somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিহিন, আমার সম্ভাব্য গার্লফ্রেন্ড ! ;) ;) ;) ;) ;)

২৮ শে মে, ২০১২ দুপুর ২:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-কে ?
খানিকটা বিরক্ত হয়েই বললাম । ঘড়িতে প্রায় দুটো । এতো রাতে কেউ কাউকে ফোন দেয় ?? তাও আবার অপরিচিত নম্বরে !
অবশ্য আমার পরিচিত কেউ এতো রাতে ফোনও দিবে না । সবাইকে খুব কড়া করে নিষেধ করা আছে ! রাতে ফোন দেওয়া যাবে না । কিন্তু মাঝে মাঝে রাতের বেলা ফোন চলেই আসে । তখন বিরক্তির সীমা থাকে না । যেমন এখন আমি বিরক্ত ।
আবার বললাম
-কে বলছেন ?
প্রথমে কিছুক্ষন কোন সাড়াশব্দ পাওয়া গেল না । তারপর হঠাত্‍ ই বলে উঠল
-বাব্বাহ কোন হ্যালোটেলোর বালাই নাই । একেবারে কে বলছেন ।
মেয়ে কণ্ঠ !
এতো রাতে !
তাও আবার আমার কাছে ?
-আপনি কে বলছেন বলবেন প্লিজ ?
-না বলব না ।
বলেই মেয়েটা হাসতে লাগল । আমি খানিকটা বিরক্ত হলাম । ঘুমানোর সময় বিরক্ত করলে মেজাজটা ঠিক রাখা দুষ্কর হয়ে ওঠে ।
-আপনি কাকে চাচ্ছেন ?
-আমি আপনাকে চাচ্ছি ?
-কে আপনি ?
-আমি ? আমি একজন মানুষ ।
-সেটাতো বুঝতেই পারছি । রাতবিরাতে কোন পেত্নী নিশ্চই আমার কাছে ফোন দিবে না । নাম বলুন । আর কেন ফোন দিয়েছেন বলুন ।
-কেন যদি না বলি ?
-দেখেন ফ্যাঁদা পেচাল পাড়তে ভাল লাগছে না । ঘুমানোর সময় কেউ ফোন দিলে খুব বিরক্ত হই । নাম বলবেন না ফোন রেখে দিবো ।
-আচ্ছা আচ্ছা ফোন রাখবেন না প্লিজ । নাম বলছি । যদি মনে থাকে আমায় নাম । আমি নিহিন !

নিহিন ? আমি খানিকটা অবাক হলাম ।
নিহিন ফোন করেছে ? আমি সত্যিই অবাক না হয়ে পারলাম না ।
এতোরাতে নিহিনের ফোন পেয়ে সত্যি খানিকটা অবাক হলাম !

