somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেয়েটি যেভাবে তার বয়ফ্রেন্ডকে (সম্ভাব্য) খুজে পেল !!

১৫ ই জুন, ২০১২ বিকাল ৪:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-বল কি খাওয়াবি ?
তয়া বেঞ্চ থেকে মাথা তুলে তাকাল । মীম ঠিক ওর পাশে এসে বসল ।
-কেন ?
-বল আগে কি খাওয়াবি ?
-দেখ এখন ইয়ার্কি ভাল লাগছে না ।
-আর বল না ?
-কেন খাওয়াবো ?
-তোর রাজকুমারের খোজ পেয়েছি ।
-সত্যি ???
তয়া এতো জোরে চিৎ‍কার করে উঠল যে চারিপাশের লোকজন ঘুরে তাকাল ।
-সত্যি বলছিস ??
তয়ার মনে খানিকটা সন্দেহ দেখা দেয় । তয়া আবার বলল
-তুই মিথ্যা কথা বলছিস । আমার মন খারাপ বলে তুই মন ভাল করার জন্য এমনটা বলতেছিস ।
সত্যি সত্যিই তয়ার মনটা খারাপ । মনটা খারাপ ঐ অজানা ছেলেটার জন্য । যে ছেলেটাকে চেনে না জানে না এমন একটা ছেলের জন্য তয়ার মনটা আসলেই খারাপ ।
ও কখনও ভাবতে পারে নি এমন অদ্ভুদ ঘটনা ঘটবে ওর সাথে । সপ্তাহ খানেক আগে ছেলেটার সাথে তয়ার দেখা হয় ।
দেখা হয় বলতে তয়া ছেলেটাকে দেখে । সেদিন কফি সপে বসে কফি খাচ্ছিল আর মীমের সাথে বসে গল্প করছিল । এমন সময় ছেলেটাকে দেখতে পায় ও ।
কেমন অন্য রকম একটা আভা ছিল ছেলেটার চেহারার মধ্যে । তয়া কিছুক্ষনের জন্য একেবারে স্থির হয়ে গেল । একটু বড় বড় চোখ ছেলেটার । কালো ফ্রেমের চশমা পরেছে । মাথায় চুল একটু বড় । কি গভীর সেই চোখের দৃষ্টি ।
কফিতে চুমুক দিচ্ছে আর কি যেন একটা বই পড়ছে । তয়া কফি খাওয়া ভুলে গেল ।
মীম ব্যাপারটা লক্ষ্য করেছিল । কিন্তু এতো বেশি গুরুত্ব দেয় নি । তয়া নিজেও ব্যাপারটা প্রথমে অতো বেশি গুরুত্ব দেয় নি ।
প্রথমে ভেবেছিল সাময়িক মোহ ! চোখের আড়াল হলেই মোহ কেটে যাবে !
কিন্তু সেই থিওড়ি কাজে এল না । চোখের আড়াল হলেই মনের আড়াল হল না ।
সিন্দাবাদের ভুতের মতই ছেলেটি তয়ার মাথায় চেপে থাকল । এই সাতটা দিনে তয়া একটা মুহুর্তের জন্যও ছেলেটিকে মন থেকে মুছে ফেলতে পারল না ।

তয়া আবার বলল
-সত্যি খোজ পেয়েছিস ছেলেটার ?
-কেন তোর বিশ্বাস হচ্ছে না ?
-কিন্তু কিভাবে খোজ পেলি ?
-তুইতো কিছু আমাকে বলবি না ! ঐ দিনই বলতি সোজাসুজি গিয়ে নাম ধাম জিজ্ঞেস করতাম । এতো ঝামেলা করতে হত না । মাঝ খান দিয়ে সুমনকে কষ্ট তো করতে হল ।
সুমন মীমেয় বয়ফ্রেন্ড । ওদের সাথেই পড়ে । তয়া কৌতুহলী চোখে তাকাল মীমের দিকে ।
-আচ্ছা বাবা বলছি শোন ।
-ঐ দিনতো তুই ছেলেটাকে দেখেই কাইত ! একদম তন্ময় হয়ে তাকিয়ে ছিলি ছেলেটার দিকে ।
বলেই মীম হেসে ফেলল ।
-হাসলি কেন ?
