somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিশি যে ভাবে আমার গার্লফ্রেন্ড হল !!!

২৬ শে এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৩:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-ভাইজান দাড়ান ।
জুম্মার নামাজ পড়ে আসছিলাম । গলির মোড়ে আসতেই এলাকার কিছু ছেলেপিলে আমাকে কেন জানি ঘিরে ধরল । আমি কারন কিছুই বুঝলাম না ।
আমি সাধারনত নিরিহ টাইপের ছেলে । কারো সাথেও নাই পাছেও নাও । এই ছেলে গুলোর সাথে আমার আবার কি কাজ !
আমি বললাম
-আমি ?
-জি আপনি ।
কালো পাঞ্জাবী পরা ছেলেটা বলল । হাতে একটা সিগারেট জ্বলছে ।
-বলেন ।
-এই দিকে আসেন । আপনার সাথে কথা আছে ।
এই বলে ছেলেটা আমাকে মোরের এক পাশে যেতে ইশারা করল । আমি খানিকটা ভয় পেলাম । ঢাকা শহরে নাকি এরকম ভাবে নাকি ছিনতাই হয় ।
কিন্তু এরা তো সবাই পাড়ার ছেলে । সারা দিন কাম নাই খালি মোড়ের মাথায় বসে বসে আড্ডা মারা । কিন্তু ছিনতাই করবে না এটুকু ভরসা আছে ।
ঠিক তখনই আমার মনে অন্য আর একটা সম্ভাবনা দেখা দিল । পেদানী দিবে না তো ? কিন্তু আমি এমন কোন কাজ তো কখনও করিই নি ।
তাহলে ?
মোড়টার একপাশে আরো কয়েকটা ছেলে ছিল । ঐ ছেলে গুলো মধ্যে রুমেল ছিল । পাড়ার মধ্যে এই ছেলেটার নাম কেবল আমি জানি । আমি যে বাড়িটাতে ভাড়া থাকি তার দুতিন বাড়ি পরেই এদের বাড়ি ।
নাম চেনার কারন হচ্ছে নিশি বলেছিল । নিশি আমাদের বাড়িয়ালার মেয়ে । সেদিন বিকাল বেলা ছাদে হাটছিল এমন সময় দেখলাম নিশিও ছাদে আসল ।
এমনিতে নিশির সাথে আমার খুব বেশি চেনা জানা নাই । ওর ছোট ভাইটাকে আমি ইংরেজি পড়াই সেই সুবাদে হাই হ্যালো বলি । এই পর্যন্তই ।
ছাদের থেকেই দেখলাম ঠিক দুই তিন বাড়ি পরে দুতিনটা ছেলে চিত্কার করে উঠল । ওদের চিৎকার করার কারন মনে হয় বুঝতে পারলাম । নিশিকে দেখে ওরা ওমন করছে । দেখলাম নিশি মুখটা কেমন বিরক্তিতে ভরে গেল ।
আমি বললাম
-আপনার পরিচিত ?
-পরিচিত ? ডিজগাসটিং ! আর সব থেকে বড় বিরক্তিকর ঐ রুমেল ছেলেটা ।
-কোনটা ?
-ঐ যে লম্বা ফর্সা করে ।
আমি রুমেল কে দেখলাম ।
-ভালই তো দেখতে !
আমি হাসলাম । নিশি কিছু বলল না । আমি বললাম
-সুন্দর মেয়েদের এই রকম টুকটাক সমস্যায় পড়তেই হয় ।
নিশি এই বারও কিছু বলল না । তবে ওর মুখে কেমন জানি একটা সুক্ষ হাসির রেখা দেখতে পেলাম । আসলে সুন্দরী কথাটা শুনতে সব মেয়েদেরই ভাল লাগে ।