নিহিনের সাথে পরিচয় শামসের মাধ্যমে । সেদিন টিউশনীতে গিয়েছি । শামসদের বাসার সামনেই শামসের সাথে দেখা হয়ে গেল । শামস আমার স্টুডেন্টের নাম ।
শামস আমাকে দেখে লম্বা একটা সালাম দিল ।
-নিচে কি কর ?
-কিছু না স্যার আইসক্রিম খেতে আসছি ।
-তোমার আইসক্রিম খাওয়া মানা । টনসিল বাড়বে !
-কিছু হবে না স্যার ! মাঝে মধ্যে একদুটা খাওয়া যায় ।
-বলেছে তোমাকে ? তোমার মা জানে ?
শামস লাফ মেরে উঠল । বলল
-স্যাররররর !! আম্মুকে বইলেন না । কইলে আমারে পিটাবেনে !
আর কিছু বললাম না । আসলে আইসক্রিমের কথা শুনে আমার নিজেও খানিকটা লোভ হল খাওয়ার জন্য । সামনের ডিপার্টমেন্টাল দোকানটাতে নিয়ে গেলাম । তিনটা চকবার কেবল হাতে নিয়েছি তখন কেউ যেন পেছনে এসে দাড়াল আমাদের । খুব মিষ্টি করে বলল
-শামসস !
আমরা দুজনেই ঘুরে দাড়ালাম । মোটামুটি বুকে ধাক্কা লাগানোর মত একটা মেয়ে দাড়িয়ে আছে । পরনে কালো জিনস আর কালো টিশার্ট । গলায় ধবধবে সাদা রংয়ের একটা স্কার্ফ । এই স্কার্ফটার জন্যই মেয়েটাকে আরো বেশি সুন্দর লাগছে ।
মনে হলে টুপ করে মেয়েটার প্রেমে পরে যাই !
কিন্তু কি লাভ ! আমি প্রেমে পড়লে তো আর চলবে না । মেয়েটার ও পরতে হবে ।
আর ওর খেয়ে দেয়ে কাজ নাই যে আমার ক্ষ্যাত মার্কা একজনের প্রেমে পরবে ! শামস বলল
-নিহিন আপুপুপু ! আপনি এইখানে ?
এইতো বলে নিহিন হাসল । ভূবন ভূলানো হাসি । আমারতো হাসি দেখে খবর ঘোলা হয়ে গেল । নিহিন বলল
-তুমি কি কর ?
-আইসক্রিম কিনতে আসছি ।
-ও তাই ! আমিও আইসক্রিম খেতেই আসছি ।
পকেট থেকে একটা ১০০০ টাকার নোটা দোকানদারক কে এগিয়ে বলল
-মামা একটা চকবার দেন ।
দোকানদার বলল
-আপু এতো বড় নোটতো ভাংতি হবে না । একটু আগে মালিক সব ক্যাস নিয়ে গেছে ।
বেটা মিথ্যা কথা বলছে । আমি নিজেই ৫০০ টাকার নোট ভাঙ্গালাম । আসলে বেটা একটা আইসক্রিমের বদলে এতো বড় নোট ভাঙ্গিয়ে দিতে চাচ্ছে না ।
নিহিন আবার বলল
-দেখেন মামা একটু !
-না আপু সত্যি হবে না ।
নিহিন খানিকটা হতাশ হল । যাওয়ার সময় বলল
-আচ্ছা শামস ঠিক আছে । থাকো কেমন !
কি আমার পকেটে টাকা থাকতে সুন্দর একটা মেয়ে আইসক্রিম খেতে পারবে না ?
তা তো হবে না ।
বারতি একটা আইসক্রিম কিনেছিলাম পিচ্চি টার জন্য । শামসের হাতে আইসক্রিমটা দিয়ে বললাম
-দিয়ে এসো ।
শামসও খানিকটা আচ করতে পেরেছিল যে আমি এমন কিছু একটা করবো । সে আইসক্রিমটা নিয়ে জোরে ডাক দিল
-নিহিন আপু !!
নিহিন দাড়াল ।
-আপু এই নিন ।
-আরে না না । দরকার নাই । তুমি খাও ।
নিহিন খুব বেশি দুরে যায় নি । তাই ওদের কথা আমি স্পষ্টই শুনতে পারছিলাম । শামস আবার বলল
-না আপু নেন । আমারটা আছে । এইটা স্যার আপনাকে দিয়েছে ।
-স্যার ??
-হুম । ঐ যে !
বলে শামস আমাকে দেখালো । আমি ভেবেছিলাম নিহিন আমার কাছে আসবে । আইসক্রিমের জন্য আমাকে একটা ধন্যবাদ দিবে ।
একটু হাসি দিবে ! জীবনটা ধন্য করবে !
কিন্তু বজ্জাত মেয়েটা এমন কিছুই করলো না । কেবল দুর থেকেই একটু হাসল আমার দিকে তাকিয়ে !
তারপর হাটতে হাটতে চলে গেল । এমনকি আর পিছন ফিরে আর একবার তাকালও না ।
মনে মনে বললাম ২২টা টাকাই গেল জলে !
আচ্ছা কাছে এসে অন্তত একটা ধন্যবাদও তো দেওয়া যেত নাকি ! আমার নাম জিজ্ঞেস করা যেত ! আর কিছু না হোক মিষ্টি করে একটু হাসা তো যেত !
কিন্তু ফাজিল মেয়েটা এমন কিছুই করলো না ।
আমি শামসকে নিয়ে ওদের বাড়ির মধ্য ঢুকে গেলাম ।
শামসের কাছে মেয়েটা সম্মন্ধ খোজ খবর নিলাম কিছু । শামস যা বলল তার সারমর্ম হল নিহিন এই গোলীর শেষ মাথায় থাকে । প্রাইভেট মেডিক্যালে পড়ে । এইটুকু শোনার পর আমি চুপসে গেলাম ।
এই মেয়ে আমার দ্বারা পটবে না । ২২টা সত্যিই জলে গেল ।

-কি হল ?? চুপ করে গেলেন যে??
আমি হাসলাম । বললাম
-মানে গত দিনের কথা মনে করছিলাম ।
-ও । আচ্ছা, একটা কথা জিজ্ঞেস করবো ?
- হ্যা । করুন !
-আচ্ছা ঐ দিন কি মনে করে আামকে আইসক্রিমটা কিনে দিলেন ?
এই প্রশ্নটার উত্তর আমি চট করে দিতে পারলাম না । বললাম
-আসলে আমি ঠিক জানি না । আপনি যখন টাকা ভাংগাতে না পেরে হতাস হলেন , আপনার হতাস চেহারা দেখে আমার কেমন যেন লাগল । মনে হল আমার পকেটে টাকা থাকতে একটা মেয়ে আইসক্রিম খেতে পারবে না । টা তো হবে না !!
-আচ্ছা ??
নিহিন হাসলো । আবার বলল
-আর কোন কারন?
-হুম আর একটা কারন অবশ্য আছে !
- কি সেটা ??
-মেয়েরা আইসক্রিম পছন্দ করে । আর ....
-আর ??
-যারা আইসক্রিম খাওয়ায় তাদের কেউ পছন্দ করে !
-তাই না ?? বলেছে আপনাকে !!! তার মানে দাড়াল , আমি আপনাকে পছন্দ করেছি ।
-প্রমান তো হাতের কাছেই । আমাকে তাহলে ফোন কেন দিয়েছেন? আপনি নিজে আমার নাম্বার জোগার করেছেন । তারপর ফোন দিয়েছেন ! তারমানে আমি আমি একটু হলেও আপনার মনকে নাড়া দিয়েছি ! তা না হলে ফোন তো দিতে না !!
-জি না আপনার লজিক কাজে দিল না । আমি আপনাকে ফোন দিয়েছি ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য ! ঐদিন আপনাকে ধন্যবাদ দেওয়া হয়নি ।
আমি খানিকটা হতাস হলাম । কত কিছু ভেবে ফেলেছিলাম ।
এভাবেই চলতে থাকে কথা মালা । অনেক রাত পর্যন্ত কথা চলতে থাকে ।
ফোন রাখার পর মনে হল নিহিন পটলেও পটতে পারে । একটু সম্ভাবনা কিন্তু আছে !! ;) ;) ;) ;)
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০১২ রাত ৮:৪৮
৩৫টি মন্তব্য ৩৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×