somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মিলি মিলি মিলি, আমারে প্রেমপত্র কেন দিলি!! :!> :!> :#> :#>

০১ লা জুন, ২০১২ দুপুর ২:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পাড়ায় মিলিকে নিয়ে বেশ রমরমা খবর সব সময়ই বের হয় । মিলি নাকি প্রত্যেক মাসে একটা করে বয়ফ্রেন্ড বদলায় । প্রায় প্রত্যেক মাসেই দেখা যায় মিলি পাড়ার নতুন নতুন ছেলের সাথে রিক্সায় করে ঘুরে বেড়াচ্ছে ।
আর এই বয়ফ্রেন্ড চয়নের কাজটা ও নাকি নিজেই করে । কারো সাহায্য বা পরামর্শ নেয় না । কেউ কেউ বলে মিলির কাছে নাকি পাড়ার সব হ্যান্ডসাম আর বড়লোক বাপের ছেলেদের নাম লেখা আছে । তবে অনেকের ধারনা কেবল এই নামের তালিকা কেবল পাড়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় । পাড়ার আসে পাশের এলাকার জন্যও সমান ভাবে প্রজেয্য ।
প্রত্যেক মাসে একবার করে লটারী করে । যার নাম ওঠে সেই একবার তাকে নাকানী চোবানী খাওয়ায় ।
আর আমাদের পাড়ার ছেলে গুলা হাঁদার মত অপেক্ষা করে থাকে যে কখন তার নাম্বর আসবে ! অবশ্য ওদের দোষ দিয়ে লাভ কি এই সুপ্ত বাসনাটা আমার নিজের মনেও আছে ।
কিন্তু অন্যরা যেমন প্রকাশ করে আমি করি না । এমন একটা ভাব যে ওসব মিলিফিলির টাইম নাই ।
কিন্তু কয়দিন থেকেই উড়া উড়া খবর শুনতে পেলাম যে মিলির লটারীতে নাকি এবার আমার নাম উঠেছে । অবশ্য এটা নিয়ে আমি খুব বেশি চিন্তিত নই । কারন এ খবর উড়ো হবার সম্ভাবনাই বেশি ।
আমার দিকে মিলির নজর পরার সম্ভাবনা খুবই কম । আমি যতদুর জানি মিলির নজরে আসার জন্য সাধারন তিনটা গুন থাকা অবশ্যক ।
প্রথমটা হল ছেলেকে অবশ্যই সুদর্শন হতে হবে । যা আমি মোটেই নেই ।
ছেলের পকেট গরম থাকতে হব । আমার পকেট বরাবরই ঠান্ডা । বাবা খুব গুনে গুনে আমাকে পকেট মানি দেয় ।
তার কথা হচ্ছে আমি খেতে দিচ্ছি পরতে দিচ্ছি এমন কি দরকার আছে যে তার জন্য আলাদা করে টাকা দিতে হবে !
আর তিন নম্বরটা হল ... কি যেন ?
তুহিন সেদিন বলেছিল । এখন মনে পড়ছে না ।
তবে আমার একটা প্লাস পয়েন্ট আছে যেটা আর কারো নেই । মিলি আমার ছোট বোন লাবনীর বান্ধবী ।
আর প্রায় দিনই মিলি আমাদের বাসায় আছে । ওর সাথে চোখাচোখি হয় । মাঝে মধ্যে আমার দিকে তাকিয়ে একটু হাসি দেয় ।
আর ভাগ্য খুব ভাল হলে বলে সুমন ভাই, ভাল আছেন ?

