somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কি ফাজিল একটা মেয়ে ! নিজের বয়ফ্রেন্ডকে রাতে ঘুমাতেই দিল না !!

২৪ শে মে, ২০১২ বিকাল ৩:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাঝ রাতের দিকে নীলুর ঘুম ভেঙ্গে গেল । ঘুম ঘুম চোখেই ও মোবাইল খুজতে লাগল ।
সময় দেখবে ।
বালিশের পাশেই ছিল মোবাইল । বাটন টিপ দিতেই ও একটু ধাক্কার মত খেল অবিশ্বাসের চোখে মোবাইল স্ক্রীনটার দিকে তাকিয়ে রইল কিছুক্ষন ।

Voice active call
আবীরের নাম লেখা ।
নিচে সময় উঠছে ।
3 . 19 . 58 ....59 .....00 .....01 .
ততক্ষনে ওর ঘুম পুরো পুরি কেটে গেছে ।
আবীর এখনও লাইনে আছে !!!
কাঁপা হাতে ফোনটা গালে কাছে এনে বলল
-হ্যালো ।
সঙ্গে সঙ্গেই ওপাশ থেকে আবীর বলল
-হ্যালো সোনাপাখি তোমার ঘুম ভেঙ্গেছে ?
নীলু কিছুক্ষন কোন কথাই বলতে পারল না । ওর এখনও বিশ্বাসই হচ্ছে না যে আবীর এই সাড়ে তিন ঘন্টা ওর কথা মত জেগে বসে থাকবে !! ওর কথা মত জেগে থাকবে!!!
নীলুর নিজেকে বড় অপরাধী মনে হল । এতোক্ষন বেচাড়া কে কেন জাগিয়ে রাখল ?
আবীর তো কেবল ওকে পনের মিনিটের মত অপেক্ষা করিয়ে রেখেছিল । তার বদলে এতোক্ষন !
ওপাশ থেকে আবীর হ্যালো হ্যালো করেই যাচ্ছে । ওর কণ্ঠে রাগের ছিটে ফোটাও নেই । এতোক্ষন অপেক্ষা করার পরও আবীর একটুও রাগ করেনি ।
আর মাত্র পনের মিনিট অপেক্ষা করতে হয়েছিল বলে কি রাগটাই ও দেখাল আবীর সাথে ।
বেচারা একটা কথাও বলেনি । অপরাধীর মত মাথা নিচু করে দাড়িয়ে ছিল ।
নীলু লক্ষ্য করল ওর চোখ দিয়ে পানি পরছে । এতো খারাপ লাগছে নিজের কাছে ।
বারবার মনে হচ্ছে কেন করতে গেল ও কাজটা ?
কেন ওকে ঘুমাতে দিল না ? বেচারা ঘুমাতে এতো পছন্দ করে ।
আর বিনা কারনে ও এতোক্ষন জাগিয়ে রাখল !
ঘটনা এমন কিছুই না । বিকেল বেলা আবীরে দেখা করার কথা ছিল । পাঁচটায় সময় দেওয়া ছিল ।
নীলু ঠিক পাচটার সময়ই পৌছে যায় কিন্তু আবিরের পৌছাতে একটু দেরি হয়ে যায় ।
তাতেই নীলুর সে কি রাগ । আবির যখন আসল নীলুর মুখ তখন অন্ধকার ।
আবির এসেই কান ধরল । বলল
-সরি । আসলে টিউশনি থেকে বের হতে হতে একটু দেরি হয়ে গেছিল । প্লিজ রাগ কর না ।
নীলু একটা কথাও বলল না ।
আবীর ওর আশে পাশে কত বার ঘোরাঘুরি করল ।
কতবার সরি বলল । তবুও একটা কথাও ও বলল না । আবীরের সাথে কোন কথা না বলেই বিকাল বেলা বাসায় চলে আসে ।
তারপর থেকে আবীর অন্তত এক হাজার বার ফোন করেছে । ও একটা বারও ফোন রিসিভ করে নি ।
অবশেষে ১২ টার দিকে ও ফোন রিসিভ করল । নীলু
-প্লিজ কথা বল । তুমি বিকাল থেকে একটা বারও কথা বলো নি । একটু কথা বল প্লিজ । সোনাপাখি আমার ।
-তুমি আমাকে কেন ওয়েট করালা ?