-তন্ময় শব্দটা ব্যবহার করলাম তো ! ছেলেটার নাম তন্ময় ।
-তন্ময় !
তয়া নামটা একবার উচ্চারন করলো । যদিও নাম বেশ কমন তবুও তয়ার মনে হল একদম পারফেক্ট একটা নাম ।
আর সত্যি ঐ দিন তয়া তন্ময়ের দিকে তন্ময় হয়েই তাকিয়ে ছিল ।
-তারপর বল ।
-তুই তো কেবল তাকিয়েই ছিলি । আমি তোর তাকানোর ধরন দেখেই বুঝেছিলাম যে ছেলেটাকে তোর মনে ধরেছে । আমি ছেলেটার সব কিছু লক্ষ্য করছিলাম । যেন পরে চেনা যায় বা খোজ বের করা যায় !
তয়া ওর দিকে তাকিয়েই আছে একভাবে । এখনও যেন বিশ্বাস করতে পারছে না ।
-তুই হয়তো লক্ষ্য করিস নি ছেলেটার হাতে একটা বই ছিল ।
-হুম ! লক্ষ্য করেছি । ও একটা বই পড়ছিল ।
-ও !! এখনই ও হয়ে গেল ।
তয়া খানিকটা লজ্জা পেল ।
-আচ্ছা লজ্জা পেতে হবে না । বলতো বইটার নাম কি ছিল ?
-অতো তো লক্ষ্য করি নি ?
-তা করবা কেন ? তুমিতো আর বইয়ের প্রেমে পড় নি ! কিন্তু আমি লক্ষ্য করেছিলাম । ছেলেটা অপু তানভীরের লেখা একটা বই পড়ছিল । বইটার নাম "টিয়াপাখির গল্প" ।
-তো কি হয়েছে ? অপু তানভীয়ের বই পড়ছিল তো কি হয়েছে ? এর সাথে ওর খোজ পাওয়ার কি সম্পর্ক ?
-আরে আগে শেষ করতে দে ! বইটাতে পাবলিক লাইব্রেরীর স্টিকার মারা ছিল । মানে বইটা পাবলিক লাইব্রেরী থেকে নেওয়া । এর অর্থ কি দাড়ায় ?
তয়া মুখটা উজ্জল হয়ে গেল
-এর মানে ছেলেটা পাকলিক লাইব্রেরীর রেজিস্টার্ড মেমবার । কিন্তু ....
তয়ার মুখটা খানিকটা মলিন হল
-কিন্তু লাইব্রেরীতে তো কয়েক হাজার সদস্য । কি করে বের করলি ?
-এইতো মামা এখানেই আসল খেল ! শোন তাহলে ! যেহেতু ছেলেটার হাতে ঐ দিন বইটা দেখলাম তার মানে ছেলেটা ঐ দিনই বইটা লাইব্রেরী থেকে নিয়েছে । কিংবা দু একদিন আগে । আর তুইতো জানিস প্রতিদিন কোন কোন লাইব্রেরী থেকে কোন কোন বই বাইরে গেল কে কে নিল তার একটা হিসাব থাকে ।
তয়া মাথা ঝাকাল । কিছুটা বুঝতে পারছে ।
-তারমানে ঐ দিনের লিষ্টটা হাতে পেলেই হল । ওখান থেকে দেখা যাবে অপু তানভীরের "টিয়াপাখির গল্প" বইটা কে নিয়েছিল ।
মীম হেসে ফেলল । বলল
-এই তো বুঝে গেছিস । কিন্তু লাইব্রেরিয়ান তো এসব তথ্য সহজে দিবে না ।
-তাহলে কি করলি ?
