somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিশির সাথে ব্রেকআপ করেই ফেললাম !! ঝামেলা আর ভাল লাগে না!!

২১ শে জুন, ২০১২ রাত ১২:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিশির সাথে ব্রেকআপ করেই ফেললাম । শালার প্রতিদিন প্যানপ্যানানী আর ভাল লাগে না ।
সব কিছুর একটা লিমিট থাকে , লিমিট ক্রস করলেই সেটা আর সহ্য হয় না ।
এটা করলা কেন ?
কেন করলা ?
কেন করবা না ?
তুমি বদলে গেছ !
তুমি এটা !
তুমি সেটা !
তুমি ... ব্লা ব্লা ব্লা ।
শালার সব দোষই আমার ?
প্রেম করেছি বলে তো আর নিজের ব্যক্তি স্বাধীনতা বিষর্জন দেই নি । কিন্তু নিশির সাথে প্রেম করে এমন একটা স্টেজে পৌছেছি যে সেখানে আমার ইচ্ছার কোন মূল্যই নেই ।
নিশি যা বলবে তাই ! আর প্রতিদিন হাজারটা কৈফৎ দিতে দিতে আমি ক্লান্ত ।
ঘটনার সূচনা খুব সাধারন ভাবে । গত দুই দিন আমার কোন কাজ ছিল না । আমি ওকে ফোন করে বললাম যে যদি দেখা করতে চাও দেখা করতে চাও তবে আমি আসতে পারি ।
নিশি বলল যে না সে দেখা করতে পারবে না । তার ব্যস্ততা আছে । যাক ভাল কথা । মানুষের কাজ থাকতেই পারে ।
আজ আমার কাজ ছিল অনেক গুলো । মোটামুটি সারাদিনই বিজি থাকবো ।
আর সন্ধ্যা বেলা টিউশনী আছে । নিশি দুপুর বেলা ফোন করে বলল যে আজ দেখা করবে ।
-শোন আজ সন্ধ্যায় একটু দেখা করতে হবে । জরুরী ।
-না সোনা আমার কাজ আছে আজ ।
-না দেখা করতেই হবে ।
-নিশি বোঝার চেষ্টা কর । আমার টিউশনী আছে । দুদিন যাই নি আজকে ফোন করেছে । যেতেই হবে ।
-তুমি আসবে না ?
নিশির গলায় কেমন একটা অভিমানের সুর ।
-না নিশি । আমি আসবো না ।
-আমার থেকে তোমার কাছে তোমার টিউশনী বড় হয়ে গেল ।
-দেখ, এসব ফালতু কম্পারিজম করবা না । তুমি এক জায়গায় আর টিউশনী এক জায়গায় । আর আমি গত দুদিন তোমাকে ফোন দিয়ে দেখা করতে বলেছি তখন কোথায় ছিলে ?
-আমার কাজ ছিল ।
-তোমার কাজ ছিল এখন আমার কাজ আছে । আজ দেখা করা সম্ভব না ।
নিশি আর কোন কথা খুজে পেল না । জানি এখন ও রেগে যাবে এখন । বলল
-তুমি আসবা কিনা বল ?
-না আসবো না ।
-তা আসবা কেন ? এখনতো আর আমাকে ভাল লাগবে না । নতুন একজনকে পেয়েছ না !
-মানে ? কি ফালতু কথা বলছো ?
-এখন তো ফালতু কথাই মনে হবে ! আমার সব কথাই এখন ফালতু কথা । আর ঐ অরিনের কথা খুব মিষ্টি তাই না ?
-নিশি তুমি কিন্তু ঠিক করছো না ।
-আমি ঠিক করছি না ? আমিতো ঠিক করবোই না । তোমার সাথে রিলেশন করা টাই আমার ভুল হয়েছে । আমার আগেই বোঝা উচিত্‍ ছিল যে ছেলে আমার জন্য অন্য একটা মেয়েকে ছেড়ে দিতে পারে সেই ছেলে অন্য আর একটা মেয়ের জন্যও আমাকে ছেড়ে দিতে পারবে ।
-তুমি কি বললে ?
-কেন সিমুর সাথে তোমার রিলেশন ছিল না ?
-নিশি ফর গডসেক এই কথাটা আবার তুমি তুলেছ ? আমি তোমাকে হাজার বার বলেছি সিমু কেবল আমার ল্যাব পাটনার ছিল । আর কিছু না ।
-কিন্তু ও তো এই কথা বলে না । ও তোমাকে ভালবাসে ।
-ও আমাকে পছন্দ করতে পারে বাট আমি এমনটা করিনি ।
-অনেক হয়েছে । তোমার মত একটা চরিত্রহীন লুচ্চার সাথে আমি আর রিলেশন রাখবো না ।
তারপর নিশি আরো গালাগালী করতে লাগল ।
এই মেয়েদের প্রবলেম কি ?
কথা হচ্ছিল আমি আসতে পারবো না আর সেই কথা ঘুরে চলে আমার চরিত্রের দিকে । আশ্চার্য পাবলিক ।
আমি সারা জীবন সব কিছু সহ্য করেছি কিন্তু যা আমি না কিংবা যেকাজ আমি করি নি সেই কাজের অপবাদ দিলে আমার মেজাজ গরম হয়ে যায় । বললাম
-ঠিক আছে । আমার সাথে রিলেশন রাগবে না, রেখো না । তোমার মত প্যানপ্যানানী মেয়ের কাছ থেকে মুক্তি চাই আমি । অনেক সহ্য করেছি আর না । আজকের পর থেকে তোমার সাথে আমি আর নাই । ভুলেও তুমি আর আমারে ফোন দিবা না । আর একটা বললা না যে অরিনের কথা । এতো দিনতো করিনি, দেখবা ওর সাথেই আমি রিলেশন করবো ।
ফোন রেখে দেই আমি । আমি জানি নিশি মনে হয় অবাকই হয়েছে । যে ছেলে কোনদিন ওর কথার প্রতিবাদ করেনি ওর সাথে ব্রেকআপ করে ফেলল !
ফোন রাখার পর একটু হালকা হালকা লাগল । মন কি একটু খারাপ হল ?
যা হয় হোক !
আজ থেকে আমি মুক্ত । কারো কথা শুনতে হবে না । কারো কাছে কৈফত্ৎ দিতে হবে না কোন !
নিশির রিলেশন করে আমি যেন আমার ব্যক্তি স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলেছিলাম ।
আমাকে কত রকম হাজার কথা শুনতে হত । কত কাজ করতে হত ইচ্ছের বিরুদ্ধে ।
সব থেকে ঝামেলা সৃষ্টি হত ওকে নিয়ে বাইরে বের হলে । যদি কোন মেয়ের দিকে আমি তাকিয়েছি তাহলে যেন আমাকে আর আস্ত রাখত না । আরে বাবা আমি তো কেবল সুন্দর মেয়েকে একটু দেখতেও পারব না ?
আমার মতে সুন্দরী একটি মেয়ের দিকে যদি না তাকানো হয় তাহলে তার সৌন্দর্যকে অপমান করা হয় । আর একজন সৌন্দর্যের পূজারী হয়ে কি আমি এমনটা করতে পারবো ।
যাক ভাল হয়েছে । কাল আজ থেকে আমার আর কোন বাধা নাই । কোন কৈফত্ৎ কাউকে দিতে হবে না ।
রাতে আনন্দ নিয়েই ঘুমাতে গেলাম । কিন্তু কেন জানি ঘুরে ফিরে নিশির কথাই মনে আসতে লাগল ।
নিশির হাসিটা অনেক সুন্দর ছিল । ও যখন হাসতো কেমন জানি একটা আলো ছড়াতো ওর চোখ দিয়ে । আর চোখের মনিটা কেমন নড়াচড়া করতো ।
আমি অদ্ভুদ ভাবে দেখতাম ! কাল থেকে আর দেখতএ পারবো না ঐ হাসি !!