-আমার খুব ভুল হয়ে গেছে । আর কখনও হবে না এমন টা ।
-বুঝলাম হবে না । কিন্তু এখন কি করবো । তুমি আামকে কেন বসিয়ে রাখলে ? কেন ? আগে এই প্রশ্নের জবাব দাও ?
-আসলে আমি বুঝতে পারি নি যে টিউশনি থেকে বের হতে হতে এতো লেট হয়ে যাবে ?
-টিউশনি মাই ফুট! তোমার কাছে টিউশনি বেশি ইম্পর্টেন্ট নাকি আমি ?
-অবশ্যই তুমি!!
-তাহলে আমাকে ওয়েট করতে হল কেন?
আবীর কি উত্তর দেবে ভেবে পেল না ।
-শোন, তোমার উপর আমার রাগ যাচ্ছে না কিছুতেই । তুমি আমাকে কেন অপেক্ষা করালা ?
- তুমি যা বলবে আমি তাই করবো । প্লিজ আমার উপর রাগ করে থেকো না । তুমি জানো না তোমার সাথে কথা না বললে আমার ভাল লাগে না । আমার সাথে একটু কথা বল ।
-আচ্ছা ঠিক আছে । তুমি আমাকে অপেক্ষা করিয়েছিলে এখন তুমি অপেক্ষা করবে ।
-কিভাবে করবো ?
-আমি এখন ঘুমাবো । তুমি ফোনের লাইন কাটবে না । আমি যতক্ষন ঘুম থেকে উঠবো না তুমি ততক্ষন কানে ফোন লাগিয়ে বসে থাকবে । মনে থাকবে ?
- আচ্ছা । যদি আমি দেখি তুমি নেই তাহলে কিন্তু খবর আছে তোমার ।
-আচ্ছা ঠিক আছে । আমি ঘুমাবো না ।
নীলু ভেবেছিল কিছুক্ষন অপেক্ষা করেই আবীর ফোন রেখে দিবে ।
এতোক্ষন যে সত্যি সত্যিই ওর জন্য ওয়েট করবে নীলু এটা ভাবতেই পারে না ।
-হ্যালো ।
আবীর খুব নমনীয় কন্ঠে বলল
-তোমার ঘুম মেঙ্গেছে ?
কোন কান্না চাপতে চাপতে নীলু বলল
-হুম ।
-আমি কিন্তু ঘুমাই নি । জেগে আছি । তুমি আর আমার উপর রাগ করে নেই তো ?
নীলু আর কান্না চেপে রাখতে পারল না । হু হু করে কেঁদে ফেলল ।
-আরে কি হল ? কাঁদছো কেন ? কি হল ? প্লিজ কেঁদো না । সোনাপাখি প্লিজ কেঁদো না ।
অনেক ক্ষত কাঁদার পর নীলু মুখ খুলল । বলল
-আবীর ?
-বল ।
-তুমি এতো ভাল কেন ?
-মানে?
-আমি তোমাকে এতো জ্বালাতন করি তবুও তুমি কেন সহ্য কর? কেন আমাকে এতো ভালবাসো?
-তোমি আমার সোনাপাখি না?? তোমারটা সহ্য করবো নাতো কারটা করবো ?
-আমি খুব সরি আবীর । আমি আর কখনও তোমার উপর রাগ করবো না । আই প্রমিজ !!
-আচ্ছা বাবা ঠিক আছে । সরি বলতে হবে না । তুমি এখন ঘুমাও কেমন ?? সকালে কথা হবে
নীলু ফোন রেখে শুয়ে পড়ল । মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলো আর কখনও আবীর কে জ্বালাতন করবে না । আর কখনও এমন বেহুদা রাগ করবে না ওর উপর । কেবল বেশি বেশি ভালবাসবে !
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০১২ বিকাল ৩:২৮
৪১টি মন্তব্য ৪১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×