মীম আবার হাসল ।
-এখানেই তো সুমনের কাজ । তুই তো জানিস সুমন কম্পিউটার এক্সপার্ট । নিমিশেই যে কোন কম্পিউটার হ্যাক করে ফেলে !
তয়া চোখ বড় বড় করে বলল তোরা কি পাকলিক লাইব্রেরীর কম্পিউটার হ্যাক করেছিস নাকি ?
-না করলে কি চলত বল ?
-কি বলিস ?
তয়া অবিশ্বাসের চোখে তাকিয়ে আছে ।
-সুমনই সব তথ্য বের করেছে । ছেলেটার নাম ঠিকানা কোথায় পড়ে !
তয়া মীম কে জড়িয়ে ধরল আনন্দে । বলল
-তোকে কি বলে যে ধন্যবাদ দিবো ! তোরা কি খাবি বল ? যা চাবি তাই দিবো !
-আচ্ছা ঠিক আছে এখন চল ।
-কোথায় ?
-আরে আশ্চার্য তন্ময়ের সাথে দেখা করবি না ? তোর যা অবস্থা হয়েছে । ওর সাথে কথা না বললে তুই আর বাঁচবিই না মনে হচ্ছে !
-কিন্তু ওকে কোথায় পাবি এখন ?
-আরে ছেলেটা আমাদের ইউনিভার্সিটিতেই পড়ে । সুমন কে দিয়ে খোজ খবর নিয়েছি ।
প্রতিদিন বিকালবেলা ছেলেটা ঐ মাঠটার কোনায় বসে খেলা দেখে । চল চল জলদি চল । ছেলেটা হয়তো এতক্ষনে চলে এসেছে ।
ওয়া যখন মাঠে পৌছাল তখন সত্যিই দেখলো তন্ময় মাঠটার এককোনায় বসে আছে । চোখটা মাঠের খেলার দিকে ।
তয়া আবার একভাবে তাকিয়েই থাকল তন্ময়ের দিকে ।
-কি হল তাকিয়েই থাকবি নাকি ?
-কি করবো ?
-আরে কি করবো মানে ? কাছে যা । কথা বল ।
-যাবো ?
তয়া খানিকটা ইতস্তত করতে থাকে ।
-যা ।
মীম এক প্রকার জোর করেই পাঠিয়ে দেয় ।
তয়া দুরুদুরু বুক নিয়ে একদম তন্ময়ের সামনে গিয়ে দাড়াল । কি বলবে ভেবে পেল না ও ।
তারপর আস্তে করে তন্ময়ের পাশে বসল ।
তন্ময় একটু চমকালো । এভাবে অচেন একটা মেয়ে পাশে বসলে যে কোন ছেলেই চমকাবে !
তয়া একটু ইতস্তত করল । তারপর খানিকটা লজ্জা মিশ্রিত কণ্ঠে বলল
-হাই


আমার কথাঃ
অনেকদিন পর পোষ্ট দিলাম ! সবাই কেমন আছেন ! আমিতো খুব ভাল আছি । আজই এলাম বাসা থেকে !
গল্পের মধ্যে আমি একটু চালাকী করেছি । নিশ্চই বুঝে ফেলেছেন এতোক্ষনে ! আসলে গল্পের বইয়ের নামটা আমমি কোন বিখ্যাত লেখকের দিতে চেয়েছিলাম । কিন্তু তারপর মনে হল কি দরকার ! আমি লিখছি আমার গল্প । নিজের নামটাই না হয় লিখি । তবে আমার মনে আশা আছে টিয়াপাখির গল্প নামে সত্যি সত্যিই একটা বই আমি বের করবো । ১০ বছর ২০ বছর যা লাগে লাগুক !! সবাই ভাল থাকবেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুন, ২০১২ বিকাল ৪:৩৩
২৪টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×