somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার বয়ফ্রেন্ড যখন সেলসম্যান !! ;) ;) ;)

২০ শে মে, ২০১২ রাত ১০:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সকাল থেকেই মনটা খারাপ হয়ে আছে । কিছুতেই কিছুতে মন বসছে না । কিছু করতে ভাল লাগছে না ।
বার বার মনে হচ্ছে এমনটা কেন কেবল আমার সাথেই হয় !!
কেন এমনটা হয় ?
আজ একটা বিশেষ দিন । এই বিশেষ দিনটা আমি আমার বিশেষ মানুষটার সাথে কাটাবো তাও হচ্ছে না ।
অপুকে যখন কাল বললাম যে আজ আমি বাইরে যেতে পারবো না । আব্বু সারাদিন বাসায় থাকবে । আমি কিছুতেই বাইরে বের হতে পারবো না । অপুর মনটা খুব খারাপ হয়ে গেছিল ।
আর আব্বুর সামনে দিয়ে বাইরে যাওয়া মানে হাজারটা প্রশ্নের জবাব দেওয়া । এতো মিথ্যা কথা বলা আমার পক্ষ্যে সম্ভব না ।
আর আব্বুটাও না । বেছে বেছে ঠিক অপুর জন্মদিনটাতেই বাসায় থাকতে হবে !
আর ছুটির দিনটাতেই ওর জন্মদিনটা পরতে হবে ! আসলে আমার কপালটাই খারাপ ।
অপু কতটাই না মন খারাপ করছে ।
ইস ! আব্বুটা যদি এখন বাইরে যেত !
কত ছুটির দিনেই তো আব্বু বাইরে যায় !
আজ কি যাবে না ? আব্বু যাও না একটু বাইরে !!
অপুর সাথে একটু দেখা করবো !
ওর সাথে একটু কথা বলব !
ওর হাতটা একটু ধরবো !
ওকে একবার .... ও কতই না খুশি হত !
ওর জন্য একটা ছোট্ট গিফ্ট কিনেছি । ওটা কি ওকে দিতে পারবো না ?
আল্লাহ প্লিজ একটা কিছু ব্যবস্থা করে দাও ।
অল্প একটু সময়ের জন্য ওর সাথে দেখা করার সুযোগ করে দাও ।
ঠিক এমন সময় আব্বু আমাকে ডাক দিল ।
ড্রয়িং রুমে গিয়ে দেখি আব্বু তিন জন লোকের সাথে বসে কথা বলছে । তিনজনই একই রকম পোষাক পরা । কোন কম্পানী থেকে এসেছে বোধহয় ।
আজকাল সেলস ম্যান গুলোও কত হাইফাই হয়ে গেছে । আমি প্রথমে সেলস ম্যান গুলোর দিকে তাকাই নি । আসলে তাকানোর দরকার প্রয়োজন বোধ করি নি । সরাসরি আব্বুকে জিজ্ঞেস করলাম
-কেন ডাকছো আব্বু ?
-এই দেখ এরা এয়ারটেল থেকে এসেছে ।
আমি সরাসরি আব্বুর দিকে মুখ কয়ে দাড়িয়েছিলাম । সেলসম্যান গুলো আমার এক পাশে বসে ছিল । আব্বু যখন বলল এরা এয়ারটেল থেকে এসেছে ঠিক তখনই একজন সেলসমেন উঠে বলল
-গুড মর্নিং ম্যাম !
আমি মোটামুটি একটা ধাক্কার মত খেলাম । কোন মতে একটু ঘুরলাম চেহারা দেখার জন্য । যদিও চেহারা দেখার খুব একটা দরকার ছিল না নিশ্চিত হবার জন্য ।
কন্ঠ স্বর শুনেই অপুকে চিনতে পেরেছি ।
কিন্তু অপু এখানে ?
না না অসম্ভব ।
একে বারে বাসায় ? তাও আবার আব্বুর সামনে !
আমি ঘুরে তাকালাম অপুর দিকে ।
ইস ! ওকে ফরমাল ড্রেসে কি চমৎ‍কারই না লাগছে !
আমি কেবল ওর দিকে তাকিয়েই আছি অবাক হয়ে । ভাবতেই পারছি না অপু এরকম সোজা সুজি বাসায় চলে আসবে !
কিন্তু ও কিভাবে এল বাসাতে ?
আর আব্বুকেই বা কি বলেছে ? এই কথার উত্তরটা পেলাম আব্বুর কাছ থেকে । আব্বু বলল
-আরে এয়ারটেলে চাকরি করে । গিফ্ট এন্ড ভাউচার ডিপার্টমেন্ট ।
গিফ্ট এন্ড ভাউচার ডিপার্টমেন্ট ? এমন নাম তো জীবনেও শুনি নি ।
এই অপুটা না ? এমন সব উদ্ভট চিন্তা ভাবনা বের করে !
-ইয়েস ম্যাম । আমরা গ্রাহক দের কাছে গিয়ে তাদের পুরুস্কার সরবারহ করি ?