দুপুর বেলা বসে বসে এসব কথাই ভাবছি এমন সময় কলিং বেল বেজে উঠল । এই দুপুর বেলা করে কে এল ?
এই সময়টাতে বাসার সবাই ঘুমিয়ে থাকে । সুতরাং আমাকেই দরজা খুলতে হল । দরজা খুলে বুকের মধ্যে ছোটখাটো একটা ধাক্কার মত খেলাম ।
মিলি দাড়িয়ে !!
সাদা রংয়ের একটা সেলোয়ার কামিজ পরা । কাধে একটা ব্যাগ ।
সত্যি বলতে কি আমি কিছুক্ষনের জন্য কোথায় যেন হারিয়ে গেলাম ।
এমনিতেই ওর চেহারা সুন্দর কিন্তু এই শাদাতে ওকে একদম অপ্সরীর মত লাগছে ।
মনে হচ্ছে যেন ...
-সুমন ভাই ! লাবনী আছে না ?
মিলির কথায় বাস্তবে ফিরে এলাম ।
-হ্যা ? ও হ্যা আছে । ও ওর ঘরেই আছে । যাও ।
মিলি আমার পাশ দিয়ে লাবনীর ঘরের দিকে চলে গেল । মিলি যখন আমার পাশ দিয়ে যাচ্ছিল একটা মোহনীও সুবাশ ওর গা থেকে আসছিল ।
আমাকে আবিষ্ট করে ফেল ।
তখন বার বার মনে হচ্ছিল ইস যদি ঐ গুজবটা সত্যি ভাল হত !
মাসখানের জন্য মিলির পয়ফ্রেন্ড হওয়াটা খারাপ কিছু না । ঘরে এসে কেবল এই কথা গুলোই ভাবছিলাম । নিজের মনের ভিতর কেমন জানি একটা অস্থিরতা অনুভব করছিলাম ।
-সুমন ভাই ! আসবো ?
দরজায় দেখলাম মিলি উকি দিয়েছে । আমার বুকের ধকধকানী বেড়ে গেল । বললাম
-এসো ।
মিলি একটু লজ্জা মিশ্রত হাসি দিল । বলল
-লাবনী এখনও ঘুমাচ্ছে । ওকে ডাকতে ইচ্ছা হল না । ওর ঘুম ভাঙ্গা পর্যন্ত আপনার সাথে একটু গল্প করবো যদি কিছু মনে না করেন ?
মনে করবো ? তোমার সাথে গল্প করবো এতে আমি আবার কিছু মনে করবো ? আমি মনের কথা গুলো মুখে বলতে পায়লাম না । বললাম
-না না কোন সমস্যা নাই ।
মিলি টুকটাক কথা বলতে লাগল । মাঝে মাঝে একটু হাসছে । আমার ভাল লাগছে খুব । আল্লাহর কাছে দোয়া করলাম লাবনী যে আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘুমায় । তাহলে মিলিয় সাথে সন্ধ্যা পর্যন্ত গল্প করতে পারবো ।
ওয়াও ! হঠাত্ মিলি বলল
-আচ্ছা সুমন ভাই আপনার গার্লফ্রেন্ড নেই কেন ?
-নেই এমনি ! আসলে মেয়েরা যেমন ছেলে চায় আমি হয়তো ওমন ছেলে নই ।
-কেন ! আমার তো তা মনে হয় না ।
কথাটা বলে মিলি অদ্ভুদ ভাবে হাসলো । এমন কথা মিলি আগে কখনও বলে নি । আমার মনে হল গুজবটা আসলে মিথ্যা নয় ।
হঠাত্ নিজেকে কেমন জানি ছোট মনে হল । মনে হল এই মেয়েটা আমার সাথে একমাসের জন্য রিলেশন করবে তার পর ছেড়ে দিবে !
এতোই সোজা ?
না তা হবে না !
খানিকটা কঠিন গলায় বললাম
-আসলে এক মাসের জন্য রিলেলন করতে আমি প্রস্তুত নই ।
-মানে ?
-এখন কার মেয়েরা ছেলেদের সাথে কেবল টাইম পাস করে । মন ভরে গেলে ছেড়ে দেয় । এমন মেয়ে আভার দরকার নাই । এরকম মেয়েকে আমি পছন্দও করি না ।
মিলি বুঝতে পেরেছে যে কথা গুলো আমি ওকে উদ্দেশ্য করেই বলেছি । দেখলাম ওর উজ্জল মুখটা কেমন কালো হয়ে গেল । একটু পর ও উঠে চলে গেল ।
তার কিছুক্ষন পয় দেখলাম লাবনী আমার ঘরে এল । বলল
-তুই মিলিকে কি বললি রে ?
-কেন ? ও এমন কাঁদতে কাঁদতে চলে গেল কেন ?
-কই আমি এমন কিছুতো বলি নি !
লাবনী কেমন সন্দেহের চোখে তাকাল আমার দিকে । কিন্তু আর কিছু বলল না ।

পরদিন সকালবেলা লাবনি আমাকে একটা খাম দিয়ে বলল
-এটা মিলি তোকে দিয়েছে । আর না জেনে মানুষের মনে কষ্ট দেওয়াটা ঠিক না ।
-মানে কি ?
-মানে এটা পড় । পড়লেই বুঝতে পারবি ।
লাবনী চলে গেল । আমি খামটা খুললাম ।

সুমন ভাই । ভাইটা লিখে আবার কেটে দিয়েছে । মিলি লিখেছে
আমি কখনও ভাবিনি আপনি আমাকে এমনটা কথা বলবেন । পাড়ার মানুষ আমাকে নিয়ে কেন এসব বলে আমি জানি না । হ্যা এটা সত্যি যে আমি সবার সাথে কথা বলি । হাসাহাসি করি । এটা একটা কারন হতে পারে ! কিন্তু আমি বিশ্বাস করুন আমার কোন বয়ফ্রেন্ড ছিল না । কোন কালেই না । আপনাদের এই এলাকাতে আসার পর কেবল আপনাকেই আমি পছন্দ করেছি । মনে প্রানে চেয়েছি । আর আমি আপনাদের বাসায় যেতাম কেবল আপনাকে একটা বার দেখার জন্য । কেবল আপনাকে ..
তবুও যদি আপনার আমার কথা বিশ্বাস না হয় অন্তত শেষ বারের মত আপনি আমার সামনে আসুন । আমার দিকে একবার তাকিয়ে দেখুন । আমার বিশ্বাস আমার চোখের দিকে একবার তাকালে আপনি বুঝবেন আমি মিথ্যা কথা বলছি না ।
আজ বিকালে আমি আপনাদের ছাদে আপনার জন্য ওয়েট করবো । যদি ইচ্ছা হয় আপনি একবার আসবেন ।
আমি চিঠিটা পড়ে খানিকক্ষন চুপ করে থাকলাম । কি করবো ঠিক বুঝতে পারলাম না ।
সত্যি কি মিলি আমাকে ভালবাসে ? আমি এতো দিন বুঝতে পারি নি ? তাহলে ওর নামে যে এতো কথা শুনি ! অবশ্য নিজে কথনও আমি দেখি নি । সব শুনেছি । তাহলে কি করবো এখন ?
যাবো কি ?
যাবো না মানে ? অবশ্যই যাবো ।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুন, ২০১২ দুপুর ২:৪২
৩২টি মন্তব্য ৩২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×