সকালবেলা বেলা করেই ঘুম ভাঙ্গল । মনটা খারাপ হল আর একটু । নিশি আর যাই করতো না কেন প্রতিদিন সকালবেলা খুব সুন্দর করে আমার ঘুম ভাঙ্গাতো ।
কেমন একটা অভ্যাসের মত হয়ে গেছিল । নিশি কি চমৎ‍কার ভাবেই না গুড মর্নিং বলতো !
হাহ !
মানুষের মনটা কি অদ্ভুদ ! কালকে নিশিকে ছেড়ে দিয়ে নিজেকে হালকা লাগছিল আর এখন আমার খারাপ লাগছে ! মেয়েটাকে এই সকালবেলা মিস করছি আমি ।
হাত মুখ ধুয়ে আসার পর হলের এক পিয়ন খবর দিয়ে গেল যে আমার নাকি গেস্ট এসেছে । ওয়েটিং রুমে বসে আছে ।
ওয়েটিং রুমে গিয়ে চমকাতে হল ।
নিশি বসে আছে জড়সড় হয়ে । চেহারা কেমন বিষন্ন আর চোখ গুলো কেমন ফোলা ফোলা । কাল রাতে নিশ্চয় কেঁদেছে !
আমার মনের মধ্যে কেমন একটা অনুভূতি হতে লাগল ।
কষ্টের অনুভূতি । মেন হচ্ছে আমি ই এর জন্য দায়ী । কি ঝামেলায় পরলাম। এমন কেন মনে হচ্ছে!! আমার দোষ কোথায়?
আমি নিশির পাশে গিয়ে বসলাম । ও বসেই রইল মাথা নিচ করে । একটু পর একটা প্যাকেট আমার দিকে এগিয়ে দিল । খুব নিচু স্বরে বলল
-কাল এটা দেবার জন্য তোমাকে ডেকেছিলাম । আমি ...
নিশি চুপ করে গেল । খানিকট যেন কেঁপে উঠল । আমি জানি ও কান্না আটকানোর চেষ্টা করছে ।
আমি প্যাকেট টা খুলে আরো বেশি অবাক হলাম । একটা ঘড়ি । টাইটানের ঘড়ি ।
ঘড়িটা আমি চিনি । মাস দুয়েক আগে টাইটানে গেছিলাম । ঠিক এই ঘড়িটাই আমার পছন্দ হয়েছিল । কিন্তু দাম দেখে আর কেনা হয়নি আর ।
নিশি পাশে ছিল ।
ও মনে রেখেছে ।
আমার মনটাতে কষ্টের অনুভূতিটা যেন আরো একটু বেড়ে গেল । নিশি বলল
-আমি যাই ।
বলে ও হাটতে লাগল । আমি ওর পিছন পিছন বের হয়ে এলাম । বললাম
এখনই যাবে ? ঐ পুকুর পাড় টাতে একটু বসি ?

