somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চেয়ে চেয়ে দেখলাম তুমি চলে গেল!!

২৯ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১০:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঠিক এই মুহুর্তে সজিবকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছা করছে । মনে মনে বললাম দোস্ত তুমি যেই উপকারটা করলা এইটা আমি সারা জীবন মনে রাখবো ।
সজিব আবার বলল "কি কোন সমস্যা আছে নাকি" ?
আমি বললাম "আরে না না সমস্যা কিসের ? কোন সমস্যা নাই" ।
মীম এবার পিছন ফিরে তাকাল । বলল "সত্যিই কোন সমস্যা নাই তো ? দেখো আমার জন্য কিন্তু শুধু কষ্ট করে বাস থেকে নামার দরকার নাই" ।
আমি আবার মনে মনে বলি তোমার জন্য এই বাস থেকে কেন টাইটানিক থেকে নেমে পড়তে পারি !! কিন্তু বলতে পারি না ।
মৃদু হেসে বললাম "সমস্যা নাই । আমার যে বাসে উঠবো সেটা গুলিস্তান থেকেই যাবে । এখান থেকে উঠলে যা শাহবাগ থেকে উঠলেও সেই একই কথা" ।
আমার কথা শুনে মীম একটু হাসল ।
"আচ্ছা Thank you" ।
আমি মনে মনে হাসি । ভাবি যদি তুমি জানতে আসল কথা তাহলে আর এই ধন্যবাদ দিতে না ।
তোমার সাথে হেটে বিআরটিসির কাউন্টার পর্যন্ত যাওয়া টা আমার কাছে কতটা আনন্দের তা তুমি কল্পনাও করতে পারবা না ।
মুল বিষয় হল ভার্সিটি থেকে ফিরছিলাম । বাসের মধ্যে ক্লাসের অনেকেই ছিল । মীমও ছিল । আহ ! :-D:-D মীম ।
সজিবের সাথে কথা বলতে বলতে মীম বলল যে ওর উত্তরায় যেতে হবে । গুলিস্তান থেকে বিআরটিসির বাস ধরতে হবে ।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে মীম বিআরটিসির কাউন্টারটা চেনে না ।
ভাগ্যিস চেনে না !! চিনলে তো আর আমি কোন উছিলায় ওর সাথে নামতে পারতাম না ।
আমি বললাম "গুলিস্তানে নেমে একটু হেটে গেলেই পাবা" ।
মীম বলল "কোন দিকটাতে ? ডানে নাকি বায়ে" ?
আমি কিছু বলতে যাবো সজিব বলল "আরে অতো চিন্তা করছিস কেন ? অপু তোর সাথে যাবে ! ও চিনিয়ে দেবে" ।
কিন্তু মীম বলল "ও তো শাহবাগ নামবে" ।
সজিব বলল "আরে সমস্যা নাই । ওর সব বাস এই রাস্তা দিয়েই যায় । তাই না" ?
তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল "কোন সমস্যা আছে নাকি" ?

মীমকে আমি সেই ভার্সিটির প্রথম দিন থেকে পছন্দ করি । বলা চলে প্রথম দেখা থেকেই । ওর হাসি আমার কাছে খুব পছন্দের ছিল । ছিল মানে এখনও পছন্দের ।
আর ওর কথা বলার স্টাইল । ওর কন্ঠস্বরটা খুব মোলায়েম । আর খুব আস্তে আস্তে কথা বলে ও । এটাও আমার অনেক ভাল লাগে আমার ।
প্রথম দিকে ওর কোন বয়ফ্রেন্ড ছিল না । আমি ভেবেছিলাম আর কিছু দিন যাক তারপর ওকে প্রোপজ করবো ।
কিন্তু হায় !!/:)/:)
আমার কপাল খারাপ । ফাষ্ট ইয়ার পার হতে না হতেই শুনলাম কোথ্থেকে যেন এক বয়ফ্রেন্ড এসে জুটেছX(X(ে ।
কি আর বলব !
আমার না বলা কথা গুলো না বলাই রয়ে গেল । ও হয়তো কোন দিন জানতেও পারবে না আমার মনের কথা গুলো ।
কিন্তু ওর প্রতি মিষ্টি অনুভূতিটা মরে যাই নি । ও আসেপাশে থাকলে আমার মনটা আপনা আপনি ভাল হয়ে যায় ।
আর আজ তো সোনায় সোহাগা । ওর সাথে হাটতে পারবো ! ওয়াও !!