যদিও ভেবেছিলাম কিছু বলবো না কিন্তু মুখ দিয়ে কথাটা বের হয়েই গেল । বললাম
-মানে ?
-মানে, ম্যাম এয়ারটেলের গ্রাহক রা যে সব পুরুস্কার জেতে বা কুইজ কন্টেস্ট অথবা লটারী জেতে আমরা সেই গিফ্ট গুলো তাদেরকে ডেলিভারি করি ।
-কিন্তু আমিতো কোন কুইজ কন্টেস্টে পার্টিসিপেইট করি নি ।
আসলে এটাও আমি জিজ্ঞেস করতে চাইনি । কিন্তু এতো কৌতুহল হচ্ছিল যে করেই ফেলল । জানতে ইচ্ছা করছিল যে কি বলে আব্বুকে পটালো !
-আসলে ম্যাম আমরা প্রত্যেক মাসে আমাদের সব সচল গ্রাহক দের নিয়ে একটা লটারী করি । তারপর রেনডমলি একটা নাম্বর সিলেক্ট করি । এবার আপনার নাম্বরটা উঠেছে । আর ভাগ্য ভাল যে আপনি আপনার রিয়েল ঠিকানা দিয়ে সিম টা কিনেছিলেন । তা না হলে তো আপনার পুরুস্কার তো আপনি পেতেনই না ।
-ও আচ্ছা ।
অপু এবার আব্বুকে উদ্দেশ্য করে বলল
-একচুয়ালী স্যার আমি আমাদের উইনার কে কিছু প্রশ্ন করতে চাই । ছোটখাটো একটা ইন্টার ভিউ বলতে পারেন ।
আব্বু বলল
-হ্যা হ্যা কর । সমস্যা নাই ।
-আসলে আপনার সামনে ম্যাম বোধহয় সাই ফিল করবে ?
আব্বু একটু ভুরু কুচকে বলল
-তোমরা কি এমন প্রশ্ন করবে যে ও আমার বলতে লজ্জা পাবে ।
-না না এমন কিছু না । তবে ইন্টারভিউ টা একা একা নিলেই স্যার ভাল হয় । মানে মেয়েরা তো বাবার সামনে সব কিছু বলতে পারে না । কিকি খেতে পছন্দ করে , কি করতে পছন্দ করে , কাকে পছন্দ করে ইত্যাদি ।
কাকে পছন্দ করে ? অপু বলছে কি এসব । আব্ব যদি টের পেয়ে যায় খবর আছে । অপু আবার বলল
-তবে স্যার আপনার অপত্তি থাকলে আমরা গিফ্ট দিয়ে চলে যাই । নিজের ইচ্ছামত কিছু একটা রিপোর্ট লিখে নিবো নে ।
আব্বু কি যেন একটু ভাবল । তারপর বলল
-আচ্ছা ঠিক আছে । নিশি তুই ওকে ওর ঘরে নিয়ে যা ।
আব্বুর কথাটা শুনে মনের মধ্যে একটা আনন্দের ঢেউ বয়ে গেল । কিন্তু তবুও মনে মনে সংঙ্কিত ছিলাম ।
কখন কি হয়ে যায় ? আব্বু যদি একটু খানি টের পায় তাহলে আমার খবরই আছে !
মনের মধ্যে সংঙ্কা আর কাঁপা কাঁপা পা নিয়ে আমার রুমের দিকে পা বাড়ালাম ।
কেবল দরজা দিয়ে ঘরে ঢুকেছি ঠিক তখনই অপু আমাকে পিছন থেকে চেপে ধরলো ।
-কি করছো ?
তারপর আমাকে দরজার সাথে চেপে ধরল । আবার বললাম
-অপু কি করছো ?
-কি করছো বুঝতেছো না ?
-অপু ছাড়ো প্লিজ । কেউ চলে আসবে !
-আসুক আই ডোন্ট কেয়ার !
-ছাড়ো প্লিজ, সোনা পাখি ।
-ওকে আগে একটা কিস কর ।
-কি কিস ?
-হুম । চুম খাও ।
-আমি চুমটুম খেতে পারবো না ।
-খেতে হবে ।
-পারবো না ।
-ওকে, চুম না খেলে কোন ছাড়া ছাড়ি নাই ।
-প্লিজ ছাড়ো । কেউ চলে আসবে ।
-না । আজকে আমার জন্মদিন আমার গিফ্ট চাই । আর আমি এতো কষ্ট করে তোমার বাসায় আসলাম আর তুমি একটা চুম খেতে পারবে না ?
কথা সত্য । ও এতো কষ্ট করেছে । এটা তো ও চাইতেই পারে !
-আচ্ছা ঠিক চোখ বন্ধ করে ।
দেখলাম অপুর চোখটা কেমন উজ্জল হয়ে উঠল ।
-না করবো না । প্লিজ বন্ধ কর । আমার লজ্জা লাগছে ।
অপু আমার আমার হাত দুটো ছেড়ে দিয়ে আমাকে আরো খানিকটা জড়িয়ে ধরল ।
২২টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×