-আপনি কতদিন এই এলাকায় আছেন ?
রুমেলই বলল কথাটা
আমি বাস্তবে ফিরে এলাম ।
-জি ?
-আপনি কত দিন এই এলাকায় আছেন ?
-এই বছর খানেক ।
রুমেল বলল
-আগামী মাসে এই এলাকা ছেড়ে চলে যাবেন ।
-জি ? কেন ?
ঠিক তখনই পিছন থেকে একজন আমার মাথায় বেশ জোরেই একটা থাপ্পর মারল ।
-যা বলেছি কর । তা না হলে হাত পা ভেঙ্গে দেবো ।
রুমেল বলল
-ভাল ভাবে বললাম । এরপর কিন্তু এতো ভাল ভাবে বলবো না । যান বাসায় যান ।
এই সময় পেছন থেকে ঐ কালো পাঞ্জাবী পরা ছেলেটা আবার আমাকে ধাক্কা মারল ।
-যান ভাগেন ।
আমি চলে এলাম । আসলে আমার কিছু করারই ছিল না । কিছু বলতে গেলেই মার খেতে হত । আমি কিছুতেই বুঝতে পারছিলাম না যে আমার সাথে এমনটা করার মানে কি ?
আমিতো এমন কিছু করি নি যে একেবারে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে হবে । ভাবতে খুব খারাপ লাগছে । খুবই আরামে ছিলাম এখানে । কিন্তু কিছু করার নাই ।
ওরা সব স্থানীয় ছেলে । আর আমি ভাড়াটিয়া । কিছু বলার উপায়ও নাই । কিন্তু এটলিস্ট কারনটা তো জানার অধিকার আছে আমার ।
একবার ভাবলাম গিয়ে জিজ্ঞেস করি যে আমি এমন কি করলাম ? তারপর ভাবলাম থাক ! দরকার কি ? জিজ্ঞেস করতে গিয়ে আবার মারধোর খেতে হবে ।
কি দরকার !

সন্ধ্যার সময় টিভি দেখছিলাম । এমন সময় নিলয় এসে বলল
-নিশি আপু আপনাকে একটু ছাদে যেতে বলেছে ।
-এখন ?
-হুম এখনই ।
আমি খানিকটা অবাক হলাম । নিশি আমাকে ছাদে যেতে বলবে কেন ?
আশ্চার্য ।
আজ কি হচ্ছে কে জানে ? আচ্ছা রুমেল আমাকে থেট দিল এর সাথে নিশি কোন ভাবে জড়িত নয় তো ?
কিন্তু তা কিভাবে হবে ? আবার হতেও পারে ! আমার মাথায় কিছুই ঢুকছিল না । যা হোক আমি ছাদের দিকে পা বাড়ালাম ।
ছাদে গিয়ে দেখি নিশি এক কোনায় চুপচাপ বসে আসে । এখনও অন্ধকার হয় নি পুরোপুরি । আমাকে আসতে দেখে উঠে দাড়াল । ওর মুখে কেমন জানি একটা অপরাধী অপরাধী ভাব । বললাম
-কি ব্যাপার ? এরকম জরুরী তলব ?
-আই এম সরি । নিশি খুব অপরাধীর মত লাইনটা বলল ।
-কেন ? আপনি সরি কেন হচ্ছেন ? আমিতো কিছু বুঝতে পারছি না ।
নিশি বলল
-রুমেল আজ আপনার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে না ?
-আপনি জানলেন কিভাবে ?
-আমি জানি । এলাকার মেয়ে না আমি ? খবর আমার কাছে চলে আসেই । আর ব্যাপারটা যখন আমাকে নিয়ে আমি তো জানবোই ।
-আপনাকে নিয়ে ?
আমি ঠিক ব্যাপার বুঝলাম না । নিশিকে নিয়ে কিভাবে হয় ?
-রুমেল আমার পিছনে অনেক দিন থেকেই ঘুরছে ।
-তা তো বুঝলাম । রুমেল আপনার পেছনে ঘুরছে । কিন্তু ও আমাকে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলবে কেন ?
-আসলে আপনি ওর মুখের গ্রাস কেড়ে নিচ্ছেন তো !
-মানে ? কি বলছেন এসব ? আমি ওর মুখের গ্রাস কেড়ে নিলাম কখন ? আর ....
নিশি আমাকে কথা শেষ করতে দিলো না । বলল
-একটু শান্ত হোন । আমি ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলি । আসলে গত পরশু দিন ও আমাকে রাস্তার ধরেছিল । জানতে চাইছিল আমি কেন ওর সাথে রিলেশন করছি না । আমি বললাম যে আমার অন্য একজনের সাথে রিলেশন আছে ।
এই বলে নিশি খানিকটা চুপ করে গেল । আমি বললাম
-কিন্তু রুমেল আমার সাথে এমন করলো কেন ? আমি কি করলাম ?
এবার নিশির চেহারায় কেমন একটা অধর্য্যের ছাপ দেখলাম । নিশি বলল
-আপনি এতো গাধা কেন ?
-গাধা ? আরে বলে কি এই মেয়ে ?
-গাধা হবো কেন ?
-সিম্পল এই বিষয় টুকু বুঝতে পারছেন না । রুমেল মনে করেছে যে আপনার সাথে আমার রিলেশন আছে ।
আমি খানিকটা বিষম খেলাম ।
-এমনটা মনে হবার কারন কি ?
এবার নিশিকে খানিকটা সংকুচিত মনে হল ।
-আসলে আমি বলেছি । আমি বলেছি যে আপনি আমার বয়ফ্রেন্ড ।
-কেন বলেছেন ?
এই মেয়েটার এই টুকু বলার জন্য এখন আমাকে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে হবে । কোন মানে হয় ? আমি আবার বললাম
-কেন বলেছেন ?
-আমি মিথ্যা কথা বলতে পারিনি ।
-আরে মিথ্যা কথা বলতে পারি নি মানে কি ? এই কথা কেউ বলে ? এমন .....
ওযেট এ মিনিট !!! আমি ঠিক শুনলাম তো ? নাকি ভুল শুনলাম ? আমি আবার বললাম
-কি বললেন আপনি ?
নিশি মাথা নিচু করে দাড়িয়ে থাকল । কোন কথা বলল না । তবুও সব কিছু বুঝতে আমার বেশ খানিকটা সময় লাগল । আমি কাপা হাতে ওর মুখটা তুলে ধরলাম । ওর চোখের সাথে চোখ পড়তেই বুকের মাঝে কেমন যেন এক শিহরন বয়ে গেল ।
এতো দিন আমি ভাল করে দেখি নি । কিন্তু আজ একি দেখলাম । আমি ওয় সামনে থেকে সরে এসে ছাদের এক পাশে বসলাম ।
কি বলব অথবা কি বলা উচিত্ আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না । একটু পর নিশি নিজেই এসে আমার পাশে বসল । বলল
-আপনি চিন্তা করেন না । বাবাকে বলেছি । উনি রুমেলের ব্যাপারটা দেখবেন ।
-আসলে আমি চিন্তা করছি না । একটু আগেও হয়তো চিন্তা করছিলাম কিন্তু এখন আর চিন্তা করছি না । তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে আমি যা দেখেছি তার অন্য সব কিছু বড় তুচ্ছ !
নিশি হাসল ।
-কি দেখেছেন ?
-সেটাতো বলবো না । আমি যেমন বুঝে নিয়েছি তুমি বুঝে নাও ।
-আহ্ ! কি আমার বোঝন দার রে ! তুমি যদি এতোই বুঝতে তাহলে অনেক আগেই বুঝে যেতে ! আমাকে মুখ ফুটে বলতে হত না ।
নিশি আমার দিকে আর একটু সরে এল ।