দুজন চুপচাপ বসে আছি । নিশি অন্য দিকে তাকিয়ে আছে । একটু একটু কাঁপছে ওর শরীর টা । নিশি নিঃশব্দে কাঁদছে । আমার নিজের কাছে খুব খারাপ লাগছে । মনে হচ্ছে ওর এই কান্নার জন্য আমি দায়ী । একটা অপরাধ বোধ মনের মধ্যে আস্তে আস্তে বাড়তে লাগল ।
মনে হল ও তো একটু এরকমই ।
আমি কেন ওর সাথে এমনটা করলাম ? কি হত ওর সাথে একটু দেখা করলে ? কি শখ করেই না আমার জন্য ঘড়িটা কিনেছিল আমাকে দেবার জন্য !!

আমি জানি হলে ছেলেরা বাড়ান্দা থেকে আামদেরকে দেখতে পাচ্ছে । মনে খানিকটা অবাক হচ্ছে কিংবা কৌতুহল হচ্ছে ওদের মনে । কেউ কেউ উকি দিচ্ছে বারান্দা থেকে ।
আমরা পাশাপাশি আছি । নিশি অন্য দিকে বসে আছে । আস্তে আস্তে ফোপানো বাড়ছে । সেই সাথে বাড়ছে আমার অপরাধবোধ !
আমি নিশির হাতটা ধরলাম । ঠিক তখনই নিশি হুঁ হূণ করে কেঁদে দিল । ফোঁপাতে ফোঁপাতে কেবল বলল
-তুমি......তুমি আমাকে ছেড়ে থাকতে পারবে ? বল পারবে?
আমার বুকের ভিতর টাও হুঁ হুঁ করে উঠল । সত্যি কি পারবো?



গল্পটা আরো লেখা ইচ্ছা ছিল কিন্তু আর ভাল লাগল না । আসলে আমার এই অভ্যাসটা খুব খারাপ । কিছু লিখতে লিখতে যদি ঐ লেখাটার উপর আগ্রহ হারিয়ে ফেলি তাহলে আর লিখে ইচ্ছা করে না । এটার বেলাতেও তেমনটাই হয়েছে
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুন, ২০১২ রাত ১২:২৭
৩৮টি মন্তব্য ৩৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×