারিনি। আজও পারলাম না মাকে নিয়ে অব্যক্ত ভালবাসার কথা গুলো দিয়ে শব্দের মালা বানাতে। সবার জন্য আরেফিন রুমী’র এই গানটি মা দিবসের শুভেচ্ছা
পৃথিবীর একপাশে মাকে রেখে
অন্যপাশে মাকে রাখি,
পৃথিবীর সবকথা ভুলে গিয়ে
ব্যাকুল প্রাণে মাকে ডাকি।
জীবনের সবখানে সব গানে
মাকে ছাড়া জীবনের নেই মানে।
মা’হীন এলোমেলো হৃদয়ে
আর কোন ঠিকানা কেউ কি জানে………
মায়েরই মুখ দেখে দুঃখ ভুলি
মায়েরই আঁচলে জীবন গুজি
যখনই দূরে যাই আড়ালে থাকি______________________
ডাউনলোড লিংক
পৃথিবীর সব মা ভাল থাক।
আলোচিত ব্লগ
চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

আমাদের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে লেখাটি সে বিষয়ে। এখানে এক শিম্পাঞ্জির কথা উদাহরণ হিসেবে টেনেছি মাত্র।
ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে... ...বাকিটুকু পড়ুন
ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন
=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।
আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?


৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন
এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।