গল্পটা এখানে আছে
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৩:২০
৪০টি মন্তব্য ৪০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কালবৈশাখী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৪



গত পরশু এমনটি ঘটেছিল , আজও ঘটলো । ৩৮ / ৩৯ সে, গরমে পুড়ে বিকেলে হটাৎ কালবৈশাখী রুদ্র বেশে হানা দিল । খুশি হলাম বেদম । রূপনগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

আমরা সবাই জানি, ইরানের সাথে ইজরায়েলের সম্পর্ক সাপে নেউলে বললেও কম বলা হবে। ইরান ইজরায়েলকে দুচোখে দেখতে পারেনা, এবং ওর ক্ষমতা থাকলে সে আজই এর অস্তিত্ব বিলীন করে দেয়।
ইজরায়েল ভাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

নগ্ন রাজা কর্তৃক LGBTQ নামক লজ্জা নিবারনকারী গাছের পাতা আবিষ্কার

লিখেছেন মুহাম্মদ মামুনূর রশীদ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪০

LGBTQ কমিউনিটি নিয়ে বা এর নরমালাইজেশনের বিরুদ্ধে শোরগোল যারা তুলছেন, তারা যে হিপোক্রেট নন, তার কি নিশ্চয়তা? কয়েক দশক ধরে গোটা সমাজটাই তো অধঃপতনে। পরিস্থিতি এখন এরকম যে "সর্বাঙ্গে ব্যথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×