একটু পরেই বাস গুলিস্তান চলে আসলো । সজিবের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নেমে পড়লাম ওকে নিয়ে ।
মীম টুক টুক করে হাটছে । আমি কখনও ওর পেছনে আবার কখনও ওর পাশে হাটছি ।
এই এলাকাটা আমার মোটেই পছন্দ না । এতো মানুষ চারিধারে । এই জন্য পারতপক্ষে আমি এখানে নামি না । কিন্তু আজকের ব্যপারটা ভিন্ন । আজকেই মানুষের ঢল আমার কাছে মোটেই বিরক্তিকর লাগছে না । হকারদের প্যানপ্যানানী গাড়ির হর্ণ ড্রেনের দুর্গন্ধ সব কিছুই আজ আমাকে মুগ্ধ করছে । কারন মীম আমার সাথে রয়েছে ।
"মীম" ! আমি ডাক দিলাম ।
"কি বল" ?
বললাম "খুব খিদে লেগেছে । ঐখানে খুব ভাল সিঙ্গাড়া আর জিলাপী পাওয়া যায় । এস খাওয়া যাক" ।
ও একটু নাহু নাহু করল কিন্তু রাজি হল ।
দোকানটাতে খুব ভীড় ছিল । তাই আলাদা প্লেটে না দিয়ে একই প্লেটে দিল সব কিছু ।
ও যখন সস লাগিয়ে সিঙ্গাড়া খাচ্ছিল আমি এক ভাবে ওর দিকে তাকিয়ে ছিলাম । আর ও যেখান থেকে সস নিচ্ছিল আমি ইচ্ছা করে ঠিক ঐ জাগাতেই সিঙ্গাড়ায় সস নিচ্ছিলাম । প্লেট একই হবার কারনে মাঝে মাঝে ওর হাতের সাথে আলতো করে আমার হাত লেগে যাচ্ছিল ।
ওয়াও ! :):):):):):)
খাওয়া শেষে যখন দোকান থেকে বের হলাম আমার কাছে মনে হল জীবনের বেষ্ট খাওয়া এটা ।
দোকান থেকে মাত্র পাঁচ মিনিটের দুরুত্ব বিআরটিসি কাউন্টারের । কেন যে এতো কাছে হল ।X((X((X((X((X((
দুতিন ঘন্টার দুরুত্ব হবে বেশ :):)
তাহলে ওর সাথে আরো বেশি সময় ধরে থাকতে পারতাম । হাটতে হাটতে মীম বলল "থ্যাঙ্কিউ" ।
"কেন" ?
"এই যে সিঙ্গারা খাওয়ালে" ।
আমি হাসলাম । বললাম "এতো ফরমাল কেন তুমি ? আমরা তো দুরের কেউ না । তিন বছর ধরে একই সাথে পড়া শুনা করছি । দুএকটা সিঙ্গাড়ার জন্য থ্যাঙ্কিউ না বললেই কি হয় না" !
মীম হাসল । ততক্ষন কাউন্টারে পৌছে গেছি । কাউন্টারে পৌছানোর পর মীম বলল "অপু এবার তুমি চলে যাও । এমনি দাড়িয়ে থাকার দরকার নেই । বাস এখনই চলে আসবে" ।
আমি বললাম "ঠিক আছে সমস্যা নাই ।তোমাকে বাসে তুলে দিয়ে তারপর যাই । আমার বাসও আসে নি । আর বাস এখনই চলে আসবে" । মনে মনে বললাম বাস যেন দুতিন ঘন্টার মধ্যে না আসে । হাহাহিহি:-D:-D:-D তাহলে দুতিন ঘন্টা ওর সাথে এখানে দাড়িয়ে থাকতে পারবো ।

কি মজা !;);););););)
কি মজা !;);););););)
কিন্তু হতচ্ছড়া বাসটা চলেই আসল ।X(X(X(X(
আশ্চার্য এমন ফাজলামি করার মানে কি ? :-@:-@ যে দিন বাস তাড়াতাড়ি আসার জন্য দোয়া করি সেদিন তার কোন খোজ নাই ।
আর আজ চাচ্ছিলাম বাসটা একটু দেরি করে আসুক কিন্তু ফাজিল বাসটা চলে এল ।
"আচ্ছা অপু যাই" ।
না না যেও না প্লিজ । প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেও না । বলতে চাইলাম । কিন্তু বলতে পারলাম না ।
মীম বাসের দিকে পা বাড়াল । ঠিক এমন সময় আমার মনের মধ্যে কেমন যেন একটা অনুভূতির সৃষ্টি হল । কষ্টের একটা অনুভূতি । এতোক্ষনের সব আনন্দের অনুভূতি গুলি ছাপিয়ে এই কষ্টের অনুভূতিটা আমার পুরো মনটাকে ঘিরে ফেলল ।
মীম বাসের দরজায় উঠে আমার দিকে তাকাল । হাত নাড়িয়ে টাটা দিল ।
আমিও ওকে বিদায় জানাতে হাত তুললাম । দেখি আমার হাত কাঁপছে ।
আশ্চর্য এমন কেন হচ্ছে !
ওতো আমার এমন কাছের কেউ না আর ওর সাথে তো আমার এমন কোন রিলেশনও তৈরি হয় নি ।
তাহলে আমার হাতটা কাঁপছে কেন ? আমি যখন কোন কিছু মেনে নিতে পারি না তখন সেই অনুভুতিটা আমার মাথা থেকে পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে । তারই জন্য আমার হাত কাঁপতে শুরু করে । আমার কষ্ট কেন হচ্ছে ?? আর এমন তো না যে সাথে আমার আর দেখা হবে না । তাহলে এমন কেন হচ্ছে কেন ???
ওর বাসটা আসতে আসতে দৃষ্টির আড়ালে চলে গেল । আমি একবুক কষ্টের অনুভুতি নিয়ে সেদিকে তাকিয়ে থাকি । অচেনা কষ্টের অনুভূতি ।
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×